ঢাকা ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বুড়িচং উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার Logo বিএনপি-জামায়াত নিধন করা ওসি জাবীদ এখন ঝিনাইদহ পিবিআইতে Logo সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ জাহাঙ্গীর আলম, পিতৃহারা হলো তিন বছরের ইরফান Logo রক্তের কালিতে লেখা ১৪ ডিসেম্বর—শোক ও গৌরবের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস Logo হাদির উপর গুলির ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন থেকে ফেরার পথে ২ জনকে কুপিয়ে জখম Logo ওসমান হাদির সুস্থতা কামনায় মুরাদনগরে দোয়া মাহফিল Logo রাণীনগরে ৬০০ শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo কালীগঞ্জে অপহরণের ১৬ ঘন্টা পর এক যুবককে উদ্ধার, তিন অপহরণকারী গ্রেফতার Logo শরীফ ওসমান হাদীর ওপর হামলার পর সীমান্তে বিজিবির কড়া নিরাপত্তা Logo দীগলটারীতে ভাঙা সেতুর কারণে দুই পাড়ের পাঁচ শতাধিক মানুষের চরম দুর্ভোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বামীর পরকিয়ায় তিন সন্তানের জননীর আত্মহত্যা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক গৃহবধুকে আত্মহত্যার প্ররোচনা ও সহায়তার অঅভিযোগ উঠেছে স্বামী সাদ্দাম হোসেন (৩২) সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র সুহিলপুর (নোয়াজের বাড়ি) এলাকায়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে আবু তালেব’র মেয়ে মাসু বেগম (২৭) স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি করে ঘরে থাকা বার্নিশের (তারফিন) বিষ খেয়ে ফেলে। পরে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসু বেগম মারা যায়।
পরে নিহতের পিতা আবু তালেব (৭১) বাদী হয়ে স্বামী সাদ্দাম হোসেন(৩২), সাচ্চু মিয়া(৪৫),শারফিন মিয়া(৪২), ফাতেমা বেগম (৪০),সালমা বেগম সহ ৫ জনকে আসামি করে গত ৭ এপ্রিল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

নিহতের বাবা আবু তালেব মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ১৪/১৫ বছর আগে সাদ্দাম হোসেনের সাথে আমার মেয়ে মাসু বেগমের বিয়ে হয় সামাজিক ভাবে। বিয়ের পর মেয়ের ঘরে ৩ ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলে রাহাদ (১০), মেজো ছেলে রায়হান (৮) ও ছোট ছেলে আরিয়ান আড়াই বছর। বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে ছোট খাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। কয়েক বছর আগে সাদ্দাম গোপনে আরেকটি বিয়ে করে বিদেশে চলে যায়। ঠিক ভাবে পরিবারের ভরনপোষণ করতো না সাদ্দাম। আমার মেয়ে তার ব্যবহারের দের ভরি স্বর্ণ বন্ধক রেখে ৭৫ হাজার টাকা আনে। পরে বিদেশ থেকে আসার পরে আমার মেয়েকে সাদ্দাম হোসেন শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে স্বর্নের জন্য। আমি পরে টাকা দিয়ে স্বর্ন গয়না ছুটাইয়া দেই। তখন সাদ্দাম তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে স্বর্ণ গয়না গুলো দিয়ে প্রায়ই ভিডিও কল দিয়ে কথা বলে। এনিয়ে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া হইছে, কোন মেয়েই চায়না তার স্বামী অন্য মেয়ের সাথে মিশুক। আমার মেয়েরে মাইরা ফালাইছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহত মাসু বেগম’র দ্বিতীয় ছেলে স্থানীয় মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের ছাত্র রায়হান (৮) বলেন, আমার মারে প্রায়ই আমার বাবা বকাবকি ও মারধোর করতো।

নিহতের ভাই ইয়ার হোসেন বলেন, আমার বোনকে তারা মাইরা ফেলছে। আমরা থানায় মামলা দায়ের করলে সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির মালামাল (গরু, ছাগল) অন্য যায়গায় নিয়ে যেতে সহায়তা করে স্থানীয় ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব মিয়া। সে আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব মিয়া বলেন, আমি চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হউক। মেয়েটাকে নিয়ে অনেক দেন দরবার হইছে আমি শুনেছি। তিনি আরও বলেন, সাদ্দাম পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে তার স্ত্রী কে শারিরিক ও মানসিক ভাবে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করত এর জন্য সে আত্ম হত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। কম কষ্টে মেয়েটা তিনটা বাচ্চা রাইখা আত্মহত্যা করেছে নাই। আর আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছে নিহতের ভাই এইসব সত্য না।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, নিহতের ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, তদন্ত শেষে পরবর্তীতে আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বুড়িচং উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার

SBN

SBN

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বামীর পরকিয়ায় তিন সন্তানের জননীর আত্মহত্যা

আপডেট সময় ০৭:৪৫:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক গৃহবধুকে আত্মহত্যার প্ররোচনা ও সহায়তার অঅভিযোগ উঠেছে স্বামী সাদ্দাম হোসেন (৩২) সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র সুহিলপুর (নোয়াজের বাড়ি) এলাকায়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে আবু তালেব’র মেয়ে মাসু বেগম (২৭) স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি করে ঘরে থাকা বার্নিশের (তারফিন) বিষ খেয়ে ফেলে। পরে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসু বেগম মারা যায়।
পরে নিহতের পিতা আবু তালেব (৭১) বাদী হয়ে স্বামী সাদ্দাম হোসেন(৩২), সাচ্চু মিয়া(৪৫),শারফিন মিয়া(৪২), ফাতেমা বেগম (৪০),সালমা বেগম সহ ৫ জনকে আসামি করে গত ৭ এপ্রিল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

নিহতের বাবা আবু তালেব মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ১৪/১৫ বছর আগে সাদ্দাম হোসেনের সাথে আমার মেয়ে মাসু বেগমের বিয়ে হয় সামাজিক ভাবে। বিয়ের পর মেয়ের ঘরে ৩ ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলে রাহাদ (১০), মেজো ছেলে রায়হান (৮) ও ছোট ছেলে আরিয়ান আড়াই বছর। বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে ছোট খাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। কয়েক বছর আগে সাদ্দাম গোপনে আরেকটি বিয়ে করে বিদেশে চলে যায়। ঠিক ভাবে পরিবারের ভরনপোষণ করতো না সাদ্দাম। আমার মেয়ে তার ব্যবহারের দের ভরি স্বর্ণ বন্ধক রেখে ৭৫ হাজার টাকা আনে। পরে বিদেশ থেকে আসার পরে আমার মেয়েকে সাদ্দাম হোসেন শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে স্বর্নের জন্য। আমি পরে টাকা দিয়ে স্বর্ন গয়না ছুটাইয়া দেই। তখন সাদ্দাম তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে স্বর্ণ গয়না গুলো দিয়ে প্রায়ই ভিডিও কল দিয়ে কথা বলে। এনিয়ে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া হইছে, কোন মেয়েই চায়না তার স্বামী অন্য মেয়ের সাথে মিশুক। আমার মেয়েরে মাইরা ফালাইছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহত মাসু বেগম’র দ্বিতীয় ছেলে স্থানীয় মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের ছাত্র রায়হান (৮) বলেন, আমার মারে প্রায়ই আমার বাবা বকাবকি ও মারধোর করতো।

নিহতের ভাই ইয়ার হোসেন বলেন, আমার বোনকে তারা মাইরা ফেলছে। আমরা থানায় মামলা দায়ের করলে সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির মালামাল (গরু, ছাগল) অন্য যায়গায় নিয়ে যেতে সহায়তা করে স্থানীয় ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব মিয়া। সে আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব মিয়া বলেন, আমি চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হউক। মেয়েটাকে নিয়ে অনেক দেন দরবার হইছে আমি শুনেছি। তিনি আরও বলেন, সাদ্দাম পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে তার স্ত্রী কে শারিরিক ও মানসিক ভাবে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করত এর জন্য সে আত্ম হত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। কম কষ্টে মেয়েটা তিনটা বাচ্চা রাইখা আত্মহত্যা করেছে নাই। আর আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছে নিহতের ভাই এইসব সত্য না।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, নিহতের ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, তদন্ত শেষে পরবর্তীতে আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।