ঢাকা ০৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বেইজিংয়ে ফ্যাসিবাদ-বিরোধী বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকীতে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান Logo ন্যায়, শান্তি ও বিজয়ের বার্তা নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান Logo কুচকাওয়াজ ও যুদ্ধবিমানের শট দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছে সিএমজি’র অনুষ্ঠান Logo একতরফাবাদ নয়, অভিন্ন উন্নয়নের ডাক দিল সি চিন পিং Logo বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে একসাথে এগোবে চীন-ইন্দোনেশিয়া Logo শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন চীনা আধুনিকায়নের মূল ভিত্তি: প্রেসিডেন্ট সি Logo রাঙ্গামাটিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত Logo বালিয়াডাঙ্গীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অটোচালকের মৃত্যু Logo অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদসকে ফুল সজ্জিত গাড়িতে রাজকীয় বিদায় Logo সরাইলে বিএনপির দুই গ্রুপের সমর্থকদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ: আহত ৩০

যশোরের মাটিতে হানাদার মুক্ত প্রথম বিজয় সমাবেশ

উৎপল ঘোষ, যশোরঃ রোববার ১১ ডিসেম্বর। জাতীয় জীবনের স্মরণীয় একটি দিন। শুধু যশোর নয় দেশবাসীর জন্য আজ দিনটি গৌরবের। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কবলমুক্ত বাংলাদেশের মাটিতে এই দিনে যশোর টাউন হল ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় সমাবেশ। মুক্ত বাংলার প্রথম এই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, ফনিভুষন মজুদার, সোহরাব হোসেন, ব্যরিস্টার আমিরুল ইসলাম, চরমপত্রপাঠক এম আর আকতার মুকুল, চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান, অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম প্রমুখ।
সেদিনের সমাবেশে প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্যে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রা গান্ধীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এছাড়াও ওই সমাবেশ থেকে তিনি বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেয়ার জন্যে কুড়ি নেতাদের প্রতি আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আর ধ্বংশ নয়, যুদ্ধ নয়। এই মুহূর্তে কাজ হল যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। তিনি সর্বস্তরের মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনায় দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সমাবেশ থেকে যশোরের তৎকালীন ডিসি ওয়ালি উল ইসলাম এবং কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন ঘোষাল কে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলায় যেন অবনতি না ঘটে। একই সাথে জনতাকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করবেন। তাজউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, স্বাধীন এই দেশে ধর্ম নিয়ে আর রাজনীতি চলবে না। আর তাই জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রওশন আলী পরিচালনা করেন তাজউদ্দিন আহমেদের রাজনৈতিক সচিব আলী তারেক।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তবিবুর রহমান সরদার, শাহ্ হাদিউজ্জামান, যুদ্ধকালীন বৃহত্তম যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা খান টিপু সুলতান, বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলু (বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী), প্রবাসী সরকারের ফটো গ্রাফার আব্দুল হামিদ রায়হান, ফটো গ্রাফার মুক্তিযোদ্ধা মো.শফি প্রমুখ। এদের মধ্যে ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলু, অ্যাড, ভীম সেন বাদে সকলেই প্রয়াত।
আমেরিকা প্রবাসী বীরমুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলু হোয়াটস অ্যাপে জানান নানান কথা। সেদিনের স্মৃতি চারণ করে তিনি আরো বলেন, এই জনসভা যখন হয় তখন যশোরের আশপাশে যুদ্ধ চলছিল। জনসভা শেষে নেতৃবৃন্দ সড়ক পথে কোলকাতা চলে যান। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সেদিনের ছাত্রলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. ভীম সেন । তিনি বলেন সেদিন ময়দানের পশ্চিমের প্রধান দ্বারের সোজাসুজি টাউন হলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম।খসরুসহ অনেকেই পাশে ছিলেন। তিনি বলেন, শীতের বিকেলের ৫টার আগেই সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদসহ নেতৃবৃন্দ সমাবেশ স্থল ত্যাগ করেন।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বেইজিংয়ে ফ্যাসিবাদ-বিরোধী বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকীতে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান

SBN

SBN

যশোরের মাটিতে হানাদার মুক্ত প্রথম বিজয় সমাবেশ

আপডেট সময় ১২:৩১:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২

উৎপল ঘোষ, যশোরঃ রোববার ১১ ডিসেম্বর। জাতীয় জীবনের স্মরণীয় একটি দিন। শুধু যশোর নয় দেশবাসীর জন্য আজ দিনটি গৌরবের। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কবলমুক্ত বাংলাদেশের মাটিতে এই দিনে যশোর টাউন হল ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় সমাবেশ। মুক্ত বাংলার প্রথম এই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, ফনিভুষন মজুদার, সোহরাব হোসেন, ব্যরিস্টার আমিরুল ইসলাম, চরমপত্রপাঠক এম আর আকতার মুকুল, চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান, অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম প্রমুখ।
সেদিনের সমাবেশে প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্যে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রা গান্ধীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এছাড়াও ওই সমাবেশ থেকে তিনি বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেয়ার জন্যে কুড়ি নেতাদের প্রতি আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আর ধ্বংশ নয়, যুদ্ধ নয়। এই মুহূর্তে কাজ হল যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। তিনি সর্বস্তরের মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনায় দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সমাবেশ থেকে যশোরের তৎকালীন ডিসি ওয়ালি উল ইসলাম এবং কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন ঘোষাল কে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলায় যেন অবনতি না ঘটে। একই সাথে জনতাকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করবেন। তাজউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, স্বাধীন এই দেশে ধর্ম নিয়ে আর রাজনীতি চলবে না। আর তাই জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রওশন আলী পরিচালনা করেন তাজউদ্দিন আহমেদের রাজনৈতিক সচিব আলী তারেক।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তবিবুর রহমান সরদার, শাহ্ হাদিউজ্জামান, যুদ্ধকালীন বৃহত্তম যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা খান টিপু সুলতান, বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলু (বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী), প্রবাসী সরকারের ফটো গ্রাফার আব্দুল হামিদ রায়হান, ফটো গ্রাফার মুক্তিযোদ্ধা মো.শফি প্রমুখ। এদের মধ্যে ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলু, অ্যাড, ভীম সেন বাদে সকলেই প্রয়াত।
আমেরিকা প্রবাসী বীরমুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলু হোয়াটস অ্যাপে জানান নানান কথা। সেদিনের স্মৃতি চারণ করে তিনি আরো বলেন, এই জনসভা যখন হয় তখন যশোরের আশপাশে যুদ্ধ চলছিল। জনসভা শেষে নেতৃবৃন্দ সড়ক পথে কোলকাতা চলে যান। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সেদিনের ছাত্রলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. ভীম সেন । তিনি বলেন সেদিন ময়দানের পশ্চিমের প্রধান দ্বারের সোজাসুজি টাউন হলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম।খসরুসহ অনেকেই পাশে ছিলেন। তিনি বলেন, শীতের বিকেলের ৫টার আগেই সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদসহ নেতৃবৃন্দ সমাবেশ স্থল ত্যাগ করেন।