ঢাকা ০৪:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালিত Logo কুমিল্লায় ধ্রুবতারার রজতজয়ন্তী উদযাপন Logo রাজউক কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইলের হাতে আলাদিনের চেরাগ Logo বরুড়ায় রেজভীয়া দরবার শরীফের উদ্যোগে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত Logo বুড়িচংয়ে পাহারাদার নির্যাতন মামলা আসামি যুবদল নেতাকে গ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভ Logo ছাত্র সংসদ নির্বাচন আর মাঠের রাজনীতি এক কথা নয় : রেদোয়ান আহমেদ Logo কমনওয়েলথ ছাত্র সংসদের ভিপি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির রিফাদ Logo বালিয়াডাঙ্গীতে দুসীরাতুন্নবী (সা) সেমিনার অনুষ্ঠিত Logo নালিতাবাড়ীতে ধর্ষণ মামলা ধামাচাপা দিতে ধর্ষিতার বিরুদ্ধে চারটি চুরির মামলা Logo স্বতন্ত্র প্যানেলের জিতু জাকসুর ভিপি, জিএস ছাত্রশিবিরের মাজহারুল

রাজউক কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইলের হাতে আলাদিনের চেরাগ

এম এ মাইকেলঃ

* দুদক থেকে ক্লিন সার্টিফিকেট নেওয়ার ব্যবস্থা
* রাজধানী ঢাকার বনানী রামপুরা বনশ্রী সহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট
* সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রতিবাদ দিয়ে মিটমাট করা
* গ্রামের বাড়ী আখাউড়ায় অঢেল সম্পদ
* ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য দামি গাড়ি
* রাজউক কর্মকর্তাদের কাছে বেয়াদব হিসেবে চিহ্নিত।

বিগত সরকারের আমলে সরকারি বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতি ক্যান্সার রূপ ধারণ করেছিলো।দুর্নীতি নামক ক্যান্সার রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক যেন দুর্নীতিবাজদের কাছে স্বর্ণের খনি, ঝাড়ুদার পিয়ন কম্পিউটার অপারেটর থেকে শুরু করে বহু কর্মকর্তা কর্মচারী শূন্য থেকে বনে গেছেন ঘুষ দুর্নীতির টাকায় শত শত কোটি টাকার মালিক, বিভিন্ন সময়ে রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশ ও নানান অনিয়মের অভিযোগ মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে জমা হলে তা অদৃশ্য কারণে আলোর মুখ দেখেনা, রাজউকের কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইল ঘুষ দুর্নীতির টাকায় মালিক হয়েছেন শত শত কোটি টাকার, তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হলেও আছেন এখনো বহাল তবিয়তে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানাধীন নয়াদিল গ্রামের রিক্সা চালকের ছেলে মোঃ ইসমাইল মিয়া ঝাড়ুদার হিসেবে ২০০৮ সালে রাজউকে যোগ দিয়েছিলেন মো. ইসমাইল হোসেন মিয়া। পরবর্তীতে অবৈধ অর্থ দিয়ে পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন অফিস সহায়ক। রাজউকে যোগদানের পর গত ১৭/১৮ বছরে ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়।

তার ঠাট-বাট, চলন-বলনে রাজকীয় পরিবর্তন হয়েছে। তার সম্পদ এতোটাই বেড়েছে যে গ্রামের লোকজন তাকে রাজউকের বড় পদের কর্মকর্তা হিসেবে জানেন। ঘুষ-দুর্নীতি-অনিয়ম’র মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ’র মালিক হওয়ার কারনে কাউকে মানুষ বলে মনে করেন না ইসমাইল তিনি নিজেকে রাজউক’র স্বঘোষিত নিয়ন্ত্রক দাবি করেন। গেল কয়েক বছরে রাজউক কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইলের নামে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে দুদকে। তবে; কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি অদৃশ্য কারণে উল্টো ইসমাইলের ক্ষমতা আরো বেগবান হয়েছে। ২০২১ সালের ৩১ মার্চ ইসমাইল মিয়ার নামে প্রথম দুদকে অভিযোগ করেন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি,অভিযোগপত্রে ইসমাইলের অর্থ-বিত্ত-সম্পদের বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ করে দ্রুত তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে দুদক চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন অভিযোগকারী।

এরপরে নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ইসমাইলের নামে দুদকে দায়ের করা অপর এক অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, “রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইল মিয়ার নজিরবিহীন অনিয়ম দুর্নীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে দুদকে কয়েকটি লিখিত অভিযোগ দাখিল স্বত্ত্বেও অদৃশ্য কারণে অদ্যাবধি তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি যাহা নিয়ে সচেতন মহলের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। যে কারণে ইসমাইল মিয়া আরও বেপরোয়া হয়েছে। সে নিজেকে রাজউকের হর্তা-কর্তা ভাবে। দুদকের অভিযোগে ও একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে ইসমাইল মিয়ার সম্পদের বিবরনে উল্লেখ ছিল ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানাধীন নয়াদিল গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইসমাইল মিয়া একজন রিক্সা চালকের ছেলে হয়েও রাজউকে চাকরি করে আজ কোটি কোটি টাকার মালিক।

তার পিতার নাম মোঃ হারেছ মিয়া। রাজধানীর রামপুরার বনশ্রী এলাকায় ব্লক-এ, রোড নং-৪, বাড়ি নং-২৮ ফ্ল্যাটটি কোটি টাকায় বিক্রি করে বর্তমানে বনশ্রী ব্লক-বি,রোড নং-৪ বাড়ি নং ১২ কপোতাক্ষ ভবনের পঞ্চম তলায় স্ব-পরিবারে বসবাস করেন ইসমাইল। মালী হিসেবে রাজউকে চাকরি জীবন শুরু করে বর্তমানে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত আছেন তিনি। তবে তার চলাফেরা আর দাপট দেখে মনে হবে তিনি বড় পদের কোন কর্মকর্তা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য রয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা দামের গাড়ি।

রাজউকের যেকোন অবৈধ কাজ টাকা দিলে মুহূর্তেই ইসমাইল বৈধ করে দেয়। আভিজাত্য এলাকা বনানী, রামপুরা, বনশ্রীসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকাতে তার ৭/৮টি ফ্ল্যাট আছে। নামে-বেনামে রাজধানীর পূর্বাচলসহ তার গ্রামের বাড়িতে ৫ তলা ফাউন্ডেশনসহ ২টি বাড়ী ও জমি রয়েছে। তার নিজস্ব প্রাইভেটকার রয়েছে। একাধিক মোটর সাইকেল ব্যবহার করেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে কোটি টাকা মূল্যের একটি দিঘি ক্রয় করেছেন।

এছাড়াও প্রায় ৩০ লক্ষ্য টাকা ব্যয় করে একটি অটো রিক্সার শো-রুম করেছেন।’ ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি ইসমাইল মিয়ার নামে দুদকে আরও একটি অভিযোগ করেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার নয়াদিল গ্রামের মো. রাসেল মিয়া। ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়- ‘ইসমাইলের বাবা পেশায় ছিলেন রিকশাচালক। দুর্নীতির দায়ে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হওয়া রাজউকের এক কর্মচারীর হাত ধরে সেখানে মাস্টাররোলে চাকরি পান ইসমাইল। এরপর তিনি গ্রামে পুরনো বাড়ির কাছে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করে বাড়ি করেন। ইসমাইলের রয়েছে একটি প্রাইভেট কার ও দুটি মোটরসাইকেল। ঢাকার বনশ্রীর এ-ব্লকে একটি, বনানীতে একটি, ভূঁইয়াপাড়ায় দুটি ও নন্দীপাড়ায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

রাজধানীর মৌচাক মার্কেটে দুটি দোকান ও কক্সবাজারে একটি হোটেলের শেয়ার রয়েছে তার। এছাড়া স্ত্রী, শ্বশুরসহ নামে-বেনামে অনেক সম্পত্তি রয়েছে। আখাউড়ার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নান্নু মিয়ার বাড়ি কেনার জন্য তিনি ৫০ লাখ টাকা বায়না করেন, যা পরে ফেরত নেন।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার নয়াদিল গ্রামে মো. ইসমাইল হোসেন মিয়ার কোটি টাকার বাড়ি। ইসমাইলের বাড়ী নয়াদিল গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন,‘মানুষ হিসেবে ইসমাইল বেশ ভালো। যেকোনো প্রয়োজনে তিনি গরিব-দুঃখীদের টাকা দিয়ে সহায়তা করেন।’ পুকুরপারে নির্মাণাধীন মসজিদটি দেখিয়ে তিনি বলেন,এই মসজিদটি নির্মাণে তিনি প্রায় এক কোটি টাকা দিয়েছেন ও পাশের মাদ্রাসাতেও করে দিয়েছে তিনি খুব ভালো মানুষ এলাকায় যে কারো বিপদে তিনি সহায়তা করেন তবে তারা সবাই মনে করে তিনি রাজউকের উচ্চপদস্থ কোন কর্মকর্তা কিন্তু বাস্তবে তিনি একজন দুর্নীতিবাজ।

ইসমাইলের নয়াদিলের দোতলা বাড়ির নিচতলায় ‘ব্যাটারি মেলা অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইজি বাইকের শোরুম’ আছে।

ইসমাইলের এলাকার এক ব্যবসায়ী জানান, প্রতিষ্ঠানটির মালিক ইসমাইল হোসেন। এ বাড়ির একটু দূরে ইসমাইলের পুরনো বাড়ি। আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনের সামনেও রয়েছে একই ধরনের প্রতিষ্ঠান।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, সামান্য পিয়ন পদের (কম্পিউটার অপারেটর)একজন কর্মচারী ইসমাইল মিয়ার স্বেচ্ছাচারিতা,ঘুষ-দুর্নীতি এক কথায় মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সে কাউকেই তোয়াক্কা করে না। তার চলাফেরা, হাব-ভাব দেখলে মনে হয় সে রাজউকের বড় কোন কর্মকর্তা! রাজউকে যোগদানের মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানেই বাড়ী-গাড়িসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক মোঃ ইসমাইল মিয়া।

রাজউকের একাধিক পরিচালক ও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, এই ছেলেটা অনেক বেয়াদব ও অর্থের বিনিময়ে সবকিছু ম্যানেজ করে ফেলেন যার কারণে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোন কার্যকর শাস্তি মূলক ব্যবস্থা হয়নি।

অনুসন্ধানে বনশ্রী আবাসিক এলাকায় গেলে কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইল এর দীর্ঘদিনের পরিচিত ড্রাইভার শহীদ এই প্রতিবেদককে বলেন ইসমাইল সামান্য বেতনের চাকরি করলে কি হবে বর্তমানে সে শত কোটি টাকার উপরে মালিক বাড়ি গাড়ি ফ্ল্যাট সবই আছে তার আমরা বন্ধু-বান্ধব ইসমাইলকে নিয়ে গর্ব করি এবং দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে আরো সম্পদ এর মালিক করে দেন।

এসব বিষয়ে রাজউক কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইল বলেন বিগত দিনে আমার বিরুদ্ধে যতগুলো পত্রিকার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল প্রত্যেকটি পত্রিকায় আমি প্রতিবাদ দিয়ে মিটমাট করে ফেলেছি।এমনকি দুদক থেকে ক্লিন সার্টিফিকেট নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।ইসমাইলের এমন বক্তব্য শুনে প্রতিবেদক তাকে প্রশ্ন করেন দুর্নীতিবাজদের কি সার্টিফিকেট দেয়? প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে তিনি কোন উত্তর দেন নাই।

অন্যদিকে রাজউক কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইল’র অনিয়ম দুর্নীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের বিষয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী এম এস রেজা বলেন অতীতে রাজউক দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে রাজউক প্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন কে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
এহেন দুর্নীতিবাজ গংরা দেশ ও জাতির শত্রু।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালিত

SBN

SBN

রাজউক কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইলের হাতে আলাদিনের চেরাগ

আপডেট সময় ০২:২৩:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এম এ মাইকেলঃ

* দুদক থেকে ক্লিন সার্টিফিকেট নেওয়ার ব্যবস্থা
* রাজধানী ঢাকার বনানী রামপুরা বনশ্রী সহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট
* সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রতিবাদ দিয়ে মিটমাট করা
* গ্রামের বাড়ী আখাউড়ায় অঢেল সম্পদ
* ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য দামি গাড়ি
* রাজউক কর্মকর্তাদের কাছে বেয়াদব হিসেবে চিহ্নিত।

বিগত সরকারের আমলে সরকারি বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতি ক্যান্সার রূপ ধারণ করেছিলো।দুর্নীতি নামক ক্যান্সার রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক যেন দুর্নীতিবাজদের কাছে স্বর্ণের খনি, ঝাড়ুদার পিয়ন কম্পিউটার অপারেটর থেকে শুরু করে বহু কর্মকর্তা কর্মচারী শূন্য থেকে বনে গেছেন ঘুষ দুর্নীতির টাকায় শত শত কোটি টাকার মালিক, বিভিন্ন সময়ে রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশ ও নানান অনিয়মের অভিযোগ মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে জমা হলে তা অদৃশ্য কারণে আলোর মুখ দেখেনা, রাজউকের কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইল ঘুষ দুর্নীতির টাকায় মালিক হয়েছেন শত শত কোটি টাকার, তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হলেও আছেন এখনো বহাল তবিয়তে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানাধীন নয়াদিল গ্রামের রিক্সা চালকের ছেলে মোঃ ইসমাইল মিয়া ঝাড়ুদার হিসেবে ২০০৮ সালে রাজউকে যোগ দিয়েছিলেন মো. ইসমাইল হোসেন মিয়া। পরবর্তীতে অবৈধ অর্থ দিয়ে পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন অফিস সহায়ক। রাজউকে যোগদানের পর গত ১৭/১৮ বছরে ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়।

তার ঠাট-বাট, চলন-বলনে রাজকীয় পরিবর্তন হয়েছে। তার সম্পদ এতোটাই বেড়েছে যে গ্রামের লোকজন তাকে রাজউকের বড় পদের কর্মকর্তা হিসেবে জানেন। ঘুষ-দুর্নীতি-অনিয়ম’র মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ’র মালিক হওয়ার কারনে কাউকে মানুষ বলে মনে করেন না ইসমাইল তিনি নিজেকে রাজউক’র স্বঘোষিত নিয়ন্ত্রক দাবি করেন। গেল কয়েক বছরে রাজউক কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইলের নামে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে দুদকে। তবে; কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি অদৃশ্য কারণে উল্টো ইসমাইলের ক্ষমতা আরো বেগবান হয়েছে। ২০২১ সালের ৩১ মার্চ ইসমাইল মিয়ার নামে প্রথম দুদকে অভিযোগ করেন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি,অভিযোগপত্রে ইসমাইলের অর্থ-বিত্ত-সম্পদের বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ করে দ্রুত তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে দুদক চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন অভিযোগকারী।

এরপরে নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ইসমাইলের নামে দুদকে দায়ের করা অপর এক অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, “রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইল মিয়ার নজিরবিহীন অনিয়ম দুর্নীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে দুদকে কয়েকটি লিখিত অভিযোগ দাখিল স্বত্ত্বেও অদৃশ্য কারণে অদ্যাবধি তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি যাহা নিয়ে সচেতন মহলের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। যে কারণে ইসমাইল মিয়া আরও বেপরোয়া হয়েছে। সে নিজেকে রাজউকের হর্তা-কর্তা ভাবে। দুদকের অভিযোগে ও একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে ইসমাইল মিয়ার সম্পদের বিবরনে উল্লেখ ছিল ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানাধীন নয়াদিল গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইসমাইল মিয়া একজন রিক্সা চালকের ছেলে হয়েও রাজউকে চাকরি করে আজ কোটি কোটি টাকার মালিক।

তার পিতার নাম মোঃ হারেছ মিয়া। রাজধানীর রামপুরার বনশ্রী এলাকায় ব্লক-এ, রোড নং-৪, বাড়ি নং-২৮ ফ্ল্যাটটি কোটি টাকায় বিক্রি করে বর্তমানে বনশ্রী ব্লক-বি,রোড নং-৪ বাড়ি নং ১২ কপোতাক্ষ ভবনের পঞ্চম তলায় স্ব-পরিবারে বসবাস করেন ইসমাইল। মালী হিসেবে রাজউকে চাকরি জীবন শুরু করে বর্তমানে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত আছেন তিনি। তবে তার চলাফেরা আর দাপট দেখে মনে হবে তিনি বড় পদের কোন কর্মকর্তা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য রয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা দামের গাড়ি।

রাজউকের যেকোন অবৈধ কাজ টাকা দিলে মুহূর্তেই ইসমাইল বৈধ করে দেয়। আভিজাত্য এলাকা বনানী, রামপুরা, বনশ্রীসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকাতে তার ৭/৮টি ফ্ল্যাট আছে। নামে-বেনামে রাজধানীর পূর্বাচলসহ তার গ্রামের বাড়িতে ৫ তলা ফাউন্ডেশনসহ ২টি বাড়ী ও জমি রয়েছে। তার নিজস্ব প্রাইভেটকার রয়েছে। একাধিক মোটর সাইকেল ব্যবহার করেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে কোটি টাকা মূল্যের একটি দিঘি ক্রয় করেছেন।

এছাড়াও প্রায় ৩০ লক্ষ্য টাকা ব্যয় করে একটি অটো রিক্সার শো-রুম করেছেন।’ ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি ইসমাইল মিয়ার নামে দুদকে আরও একটি অভিযোগ করেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার নয়াদিল গ্রামের মো. রাসেল মিয়া। ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়- ‘ইসমাইলের বাবা পেশায় ছিলেন রিকশাচালক। দুর্নীতির দায়ে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হওয়া রাজউকের এক কর্মচারীর হাত ধরে সেখানে মাস্টাররোলে চাকরি পান ইসমাইল। এরপর তিনি গ্রামে পুরনো বাড়ির কাছে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করে বাড়ি করেন। ইসমাইলের রয়েছে একটি প্রাইভেট কার ও দুটি মোটরসাইকেল। ঢাকার বনশ্রীর এ-ব্লকে একটি, বনানীতে একটি, ভূঁইয়াপাড়ায় দুটি ও নন্দীপাড়ায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

রাজধানীর মৌচাক মার্কেটে দুটি দোকান ও কক্সবাজারে একটি হোটেলের শেয়ার রয়েছে তার। এছাড়া স্ত্রী, শ্বশুরসহ নামে-বেনামে অনেক সম্পত্তি রয়েছে। আখাউড়ার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নান্নু মিয়ার বাড়ি কেনার জন্য তিনি ৫০ লাখ টাকা বায়না করেন, যা পরে ফেরত নেন।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার নয়াদিল গ্রামে মো. ইসমাইল হোসেন মিয়ার কোটি টাকার বাড়ি। ইসমাইলের বাড়ী নয়াদিল গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন,‘মানুষ হিসেবে ইসমাইল বেশ ভালো। যেকোনো প্রয়োজনে তিনি গরিব-দুঃখীদের টাকা দিয়ে সহায়তা করেন।’ পুকুরপারে নির্মাণাধীন মসজিদটি দেখিয়ে তিনি বলেন,এই মসজিদটি নির্মাণে তিনি প্রায় এক কোটি টাকা দিয়েছেন ও পাশের মাদ্রাসাতেও করে দিয়েছে তিনি খুব ভালো মানুষ এলাকায় যে কারো বিপদে তিনি সহায়তা করেন তবে তারা সবাই মনে করে তিনি রাজউকের উচ্চপদস্থ কোন কর্মকর্তা কিন্তু বাস্তবে তিনি একজন দুর্নীতিবাজ।

ইসমাইলের নয়াদিলের দোতলা বাড়ির নিচতলায় ‘ব্যাটারি মেলা অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইজি বাইকের শোরুম’ আছে।

ইসমাইলের এলাকার এক ব্যবসায়ী জানান, প্রতিষ্ঠানটির মালিক ইসমাইল হোসেন। এ বাড়ির একটু দূরে ইসমাইলের পুরনো বাড়ি। আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনের সামনেও রয়েছে একই ধরনের প্রতিষ্ঠান।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, সামান্য পিয়ন পদের (কম্পিউটার অপারেটর)একজন কর্মচারী ইসমাইল মিয়ার স্বেচ্ছাচারিতা,ঘুষ-দুর্নীতি এক কথায় মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সে কাউকেই তোয়াক্কা করে না। তার চলাফেরা, হাব-ভাব দেখলে মনে হয় সে রাজউকের বড় কোন কর্মকর্তা! রাজউকে যোগদানের মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানেই বাড়ী-গাড়িসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক মোঃ ইসমাইল মিয়া।

রাজউকের একাধিক পরিচালক ও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, এই ছেলেটা অনেক বেয়াদব ও অর্থের বিনিময়ে সবকিছু ম্যানেজ করে ফেলেন যার কারণে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোন কার্যকর শাস্তি মূলক ব্যবস্থা হয়নি।

অনুসন্ধানে বনশ্রী আবাসিক এলাকায় গেলে কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইল এর দীর্ঘদিনের পরিচিত ড্রাইভার শহীদ এই প্রতিবেদককে বলেন ইসমাইল সামান্য বেতনের চাকরি করলে কি হবে বর্তমানে সে শত কোটি টাকার উপরে মালিক বাড়ি গাড়ি ফ্ল্যাট সবই আছে তার আমরা বন্ধু-বান্ধব ইসমাইলকে নিয়ে গর্ব করি এবং দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে আরো সম্পদ এর মালিক করে দেন।

এসব বিষয়ে রাজউক কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইল বলেন বিগত দিনে আমার বিরুদ্ধে যতগুলো পত্রিকার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল প্রত্যেকটি পত্রিকায় আমি প্রতিবাদ দিয়ে মিটমাট করে ফেলেছি।এমনকি দুদক থেকে ক্লিন সার্টিফিকেট নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।ইসমাইলের এমন বক্তব্য শুনে প্রতিবেদক তাকে প্রশ্ন করেন দুর্নীতিবাজদের কি সার্টিফিকেট দেয়? প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে তিনি কোন উত্তর দেন নাই।

অন্যদিকে রাজউক কম্পিউটার অপারেটর ইসমাইল’র অনিয়ম দুর্নীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের বিষয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী এম এস রেজা বলেন অতীতে রাজউক দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে রাজউক প্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন কে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
এহেন দুর্নীতিবাজ গংরা দেশ ও জাতির শত্রু।