ঢাকা ০৫:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ..

বদলি বাণিজ্য সহ নানান দুর্নীতি অনিয়য়ে ফুলে-পেঁপে উঠেছে খুলনার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক

রায়হান তানভীর, খুলনা

খুলনা খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আরসিফুড ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে বদলী বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে । বদলী সহ গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদায়ন করে চলেছেন লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে । কর্মকর্তা ও কর্মচারী বদলীতে নেয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা । ইকবাল বাহার চৌধুরীর এতটাই ক্ষমতাধর যে প্রভাব খাটিয়ে খাদ্য সচিব ও ডিজি’র সুপারিশ উপেক্ষা করে তার নিয়ন্ত্রণাধীন অফিসে চলছে ওপেন ঘুষ বাণিজ্য। আর একাজে তার প্রধান হাতিয়ার হলেন তারই অফিসে কর্মরত বড় বাবু শাহীন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ধান চাল সংগ্রহে কমিশন ও হতদরিদ্রদের ওএমএস এর চাল আটায়ও ভাগ বসাচ্ছেন আওয়ামী সরকারের সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার একান্ত কাছের লোক ফ্যাসিবাদের দোসর এই অসাধু কর্মকর্তা। ইকবাল বাহার চৌধুরী।

খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৩ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ তুলেছেন খালিশপুরের এক ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) ডিলার। এ বিষয়ে সোমবার (১১ আগস্ট) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ডিলার ইমন শেখ।

অভিযোগপত্রে ইমন শেখ উল্লেখ করেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে খুলনা মহানগরে ওএমএস ডিলার হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তার লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হবে ৩০ জুন ২০২৫ সালে। কিন্তু ২০২৪ সালের নীতিমালায় খাদ্য মন্ত্রণালয় পুরনো ডিলারদের বাদ দিয়ে নতুন ও পুরাতন সকলকে নতুনভাবে আবেদন করতে নির্দেশ দেয়।

তিনি জানান, এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট মামলা (নং: ১৩৫৭৫/২০২৪) দায়ের করলে আদালত রুল জারি করে মামলাটি চলমান রাখেন। মামলার প্রেক্ষিতে খুলনার সরকারি আইনজীবী তার পক্ষে মতামত দিলেও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক নানা অজুহাতে ডিলারশিপ চালু রাখেননি। বরং ৩ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং টাকা না দেওয়ায় কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।

এ ব্যাপারে বিগত জুন মাসে খাদ্য উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) খুলনা জেলার সদস্য মোঃ রিদোয়ান শেখ তামিম।

মোঃ রিদওয়ান শেখ তামিমি বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে সশরীরে ডেকে নিয়ে ঢাকাস্থ খাদ্য বিভাগের প্রধান কার্যালয়ে অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনার ব্যাপারে আলোচনা করেন এবং তারা জানান এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে যা তদন্ত শেষে ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে খুলনা খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চোধুরীর বিরুদ্ধে খুলনা বিভাগে খুলনার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা, একান্ত সচিব, মহাপরিচালক, খাদ্য অধিদপ্তর, পরিচালক প্রসাশন বিভাগ খাদ্য অধিদপ্তর, বিভাগীয় কমিশনার খুলনা, চেয়ারম্যান দুর্নীতি দমন কমিশন সহ খুলনা প্রেস ক্লাব সভাপতি বরাবর অভিযোগ পাঠানো হয়েছে।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টার কাছে গত ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে খুলনার খাদ্য পরিদর্শক সেলিম রেজার লিখিত অভিযোগে বেরিয়ে আসে খুলনা খাদ্য বিভাগের চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য। আর সেসব অভিযোগের কপি পাঠানো হয় দুদক, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, প্রেসক্লাব ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন খুলনার সম্বয়কদের কাছে।

ইতোমধ্যে তার দুনীর্তি ও অনিয়মের সঠিক তদন্ত করে শাস্তির দাবীতে প্রধান উপদেষ্টা ও খাদ্য উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

খুলনা খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আরসিফুড ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুনীর্তি, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে তার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলা করেছে। যা তদন্তনাধীন। অন্যদিকে ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, বদলিসহ সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন খাদ্য সচিব এখানে তার কোন হাত নেই।

সূত্র জানায়, ইকবাল বাহার চৌধুরী জয়পুরহাটে ডিসি ফুড থাকাকালীন প্রশাসনিক কারণে সেখান থেকেও তাকে প্রত্যাহার করা হয়। পাবনা ডিসি ফুড থাকাকালীন দুর্নীতির কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ায় আগেই তাকে করা হয় প্রত্যাহার।

ময়মনসিংহ জেলার ডিসিফুড থাকাকালীন মুক্তাগাছা ওসি এল এসডি’র সাথে মিলে ইকবাল বাহার চৌধুরী ৩ শ’ টন চাল আত্মসাত করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে দুনীর্তি দমন কমিশন অভিযান চালায়। ওই সময় তার নামে মামলা দায়ের করে দুনীর্তি দমন কমিশন। যে মামলা এখনো চলমান রয়েছে।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী । তিনি ২০২৪ সালের মার্চ মাসে আরসিফুড হিসাবে খুলনাতে যোগদান করেন। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের ছত্রছায়ায় এবং মন্ত্রীর জামাতা নাসের বেগের সহায়তায় দূর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতায় অপ্রতিরোধ্য ইকবাল বাহার চৌধুরী নিশ্চিন্তে গড়ে তুলেছেন দুর্নীতির বিশাল সম্রাজ্য।
খুলনা খাদ্য বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন সরকারি অফিস সময় ৯-৫টা হলেও ইকবাল বাহার চৌধুরীকে দিনের বেলায় অফিসে পাওয়া যায় না। তিনি প্রতিদিনই অফিস করেন কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে।

এদিকে ইকবাল বাহার চৌধুরী খুলনা বিভাগের আওতাধীন ৭২ টি খাদ্য গুদামের দায়িত্বে থাকায় বেশ কিছু দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে যার মধ্যে, চলতি বছরে ঝিনাইদহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের পঙ্কজ কুমার প্রামানিক অপেক্ষাকৃত জুনিয়র কর্মকর্তা হওয়া সত্বেও সিনিয়র কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে বাগেরহাট সদরের খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পোস্টিং পান ইকবাল বাহার চৌধুরীর মাধ্যমে। খুলনা সিএসডির খাদ্য পরিদর্শক মোঃ মনিরুজ্জমানকে সাতক্ষীরার তালা পাটকেল ঘাটা খাদ্য গুদামে বিপুল অংকের টাকায় পোস্টিং দেন ইকবাল। লাখ লাখ টাকা দিয়ে পোস্টিং নিলেও দুই বছর যেতে না যেতেই পূর্নই টাকা বিনিময় সেখানে আবারও পদায়ন দেয়া হচ্ছে নতুন ইনচাজ পদে।

এখানেই শেষ নয় ইকবাল বাহার চৌধুরী দুর্নীতির তদন্তের শেষে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল এমনটাই আশা করছেন খুলনা খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা সহ সাধারণ মানুষ।

খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারিরা জানান, বেশ কিছু দিন যাবত বদলী প্রত্যাশী পরিদর্শকদের সাথে টাকা নিয়ে দরদামের নতুন কৌশল অবলম্বন করছেন আরসিফুড । প্রথমে গুদামে বদলী প্রত্যাশী প্রার্থীকে আর সি ফুড অফিসের বড় বাবু শাহিন ডেকে নেন। এ সময় শাহিন ও ইকবাল বাহার চৌধুরী দুজনে মিলে বদলির দরদাম করেন এতে চাহিদা মাফিক টাকা দিতে পারলেই দেয়া হয় পদোন্নতি অথবা করা হয় বদলি।

এ বিষয়টি নিয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে খুলনা খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আরসিফুড ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন,
“আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগই সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মনগড়া। বদলির ক্ষেত্রে আমরা সচিবালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে থাকি। ডিলার ইমন শেখকে আমি চিনি না, ঘুষ চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।” ঘুষ চাওয়ার এ বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

‎গোবিন্দগঞ্জে নজরুল হত্যা মামলার মূল আসামী গ্রেফতার

SBN

SBN

ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ..

বদলি বাণিজ্য সহ নানান দুর্নীতি অনিয়য়ে ফুলে-পেঁপে উঠেছে খুলনার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক

আপডেট সময় ১১:৩৯:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

রায়হান তানভীর, খুলনা

খুলনা খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আরসিফুড ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে বদলী বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে । বদলী সহ গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদায়ন করে চলেছেন লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে । কর্মকর্তা ও কর্মচারী বদলীতে নেয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা । ইকবাল বাহার চৌধুরীর এতটাই ক্ষমতাধর যে প্রভাব খাটিয়ে খাদ্য সচিব ও ডিজি’র সুপারিশ উপেক্ষা করে তার নিয়ন্ত্রণাধীন অফিসে চলছে ওপেন ঘুষ বাণিজ্য। আর একাজে তার প্রধান হাতিয়ার হলেন তারই অফিসে কর্মরত বড় বাবু শাহীন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ধান চাল সংগ্রহে কমিশন ও হতদরিদ্রদের ওএমএস এর চাল আটায়ও ভাগ বসাচ্ছেন আওয়ামী সরকারের সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার একান্ত কাছের লোক ফ্যাসিবাদের দোসর এই অসাধু কর্মকর্তা। ইকবাল বাহার চৌধুরী।

খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৩ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ তুলেছেন খালিশপুরের এক ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) ডিলার। এ বিষয়ে সোমবার (১১ আগস্ট) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ডিলার ইমন শেখ।

অভিযোগপত্রে ইমন শেখ উল্লেখ করেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে খুলনা মহানগরে ওএমএস ডিলার হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তার লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হবে ৩০ জুন ২০২৫ সালে। কিন্তু ২০২৪ সালের নীতিমালায় খাদ্য মন্ত্রণালয় পুরনো ডিলারদের বাদ দিয়ে নতুন ও পুরাতন সকলকে নতুনভাবে আবেদন করতে নির্দেশ দেয়।

তিনি জানান, এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট মামলা (নং: ১৩৫৭৫/২০২৪) দায়ের করলে আদালত রুল জারি করে মামলাটি চলমান রাখেন। মামলার প্রেক্ষিতে খুলনার সরকারি আইনজীবী তার পক্ষে মতামত দিলেও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক নানা অজুহাতে ডিলারশিপ চালু রাখেননি। বরং ৩ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং টাকা না দেওয়ায় কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।

এ ব্যাপারে বিগত জুন মাসে খাদ্য উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) খুলনা জেলার সদস্য মোঃ রিদোয়ান শেখ তামিম।

মোঃ রিদওয়ান শেখ তামিমি বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে সশরীরে ডেকে নিয়ে ঢাকাস্থ খাদ্য বিভাগের প্রধান কার্যালয়ে অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনার ব্যাপারে আলোচনা করেন এবং তারা জানান এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে যা তদন্ত শেষে ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে খুলনা খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চোধুরীর বিরুদ্ধে খুলনা বিভাগে খুলনার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা, একান্ত সচিব, মহাপরিচালক, খাদ্য অধিদপ্তর, পরিচালক প্রসাশন বিভাগ খাদ্য অধিদপ্তর, বিভাগীয় কমিশনার খুলনা, চেয়ারম্যান দুর্নীতি দমন কমিশন সহ খুলনা প্রেস ক্লাব সভাপতি বরাবর অভিযোগ পাঠানো হয়েছে।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টার কাছে গত ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে খুলনার খাদ্য পরিদর্শক সেলিম রেজার লিখিত অভিযোগে বেরিয়ে আসে খুলনা খাদ্য বিভাগের চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য। আর সেসব অভিযোগের কপি পাঠানো হয় দুদক, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, প্রেসক্লাব ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন খুলনার সম্বয়কদের কাছে।

ইতোমধ্যে তার দুনীর্তি ও অনিয়মের সঠিক তদন্ত করে শাস্তির দাবীতে প্রধান উপদেষ্টা ও খাদ্য উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

খুলনা খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আরসিফুড ইকবাল বাহার চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুনীর্তি, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে তার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলা করেছে। যা তদন্তনাধীন। অন্যদিকে ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, বদলিসহ সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন খাদ্য সচিব এখানে তার কোন হাত নেই।

সূত্র জানায়, ইকবাল বাহার চৌধুরী জয়পুরহাটে ডিসি ফুড থাকাকালীন প্রশাসনিক কারণে সেখান থেকেও তাকে প্রত্যাহার করা হয়। পাবনা ডিসি ফুড থাকাকালীন দুর্নীতির কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ায় আগেই তাকে করা হয় প্রত্যাহার।

ময়মনসিংহ জেলার ডিসিফুড থাকাকালীন মুক্তাগাছা ওসি এল এসডি’র সাথে মিলে ইকবাল বাহার চৌধুরী ৩ শ’ টন চাল আত্মসাত করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে দুনীর্তি দমন কমিশন অভিযান চালায়। ওই সময় তার নামে মামলা দায়ের করে দুনীর্তি দমন কমিশন। যে মামলা এখনো চলমান রয়েছে।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী । তিনি ২০২৪ সালের মার্চ মাসে আরসিফুড হিসাবে খুলনাতে যোগদান করেন। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের ছত্রছায়ায় এবং মন্ত্রীর জামাতা নাসের বেগের সহায়তায় দূর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতায় অপ্রতিরোধ্য ইকবাল বাহার চৌধুরী নিশ্চিন্তে গড়ে তুলেছেন দুর্নীতির বিশাল সম্রাজ্য।
খুলনা খাদ্য বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন সরকারি অফিস সময় ৯-৫টা হলেও ইকবাল বাহার চৌধুরীকে দিনের বেলায় অফিসে পাওয়া যায় না। তিনি প্রতিদিনই অফিস করেন কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে।

এদিকে ইকবাল বাহার চৌধুরী খুলনা বিভাগের আওতাধীন ৭২ টি খাদ্য গুদামের দায়িত্বে থাকায় বেশ কিছু দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে যার মধ্যে, চলতি বছরে ঝিনাইদহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের পঙ্কজ কুমার প্রামানিক অপেক্ষাকৃত জুনিয়র কর্মকর্তা হওয়া সত্বেও সিনিয়র কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে বাগেরহাট সদরের খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পোস্টিং পান ইকবাল বাহার চৌধুরীর মাধ্যমে। খুলনা সিএসডির খাদ্য পরিদর্শক মোঃ মনিরুজ্জমানকে সাতক্ষীরার তালা পাটকেল ঘাটা খাদ্য গুদামে বিপুল অংকের টাকায় পোস্টিং দেন ইকবাল। লাখ লাখ টাকা দিয়ে পোস্টিং নিলেও দুই বছর যেতে না যেতেই পূর্নই টাকা বিনিময় সেখানে আবারও পদায়ন দেয়া হচ্ছে নতুন ইনচাজ পদে।

এখানেই শেষ নয় ইকবাল বাহার চৌধুরী দুর্নীতির তদন্তের শেষে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল এমনটাই আশা করছেন খুলনা খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা সহ সাধারণ মানুষ।

খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারিরা জানান, বেশ কিছু দিন যাবত বদলী প্রত্যাশী পরিদর্শকদের সাথে টাকা নিয়ে দরদামের নতুন কৌশল অবলম্বন করছেন আরসিফুড । প্রথমে গুদামে বদলী প্রত্যাশী প্রার্থীকে আর সি ফুড অফিসের বড় বাবু শাহিন ডেকে নেন। এ সময় শাহিন ও ইকবাল বাহার চৌধুরী দুজনে মিলে বদলির দরদাম করেন এতে চাহিদা মাফিক টাকা দিতে পারলেই দেয়া হয় পদোন্নতি অথবা করা হয় বদলি।

এ বিষয়টি নিয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে খুলনা খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আরসিফুড ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন,
“আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগই সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মনগড়া। বদলির ক্ষেত্রে আমরা সচিবালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে থাকি। ডিলার ইমন শেখকে আমি চিনি না, ঘুষ চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।” ঘুষ চাওয়ার এ বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।