
যুক্তিহীন এই স্বাধীনতার স্বাদ
(ছোট গল্প)
মোর্শেদা চৌধুরী এ্যামি
হা, হা,হা, স্বাধীনতা? সবাই বলে স্বাধীনতা
কই স্বাধীনতা, আমি তো স্বাধীনতা বলে কিছুই দেখছিনা? কি কালার স্বাধীনতার? কী গন্ধের স্বাধীনতার? রংধনুর মতো হরেক রকম রঙ্গের স্বাধীনতার?
আমি বলি কি,”এই রংধনুর রং আবছা আবছা
যা চোখে চশমা দিয়েও দেখা যায় না।”
বড় বড় লাট সাহেবরা একটু একটু ঠায়র করতে
পারলেও, হত দরিদ্র, মধ্যবিত্তের কাছে ঠিক যেনো কুয়াশার চাদরে ঢাকা দুয়াশার মতো ঐ স্বাধীনতা।
হুম, সৌভাগ্যবানেরা মাঝে মাঝে কারো সু-সময়ের বন্ধু হলেও, দূর্ভাগ্যবানেরা খুব অপমানিত, অপদস্ত, হেয় প্রতিপন্ন, মুখাপেক্ষী, দূর দূর করে তাড়া খেতে হয় তাদের।
তখন, কোথায় থাকে সেই স্বাধীনতা?
কিশোর কিশোরী বয়সে বেশির ভাগ তরুণ তরুণী তার বয়ঃসন্ধিকালের নিবিড় যত্ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে যুগের পর যুগ। আবেগের টানে বহু তরুণ তরুণী ভালোবাসার মায়াবী জোছনায় জড়িয়ে সম্পর্কে গড়া প্রেমিক/প্রেমিকাকে হাতের নাগালে না পাওয়ার যন্ত্রণায় গলায় ফাঁস দিয়ে অকালে আত্মহনন এর পথটি বেঁচে নিচ্ছে! তখন সমাজে ঐ অভিভাবকদের মাথা নিচু করে হাটতে হয় আবার সবাই তাঁদের সাথে ঐ কারণে অসম্মানজনক আচরণ করে। তাহলে এটাকে কি স্বাধীনবতা বলে?
মুদ্রাস্ফীতির দারুণ মৌসুমে, ব্যবসায়িকরা সিন্ডিকেট করে গুদামে পণ্যজাত সামগ্রী মজুদ করে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সৃষ্টি করে। নিন্মআয়ের মানুষ গুলো বেদনার কাতর হয়ে বাজার থেকে যৎসামান্য পণ্যসামগ্রী সংগ্রহ করে বাড়ি ফিরে। বাড়ি তে ফিরে গৃহিনীর মুখের মলিন ছায়া দেখতে হয়। গৃহিনীর ভাবনা ” আমি তো এই সামান্য বাজার দিয়ে সবার মন রক্ষা করতে পারবোনা বলে মন খারাপ করে।”
সন্তানের মুখের দিকে তাকানো যায় না খাবার টেবিলে, ” মাকে শুনতে হয়, এগুলো কি রান্না করেছো? প্রতিদিন শুধু ভর্তা, ডাল, শাকসবজি আর শুটকি। ভাললাগছেনা আর এসব খাবার।” শ্বশুর-শ্বাশুড়ি, দেবর-বাসুর, ননদ-ননদীদের তো আর কথাই নেই।
সংসারে অভাব অনটন আসলেই, শুনতে হয়, “এ বউটা ঘরে আসার পর থেকেই আমাদের ঘরে অভাব অনটন আর দূর্ভাগ্যের ছায়া এসে পড়েছে।” আর নানান কথা”। চাকুরিজীবী শিক্ষকদের তো অনেক হিমসিম করে ধারদেনা করে সংসার চালাতে হয়। মাসের অর্ধেকেই তো হাত খরচের টাকা শেষ। যে বেতন ভাতা অর্জন করে দু’বেলা দুমুঠো খেলে, চিকিৎসা খরচ, সন্তানদের লেখা পড়ার খরচ,পরিবারের সকল সদস্যের ভরনপোষণ ইত্যাদিতে মাস শেষে হাত খালি হয়ে যায়। আনন্দ উল্লাস বা বিনোদন তাদের জীবনে একটি আতঙ্কিত শব্দ।
কত নারীর জীবনে, অকাল মৃত্যু, বা সংসার ভাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। লোভ লালসা মত্ত হয়ে কত মাছ ব্যবসায়ী মাছে ফরমালিন বা তরতাজা রাখার ঔষধ/ ইঞ্জেকশন পুশ করছে। বিভিন্ন ফল মূলেও তা করছে। আবার মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায় একদল অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন এলাকা থেকে পঁচা মিষ্টি সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করে নাটরের কাঁচাগোল্লা তৈরি করে বাজারজাত করছে।
ক্ষমতাদর কিছু কিছু উচ্চ পদস্থ ব্যাক্তিরা বিচার বিবেচনা না করে চাটুকারিতাদের কথা শুনে কত অসহায় ও নিরীহ জনগণের তাদের শান্তিতে বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।
তাহলে কি বলবো সবাই আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ নিয়ে নিরাপদে আছি?