
অতনু চৌধুরী (রাজু), বাগেরহাট
বাগেরহাটের মোংলায় পারিবারিক কলহের জেরে দ্বিতীয় স্ত্রীর দেওয়া আগুনে পুড়লো ব্যবসায়ীদের স্বপ্ন।
সম্পর্কের জেরে দেড় বছর আগে মোংলা উপজেলার নারিকেলতলা এলাকার আউয়াল খাঁ এর মেয়ে আসমা বেগম (২২) এর সাথে দ্বিতীয় বিবাহে আবদ্ধ হন পশ্চিম শেহলাবুনিয়া এলাকার মোঃ শাজাহান খাঁ এর ছেলে মোঃ শাহাদাৎ খাঁ (২৭)। শাহাদাৎ পেশায় একজন মটর গ্যারেজ মেকার। হঠাৎ পারিবারিক কলোহের সৃষ্টি হয় এ দম্পত্তির মাঝে। স্বামী-স্ত্রীর কলোহের জেরেই শাহাদাৎ এর দীর্ঘদিনের পরিশ্রমে গড়া প্রতিষ্ঠানটি আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৪’টার দিকে মোংলা উপজেলার তালুকদার আব্দুল খালেক সড়ক এলাকায় ভয়াবহ এ আগুনের ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের দীর্ঘ চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ আগুনে শুধু শাহাদৎ এর একারই নয়, পুড়ে গেছে আরও ২টি দোকান। এ অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক প্রায় ১৫ থেকে ১৮ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অনুমান ক্ষতিগ্রস্থদের।
শুক্রবার (১১’এপ্রিল) সকালে
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে বিভিন্ন ধরনের পোড়া গাড়ি পড়ে আছে। দোকানের পোড়া টিন আর বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্রাংশ জায়গায় জায়গায় পড়ে আছে।
পারিবারিক কলোহের জেরেই ক্ষুব্ধ হয়ে শাহাদাৎ এর দ্বিতীয় স্ত্রী দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও পুড়ে যায় শাহাদাৎ এর মটরগ্যারেজের দোকান। তবে শুধু শাহাদাৎ এর দোকানই পোড়েনি, আশপাশের আরও ২’টি দোকান ভস্মীভূত হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, একজন মহিলা এসে কয়েকটি দোকানদারের কাছে দিয়াশলাই চান। পরে মহিলা অন্য দোকান থেকে দিয়াশলাইট কিনে নিয়ে গ্যারেজের ভিতর ঢোকে। সে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর দেখি গ্যারেজ’সহ দোকানগুলি আগুনে পুড়ছে। আমরা চিৎকার দিয়ে কয়েকটি মটরসাইকের ও অটো দ্রুত সরিয়ে ফেলি। ঐ মহিলা গ্যারেজ মালিক শাহাদাৎ এর দ্বিতীয় স্ত্রী। তাদের মধ্যে কয়েকদিন যাবত গ্যান্জাম চলছে। ঐ মহিলাই আগুন লাগিয়েছে বলে আমাদের ধারণা।
এ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত চায়ের দোকানদার মোঃবাবুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকালে এসে শাহাদাৎ এর বৌ তাকে ধরে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে পারিবারিক ঝামেলা চলছে। বিকালে একটি অটোতে একা এসে পোট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় শাহাদাৎ এর ছোট বউ।
এ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত শাহাদাৎ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলছেন, আমি বাজারে ছিলাম। কাজ শেষে ফেরার পথে আমাকে ফোন করে আমার দোকানে আগুন লেগেছে। আমি দ্রুত ছুটে আসি। তবে কিভাবে আগুন লেগেছে এ বিষয়ে প্রশ্ন রাখলে তিনি বলেন, আমিতো দেখিনাই। স্থানীয়রা দেখেছে কিভাবে আগুন লেগেছে।
এ বিষয়ে মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আনিসুর রহমান বলেন,এ বিষয়ে আমাদের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা একটা মামলা দায়ের করেছেন, দোষী ব্যক্তিকে ধরতে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। আশাকরি আমরা খুব দ্রুতই তাকে আটক করতে সক্ষম হবো।