
মো: নাজমুল হোসেন ইমন, স্টাফ রিপোর্টার
রাঙামাটির বাঘাইহাটের দুর্গম পাহাড়ে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর আস্তানায় সেনাবাহিনীর অভিযান ও গুলিবিনিময় চলছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, অভিযান চলাকালে একে ৪৭ রাইফেলসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
তাৎক্ষণিক তাদের স্থানে তল্লাশি চালিয়ে একটি একে-৪৭, দেশীয় বন্দুক ৩টি, দেশীয় পিস্তল ১টি, ১টি ম্যাগাজিন একে-৪৭, বল এ্যামুনেশন ৬ রাউন্ড, কার্তুজ ১ রাউন্ড, এমটি-কার্টিজ ৪২টি, ওয়াকিটকি সেট ও ব্যাটারিসহ ৪টি, এ্যামুঃপোচ ১টি, জিপিএস ডিভাইস ১টি, গোপন ভিডিও ক্যামেরা কলম ৩টি, গোপন ভিডিও ক্যামেরা বোতাম ২টি, চশমা ১টি, ইউপিডিএফ লং লাইভ আর্মব্যান্ড ৫টি, ইউপিডিএফ পতাকা ৩টি, বিভিন্ন ধরনে বই ১০টি, চাঁদা আদায়ে রশিদ বই ২টি উদ্ধার করা হয়।
বাঘাইহাট জোনের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাসুদ রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসনে তৎকালীন সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মধ্যে শান্তিচুক্তি সই হয়। চুক্তিতে বহু ধারার উল্লেখ ছিল—এর কিছু বাস্তবায়ন করা হয়, আর বাকিগুলোর বাস্তবায়নের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। তবে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের অভিযোগ, চুক্তির অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ ধারা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
এই চুক্তির বিরোধিতা করেই ১৯৯৮ সালের জুনে আত্মপ্রকাশ করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। সংগঠনটি মূলত চুক্তিবিরোধী অবস্থান নিয়ে পাহাড়ি তরুণদের মধ্যে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলে।
এরপর থেকেই পার্বত্য অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে বিরোধ চরমে ওঠে। দুই সংগঠনের সংঘর্ষে বিভিন্ন সময়ে বহু কর্মী নিহত হন, আর সশস্ত্র সহিংসতায় পাহাড়জুড়ে বিরাজ করে আতঙ্ক।
২০১০ সালে জেএসএসের মূল ধারা (সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন) থেকে একটি অংশ বেরিয়ে এসে জেএসএস (এম এন লারমা) নামে নতুন একটি সংগঠন গঠন করে।
পরে ২০১৭ সালে ইউপিডিএফের অভ্যন্তরীণ বিভাজনের পর প্রসীত খিসার নেতৃত্বাধীন মূল সংগঠন থেকে আলাদা হয়ে আরেকটি অংশ ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক নামে আত্মপ্রকাশ করে।