ঢাকা ০৯:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পঞ্চগড়ে নবাগত জেলা প্রশাসক এর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় Logo লাকসামে ট্রাক মোটরসাইকেল সংঘর্ষে যুবকের মৃত্যু Logo গাইবান্ধার নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিলেন মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা Logo পবা-মোহনপুর আসনে জামায়াত প্রার্থীর মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা Logo চট্টগ্রামের বহিঃনোঙ্গরে আর্টিসানাল ট্রলিং বোট ও জালসহ ১৮ জেলে আটক Logo সরাইলে জামি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, আটক ১৫, আহত ২৫ Logo ইনসাফভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়তে চাই -আলহাজ্ব সেলিম মাহমুদ Logo নালিতাবাড়ীতে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo ‎বরুড়ায় ডিপ্লোমা মেডিকেল এসোসিয়েশনের জেলা সাধারণ সম্পাদককে সংবর্ধনা Logo খিলগাঁও থেকে নিখোঁজ তিনজন শিশু ফিরলো মায়ের কোলে

সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস এর প্রতিবেদন

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন সুন্দরবনের জন্য বড় হুমকি

অতনু চৌধুরী (রাজু), বাগেরহাট

দেশি – বিদেশি গবেষণার নেতিবাচক ফলাফল আর পরিবেশবাদীদের নানা প্রতিবাদ সত্ত্বেও নির্মিত রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন সুন্দরবনের জন্য বড় হুমকি।

নির্মাণের আগে এই কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে যে ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছিল, বাস্তবে এখন ধারণার থেকেও বেশি ক্ষতি হচ্ছে। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস দ্বারা পরিচালিত মূল্যায়নে এ তথ্য উঠে এসেছে। নির্মাণের উদ্যোগকালীন সময় থেকেই রামপালে কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক চলে আসছিল। পরিবেশবাদী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে সুন্দরবনের কাছে গত ২০১৬ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ১’হাজার ৩২০’মেগাওয়াট এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হয় গত ২০২২ সালে।

সম্প্রতি সরকার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস এর গবেষণা রিপোর্টে উঠে এসেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালুর পর থেকেই শর্ত ভঙ্গ করে উন্মুক্তভাবে কয়লা পরিবহনে দুষিত হচ্ছে সুন্দরবন এলাকার নদী ও বন।

এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার ছাই এবং কেন্দ্র থেকে নির্গত পানি শর্ত ভঙ্গ করে পরিশোধন ছাড়াই মিশছে প্রকৃতিতে। ফলে এই এলাকায় বাড়ছে নাইট্রেট, ফসফেট, পারদ’সহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিকের মাত্রা। যার বিরূপ প্রভাব দৃশ্যমান জলজ ও বনজ জীব বৈচিত্র্যের ওপর।

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তাকে অপহরণ, নারী’সহ আটক ৭ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুন্দরবন সংলগ্ন’সহ প্রকল্প এলাকায় (করমজল, হারবাড়িয়া, আকরাম পয়েন্ট, হিরণ পয়েন্ট) পাখির বাসা দেখা যায়নি, চারণভূমি বিলুপ্ত হয়েছে, গৃহপালিত প্রাণীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) খুলনার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, সারা বিশ্বই যখন কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনতে সোচ্চার, তখন এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু সুন্দরবন, নদী বা প্রকৃতিরই ক্ষতি করছে না, বৈদেশিক ঋণ সহায়তার কারণে অর্থনৈতিকভাবেও পিছিয়ে পড়ছে। দীর্ঘমেয়াদী যেসব ক্ষতির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞরা করছেন তাতে হারিয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক সম্পদ আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মোঃ নাসিফ আহসান বলেন, ক্রমাগত এ দূষণ এখনই ঠেকানো না গেলে সুন্দরবন’সহ এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যে দেখা দেবে ভায়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়। অন্যদিকে শুরু থেকেই যান্ত্রিক ত্রুটিতে কয়েক দফায় বন্ধ হয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। বর্তমানে নানা সংকটে কেন্দ্রটি সক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, ফলে অর্থনৈতিক সুফলও মিলছে না এই কেন্দ্র থেকে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পঞ্চগড়ে নবাগত জেলা প্রশাসক এর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়

SBN

SBN

সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস এর প্রতিবেদন

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন সুন্দরবনের জন্য বড় হুমকি

আপডেট সময় ০৮:১১:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

অতনু চৌধুরী (রাজু), বাগেরহাট

দেশি – বিদেশি গবেষণার নেতিবাচক ফলাফল আর পরিবেশবাদীদের নানা প্রতিবাদ সত্ত্বেও নির্মিত রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন সুন্দরবনের জন্য বড় হুমকি।

নির্মাণের আগে এই কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে যে ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছিল, বাস্তবে এখন ধারণার থেকেও বেশি ক্ষতি হচ্ছে। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস দ্বারা পরিচালিত মূল্যায়নে এ তথ্য উঠে এসেছে। নির্মাণের উদ্যোগকালীন সময় থেকেই রামপালে কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক চলে আসছিল। পরিবেশবাদী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে সুন্দরবনের কাছে গত ২০১৬ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ১’হাজার ৩২০’মেগাওয়াট এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হয় গত ২০২২ সালে।

সম্প্রতি সরকার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস এর গবেষণা রিপোর্টে উঠে এসেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালুর পর থেকেই শর্ত ভঙ্গ করে উন্মুক্তভাবে কয়লা পরিবহনে দুষিত হচ্ছে সুন্দরবন এলাকার নদী ও বন।

এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার ছাই এবং কেন্দ্র থেকে নির্গত পানি শর্ত ভঙ্গ করে পরিশোধন ছাড়াই মিশছে প্রকৃতিতে। ফলে এই এলাকায় বাড়ছে নাইট্রেট, ফসফেট, পারদ’সহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিকের মাত্রা। যার বিরূপ প্রভাব দৃশ্যমান জলজ ও বনজ জীব বৈচিত্র্যের ওপর।

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তাকে অপহরণ, নারী’সহ আটক ৭ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুন্দরবন সংলগ্ন’সহ প্রকল্প এলাকায় (করমজল, হারবাড়িয়া, আকরাম পয়েন্ট, হিরণ পয়েন্ট) পাখির বাসা দেখা যায়নি, চারণভূমি বিলুপ্ত হয়েছে, গৃহপালিত প্রাণীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) খুলনার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, সারা বিশ্বই যখন কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনতে সোচ্চার, তখন এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু সুন্দরবন, নদী বা প্রকৃতিরই ক্ষতি করছে না, বৈদেশিক ঋণ সহায়তার কারণে অর্থনৈতিকভাবেও পিছিয়ে পড়ছে। দীর্ঘমেয়াদী যেসব ক্ষতির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞরা করছেন তাতে হারিয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক সম্পদ আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মোঃ নাসিফ আহসান বলেন, ক্রমাগত এ দূষণ এখনই ঠেকানো না গেলে সুন্দরবন’সহ এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যে দেখা দেবে ভায়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়। অন্যদিকে শুরু থেকেই যান্ত্রিক ত্রুটিতে কয়েক দফায় বন্ধ হয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। বর্তমানে নানা সংকটে কেন্দ্রটি সক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, ফলে অর্থনৈতিক সুফলও মিলছে না এই কেন্দ্র থেকে।