
প্রিয়াংকা নিয়োগী,
কোচবিহার, ভারত
রীতি ফোনটা রিসিভ করে বলে হ্যাঁ আসছি মল্লিক দা।
কোথায় নামবি বলতো তুই? কেনো নিমতায়!
হ্যাঁ ওখান থেকে অটো নিয়ে নিস।বলবি মিলন ক্লাবে যাবো।
রীতি:আচ্ছা।ফোন কেটে দেয়।
রীতি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।ভালোবাসে গান করতে।এই গানের জগৎ ধরেই রীতি এবং জগৎ মল্লিকের পরিচয়।রীতির থেকে পনেরো বছরের বড়ো জগৎ বাবু।জগৎ এর দুই ছেলে।স্ত্রীর সাথেও ভাব ভালোবাসা অত্যন্ত।স্ত্রী ভীষণ ভাবে সহযোগিতা করেন এই সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে থাকার জন্য।তাই নিজের প্রসার ঘটানোতে নিজেকে ডুবিয়ে দিয়েছেন।এছাড়াও তাদের পোল্ট্রির ফার্ম আছে।সেখান থেকে ব্যাবসা ভালোই হয়।সাথে একটি প্রাইভেট কম্পানিতে চাকরি।
জগৎ বাবু ফোন রিসিভ করে বলে ভেতরে চলে আয়।ভেতরে গেলে রীতিকে বসতে দেয়।আর তিনজনের পরেই রীতির গান।জগৎ বাবুর উদ্বোধ্বনী গান ছিলো।রীতির পৌছাঁতে দেরী হওয়াতে রীতি আর উনার গান শুনতে পারেনি।আর একজনের পরেই রীতির গান।তবে কিন্তু খুব ভালো হয়েছে।
অনেকে প্রশংসা করেছে। এই প্রশংসা দেখে জগৎবাসী কোথাও যেন তিনি প্রশংসিত বোধ করছেন নিজেকে।
অনুষ্ঠান শেষে একসাথেই বেড় হন রীতি এবং জগৎ বাবু।রীতির বয়স এখন চব্বিশ।উড়ন্ত বয়সের যৌবনভরা নারী গভীর যৌবনের দিকে এগোচ্ছে বায়লজিকালি।যদিও এই প্রযুক্তির বিদ্যার যুগে ষাট ছোয়া মহিলারাও ভরপুর যৌবনে নিজেকে ধরে রাখতে ব্যাস্ত।আর এই উঠতি বয়সের মেয়েদের মনের স্বাদটা হয় অন্যরকম।আসলে বাস্তব দেখার উপর নির্ভর সবকিছু।
বাড়িতে ফেরার সময় রীতিকে ট্রেনে তুলে দেন জগৎবাবু।
নিজেও ট্রেনে চাপেন দমদম যাবেন জন্য।মনের মধ্যে এক হাল্কা শীতল হাওয়া ঘূর্ণিপাক খাচ্ছে।এই গরমে মনের শীতল ঘূর্ণিঝড় জগৎবাবুর মানসিকতাকে ঠান্ডা করছে।অপরদিকে রীতিও বেশ খুশি।এইরকম এক মানুষকে নিয়ে যিনি নিজের থেকে সুযোগ দিচ্ছেন।রীতিও বেশ ভালো ভদ্র ও গাম্ভীর্য্য মানুষ।জগৎবাবুও ভীষণ বিশ্বস্ত মানুষ।তিনি এইরকম অনেককেই সুযোগ দেন।সেটা জগৎবাবুর স্ত্রীও জানেন।
বাড়িতে ফিরে অনুষ্ঠানের বিষয়ে সমস্তটা জানালেও রীতিকে নিয়ে গর্ববোধ করার বিষয়টা জানাতে পারেননি।স্ত্রীকে পেয়ে ফিরে যান আবার সাংসারিক মানসিকতায়।ঘুম থেকে উঠে সেই সংসারের সুখের হাল ধরেন জগৎবাবু।মুছে যায় রীতির স্নিগ্ধতা।
রীতিও অনুভব করছে জগতবাবুকে অনেকটা খুটির মতো। রবিবার জরুরী কিছু কাজের জন্য ফার্মে চলে যান।ম্যানেজারের সাথে গভীর আলোচনায় ব্যাস্ত।ফোনের ঘন্টা বেজে উঠল।
ভীষণ বিরক্ত হয়ে ঠিককরে না দেখেই ফোনটা কেটে দেয়।আবার ফোন করে।ফোনটায় দেখে রীতির নাম ভাসছে।একটা গুরুত্বপূর্ণ ফোন এসেছে বলে ম্যানেজারকে দশ মিনিট পর আসতে বলে।ম্যানেজার চলে যায়।
সাথে সাথে ফোন রিসিভ করে। হ্যাঁ রীতি বলো।
রীতিও বেশ আনন্দিত আকড়ে ধরার কন্ঠস্বর পেয়ে।
এরমধ্যে কোনো অনুষ্ঠান নেই।
জগৎবাবু:না।
রীতি:ও।
কেমন আছেন থেকে শুরু হয় কথা।ভুলেই গেলেন ম্যানেজারের সাথে ফার্ম নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়।মনে চলছে রীতির আবহাওয়া।এই কথা সেই কথা।দুজনেরই মুখে শুদ্ধ কথা।মন শরীরে মিলিত হওয়ার চাওয়া পাওয়া।
না।মুখে একটাও শারিরীক বিষয়ের কথা নেই।মুখের কথোপকথন শুধুই শ্রদ্ধা বিশ্বাসের।একটা জায়গায় পৌছাঁনোর চিন্তাভাবনার আলোচনা। শরীর মনে একে অপরের সাথে মিলিত হওয়ার ছবি দেখছে।

ভাবনা গভীর হচ্ছে। মুখে সাংস্কৃতিক আলোচনা হলেও মননে মানসিকতার প্রশান্তিতে একে অপেরের সাথে মিশে বিলীন হওয়ার ইচ্ছে ততবেশি হচ্ছে।তাদের মুহুর্ত ফোনেই এক আলাদা রঙিন হয়ে উঠল।
রীতি এই রীতি।খেয়ে যা।রীতিকে যেন কেউ ধাক্কা দিলো।রীতি বাস্তব খেয়ালে ফিরল।রাখি জগৎ বাবু বলে ফোন কেটে দেয়।জগৎ ও তার আসল জগতে ফেরে।মনে পড়ে ম্যানেজারের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কথা।ডেকে নেয় সাথে সাথে।ম্যানেজারের সাথে কথা হওয়া শেষ হতেই টবের ফোন আসে।জগৎ বাবুর স্ত্রীর নাম টব।টবের ফোন দেখে আবার ফিরে যান তার গোছানো সংসারের চিন্তায়।
মুক্তির লড়াই ডেস্ক : 


























