
লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে এতিমখানায় শিশু শিক্ষার্থী তাহমিদ হত্যার প্রতিবাদ ও হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলার হাসনাবাদে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হাসনাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মুনাফ, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব ও মাদ্রাসার তত্ত্বাবধায়ক ফরিদ উদ্দিন শিবলু, মাদরাসার মুহতামিম আবু ইউসুফ, তাহমিদের মামা ও মামলার বাদী মোঃ মামুন, আবদুল মজিদ ভূইয়া, বেলাল হোসেন বেলাল, সাবমির মাহমুদ শামীম সহ আরও অনেকে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তাহমিদ হত্যাকান্ডের চারমাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনো খুনিদের চিহ্নিত করতে পারেনি। বক্তারা আরো বলেন ময়নাতদন্ত রিপোর্টে তাহমিদকে হত্যা করা হয়েছে প্রমাণ হলেও রিপোর্ট আসার ২০ দিন পরও খুনিদের চিহ্নিত করতে পুলিশের কোনো তৎপরতা নেই। তাহমিদের প্রকৃত খুনিদের খুঁজে বের করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান মানববন্ধনে অংশ নেয়া স্থানীয় জনতা। তারা হুশিয়ার করে বলেন তাহমিদের হত্যাকারীদের কেউ বাঁচানোর চেষ্টা করলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।
জানা যায়, গত ১৪ এপ্রিল সকালে উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের জিনারাগ অহিদুল আলম ইসলামীয়া দারুল কোরআন ও এতিমখানা মাদরাসার ছাদ থেকে নুরানি বিভাগের ছাত্র তাহমিদ (৯) নামের এক শিশু শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। ওইদিনই তাহমিদের মামা মামুন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ময়নাতদন্তের সাড়ে তিন মাস পর রোববার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া যায়। রিপোর্টে শিশু তাহমিদকে স্বাসরোধ করে হত্যার আলামত পাওয়া যায়।
মনোহরগঞ্জ থানার ওসি বিপুল চন্দ্র দে বলেন, শিশু তাহমিদের লাশ উদ্ধারের পর মাদরাসা শিক্ষক শাহারাস্তি উপজেলার ছোটতুলা গ্রামের হাফেজ আবদুর রহমানের ছেলে মোঃ রেদোয়ান (৩০)কে সন্দেহজনকভাবে আটক করে দুইবার রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করি, দুইবারেই রেদোয়ান হত্যার কথা অস্বীকার করে, আটককৃত শিক্ষক রেদোয়ান বর্তমানে জামিনে রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি প্রকৃত খুনিদের বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার জন্য।
এবিষয়ে তাহমিদের বাবা মাইন উদ্দিন বলেন, আমার ছেলের হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। তিনি আরো বলেন আমি গরিব মানুষ, আমার একমাত্র ছেলে আলেম হতে চেয়েছে আমি তাকে আলেম বানাতে চেয়েছি কিন্তু ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।
উল্লেখ্য তাহমিদ নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার বানসা তরফদার বাড়ির মাইন উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ১৪ এপ্রিল সকাল বেলায় তাহমিদ ক্লাসে অনুপস্থিত থাকায় ছাত্ররা তাকে খুঁজতে গিয়ে ছাদে লাশ পড়ে থাকতে দেখে। পরে পুলিশকে জানালে লাকসাম সার্কেল অফিসার সুমেন মজুমদার মনোহরগঞ্জ থানার এসআই প্রবীণসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
মানববন্ধনে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও এলাকার সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করেন।