ঢাকা ১২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo চীনের অর্থনীতি: চাপ সামলেও শক্তিশালী অগ্রগতি Logo বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে চীন Logo ইউনিট ৭৩১: সংগঠিত রাষ্ট্রীয় অপরাধের অকাট্য প্রমাণ Logo আবুধাবিতে ওয়াং ই–শেখ আবদুল্লাহ বৈঠক Logo ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১: বিজয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে—রণাঙ্গনে চূড়ান্ত আঘাতের দিন Logo বুড়িচং উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার Logo বিএনপি-জামায়াত নিধন করা ওসি জাবীদ এখন ঝিনাইদহ পিবিআইতে Logo সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ জাহাঙ্গীর আলম, পিতৃহারা হলো তিন বছরের ইরফান Logo রক্তের কালিতে লেখা ১৪ ডিসেম্বর—শোক ও গৌরবের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস Logo হাদির উপর গুলির ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন থেকে ফেরার পথে ২ জনকে কুপিয়ে জখম

মালদ্বীপে নিত্য পণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া, বিপাকে নিম্ন আয়ের প্রবাসীরা

মালদ্বীপে রমজানকে ঘিরে নিত্য পণ্যের দাম আকাশ ছোয়া। বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের সাধারণ প্রবাসীরা। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে কিন্তু প্রবাসীদের বেতনতো আর বাড়ছেনা! স্বল্প আয়ের প্রবাসীরা তাদের আয়-ব্যয়ের সমন্বয় করতে পারছেন না। কয়েক মাসের ব্যবধানে নিত্য পণ্যের দাম আকাশচুম্বী হাওয়ায় দেশে থাকা পরিবার পরিজনদের নিয়ে প্রবাসীদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাজ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যেন কিছুতেই থামছে না। বাজারে এসে প্রবাসী ক্রেতারা যেন খেই হারিয়ে ফেলছেন চাল, আটা, চিনি ছাড়া বাকি সব জিনিসের দাম আকাশচুম্বী।

মালদ্বীপের লোকাল মার্কেটে হবিগঞ্জ জেলার মালদ্বীপ প্রবাসী মো. আবু জাহের নামে একজন ক্রেতা বলেন ভাই বাজারে আগুন। হোটেলর তুলনায় নিজে রান্না করে খেলে একটু সাশ্রয় হয়, কিন্তু কাঁচা বাজারে এসে দেখি কয়েক মাসের ব্যবধানে হুহু করে দাম বেড়েছে সবজির স্টল গুলোতে। বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে আসা পটল, বেগুন, ভেন্ডি, পুইশাক, করলা, টমেটো, কচুর লতি, কুমড়া, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন সবজির। এইসব জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মত সাধারণ প্রবাসীদের কষ্ট আরও বেড়েছে। খাওয়ার আইটেম ছাড়াও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের মূল্যে বৃদ্ধিতে চরম হতাশায় দিন কাটছে আমাদের মত নিম্ন আয়ের সাধারণ প্রবাসীদের।

মালদ্বীপের স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত, লোকাল মার্কেটের স্টলে একজন নারিকেল বিক্রেতা রমজানকে সামনে রেখে পণ্যের চাহিদা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন নিশান আলী ও জসিম উদ্দিন। তারা বলেন নারকেলের দাম বর্তমানে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। আমরা প্রতি বস্তা মালদ্বীভিয়ান রুফিয়া ৩০০ টাকায় কিনতাম, কিন্তু এখন একই বস্তা কিনতে হয় ১৬০০ রুফিয়া দিয়ে। খুচরা বিক্রি হতো ৫ থেকে ১০ রুফিয়ায়, অপর দিকে এখন বিক্রি করতে হয় ১৫ থেকে ৩৫ রুফিয়ায়।

এদিকে, আরেক স্থানীয় বিক্রেতা বলেছেন যে তারা ভারত থেকে সবজি ও নারকেল আমদানি শুরু করেছেন, কারণ মালদ্বীপের বিভিন্ন দ্বীপ থেকে আসা সীমিত সবজি ও নারকেলের প্রাপ্যতার কারণে। বিদেশ থেকে সবজি ও নারিকেল আমদানি হলেও খুচরা ও পাইকারি দাম একই রয়েছে। রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছাড়াও সবজি, নারকেলের চাহিদা বেড়েছে বলেও জানান বিক্রেতারা। শুধু এই সব ছাড়াও বাজারের অন্য সব জিনিসের দাম বেড়েছে প্রচুর পরিমাণে।

মালদ্বীপের বাংলাদেশী ব্যবসায়ীক ফোর এল ইন্টারন্যাশনাল এর স্বত্বাধিকারী মো. হাদিউল ইসলাম বলেন, বর্তমানে মালদ্বীপের টেক্স ৬% থেকে ৮% করায় বাংলাদেশ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনার খরচ গুনতে হয় বহুগুণ। এই পরিবর্তে আমরাও দাম কমে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাজারে ছাড়তে পারছিনা। তবুও চেষ্টা করি প্রবাসীদের সুখ দুঃখের সাথী হয়ে থাকতে।

মালদ্বীপে এডিশন এমবি এর মতে, দ্রব্যে মূল্যস্ফীতির হার ২০২৩ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) এর শতাংশ হিসাবে, সমস্ত নিত্যপণ্যের উপর সাত শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে সাতগুন। মালদ্বীপের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো সমস্ত খাদ্য উপাদান গুলোর দাম ৭.৮২ শতাংশ বেড়েছে। এর অর্থ হল খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতির হার সব খাদ্য আইটেম সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির তুলনায় চলতি বছরের শুরুতেই ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। খাদ্যের পাশাপাশি, সমস্ত ভোক্তা আইটেমের দামও বেড়েছে, গত বছরের ডিসেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে সমস্ত আইটেমের দাম ০.৯৬ শতাংশ বেড়েছে, যা মালদ্বীপ সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

বিশ্বব্যাংকের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যস্ফীতির হার বর্তমানে ২৩ শতাংশের উপরে এবং সংস্থাটি এও ভবিষ্যদ্বাণী করেছে এশিয়ার দেশগুলোতে চলতি বছরে খাদ্যের আইটেম গুলোর মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও মালদ্বীপের অনেক বিক্রেতা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে রমজানের পরে দামগুলি সম্ভবত বিদ্যমান স্তরে নেমে আসবে, তারা তিন মাস আগে যে স্তরে জিনিসপত্র বিক্রি করেছিলো সেখানে ফিরে আসবে বলেও মন্তব্য করেন।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চীনের অর্থনীতি: চাপ সামলেও শক্তিশালী অগ্রগতি

SBN

SBN

মালদ্বীপে নিত্য পণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া, বিপাকে নিম্ন আয়ের প্রবাসীরা

আপডেট সময় ০৪:০৯:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩

মালদ্বীপে রমজানকে ঘিরে নিত্য পণ্যের দাম আকাশ ছোয়া। বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের সাধারণ প্রবাসীরা। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে কিন্তু প্রবাসীদের বেতনতো আর বাড়ছেনা! স্বল্প আয়ের প্রবাসীরা তাদের আয়-ব্যয়ের সমন্বয় করতে পারছেন না। কয়েক মাসের ব্যবধানে নিত্য পণ্যের দাম আকাশচুম্বী হাওয়ায় দেশে থাকা পরিবার পরিজনদের নিয়ে প্রবাসীদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাজ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যেন কিছুতেই থামছে না। বাজারে এসে প্রবাসী ক্রেতারা যেন খেই হারিয়ে ফেলছেন চাল, আটা, চিনি ছাড়া বাকি সব জিনিসের দাম আকাশচুম্বী।

মালদ্বীপের লোকাল মার্কেটে হবিগঞ্জ জেলার মালদ্বীপ প্রবাসী মো. আবু জাহের নামে একজন ক্রেতা বলেন ভাই বাজারে আগুন। হোটেলর তুলনায় নিজে রান্না করে খেলে একটু সাশ্রয় হয়, কিন্তু কাঁচা বাজারে এসে দেখি কয়েক মাসের ব্যবধানে হুহু করে দাম বেড়েছে সবজির স্টল গুলোতে। বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে আসা পটল, বেগুন, ভেন্ডি, পুইশাক, করলা, টমেটো, কচুর লতি, কুমড়া, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন সবজির। এইসব জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মত সাধারণ প্রবাসীদের কষ্ট আরও বেড়েছে। খাওয়ার আইটেম ছাড়াও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের মূল্যে বৃদ্ধিতে চরম হতাশায় দিন কাটছে আমাদের মত নিম্ন আয়ের সাধারণ প্রবাসীদের।

মালদ্বীপের স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত, লোকাল মার্কেটের স্টলে একজন নারিকেল বিক্রেতা রমজানকে সামনে রেখে পণ্যের চাহিদা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন নিশান আলী ও জসিম উদ্দিন। তারা বলেন নারকেলের দাম বর্তমানে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। আমরা প্রতি বস্তা মালদ্বীভিয়ান রুফিয়া ৩০০ টাকায় কিনতাম, কিন্তু এখন একই বস্তা কিনতে হয় ১৬০০ রুফিয়া দিয়ে। খুচরা বিক্রি হতো ৫ থেকে ১০ রুফিয়ায়, অপর দিকে এখন বিক্রি করতে হয় ১৫ থেকে ৩৫ রুফিয়ায়।

এদিকে, আরেক স্থানীয় বিক্রেতা বলেছেন যে তারা ভারত থেকে সবজি ও নারকেল আমদানি শুরু করেছেন, কারণ মালদ্বীপের বিভিন্ন দ্বীপ থেকে আসা সীমিত সবজি ও নারকেলের প্রাপ্যতার কারণে। বিদেশ থেকে সবজি ও নারিকেল আমদানি হলেও খুচরা ও পাইকারি দাম একই রয়েছে। রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছাড়াও সবজি, নারকেলের চাহিদা বেড়েছে বলেও জানান বিক্রেতারা। শুধু এই সব ছাড়াও বাজারের অন্য সব জিনিসের দাম বেড়েছে প্রচুর পরিমাণে।

মালদ্বীপের বাংলাদেশী ব্যবসায়ীক ফোর এল ইন্টারন্যাশনাল এর স্বত্বাধিকারী মো. হাদিউল ইসলাম বলেন, বর্তমানে মালদ্বীপের টেক্স ৬% থেকে ৮% করায় বাংলাদেশ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনার খরচ গুনতে হয় বহুগুণ। এই পরিবর্তে আমরাও দাম কমে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাজারে ছাড়তে পারছিনা। তবুও চেষ্টা করি প্রবাসীদের সুখ দুঃখের সাথী হয়ে থাকতে।

মালদ্বীপে এডিশন এমবি এর মতে, দ্রব্যে মূল্যস্ফীতির হার ২০২৩ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) এর শতাংশ হিসাবে, সমস্ত নিত্যপণ্যের উপর সাত শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে সাতগুন। মালদ্বীপের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো সমস্ত খাদ্য উপাদান গুলোর দাম ৭.৮২ শতাংশ বেড়েছে। এর অর্থ হল খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতির হার সব খাদ্য আইটেম সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির তুলনায় চলতি বছরের শুরুতেই ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। খাদ্যের পাশাপাশি, সমস্ত ভোক্তা আইটেমের দামও বেড়েছে, গত বছরের ডিসেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে সমস্ত আইটেমের দাম ০.৯৬ শতাংশ বেড়েছে, যা মালদ্বীপ সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

বিশ্বব্যাংকের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যস্ফীতির হার বর্তমানে ২৩ শতাংশের উপরে এবং সংস্থাটি এও ভবিষ্যদ্বাণী করেছে এশিয়ার দেশগুলোতে চলতি বছরে খাদ্যের আইটেম গুলোর মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও মালদ্বীপের অনেক বিক্রেতা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে রমজানের পরে দামগুলি সম্ভবত বিদ্যমান স্তরে নেমে আসবে, তারা তিন মাস আগে যে স্তরে জিনিসপত্র বিক্রি করেছিলো সেখানে ফিরে আসবে বলেও মন্তব্য করেন।