
লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার লাকসামে এগারো বছর বয়সী ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে নাজমুল হাসান (৩৫)
নামে এক মাদ্রাসার শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে লাকসাম থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারী) সকালে লাকসাম পৌরসভার জংশন এলাকায় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ গ্রেফতারকৃত শিক্ষককে ওইদিন বিকেলে কুমিল্লা আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেপ্তারকৃত মো.নাজমুল হাসান উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের সুখতলা গ্রামের আলহাজ বেগম শরিফুন্নেছা হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ও একই উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের ভাকড্ডা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, উপজেলার তাতিপাড়া বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের মেয়ে ও মেয়ে জামাই ঢাকা শহরে বসবাস করায় শিশুটি(ভিকটিম)কে তার নিকট রেখে যায়। গত ৬/৭ মাস পূর্বে রফিকুল ইসলাম তার নাতিকে সুখতলা আলহাজ বেগম শরিফুন্নেছা হাফেজিয়া মাদ্রাসা ভর্তি করেন। গত ১৮ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ছাত্রদের বিশ্রামের সময় মাদরাসার শিক্ষক নাজমুল হাসান তাঁর শয়নকক্ষে ওই শিশুকে ডেকে নিয়ে বলাৎকার করেন। তিনি এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য ওই শিশুকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান। গত ২৬ জানুয়ারি বিকেলে শিশুটি মাদরাসা থেকে পালিয়ে বাড়ি গিয়ে আত্মীয়স্বজনদের বলাৎকারের বিষয়ে অবগত করে। পরিবারের পক্ষ থেকে মাদরাসার প্রধান ক্বারী ও প্রতিষ্ঠানের কতৃপক্ষকে জানানো হলেও তাঁরা কোনো পদক্ষেপ নেননি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় ওইদিন রাতে অভিযুক্ত শিক্ষক পালিয়ে যায়। পরে ভুক্তভোগী পরিবার স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে জানানো হলে তারা থানা পুলিশকে অবহিত করার জন্য পরামর্শ দেন। গত ৫ ফেব্রুয়ারী শিশুটির নানা রফিকুল ইসলাম
বাদি হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লাকসাম থানায় মামলা করেন।
লাকসাম পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আলী আহমেদ বলেন,
ওই শিক্ষার্থী আমার ইউনিয়নে তাঁতিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আমার পাশ্ববর্তী আজগরা ইউনিয়নে সুখতলা গ্রামের আলহাজ বেগম শরিফুন্নেছা হাফেজিয়া মাদ্রাসায় নাজেরানা বিভাগের একজন এতিম শিক্ষার্থী।গত কয়েকদিন পূর্বে ওই মাদ্রাসার শিক্ষকের হাতে বলাৎকারের শিকার হয়েছে বলে ঘটনার একসপ্তাহ পর ভুক্তভোগী পরিবারের আমার কাছে এসে বলেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক নাকি পলাতক রয়েছে তাই ভুক্তভোগী পরিবারেরকে আইনের সহয়তা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিই।
আমি অভিযুক্ত শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন মাদরাসা ছাত্রকে বলাৎকারের মামলায় একজন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ভিকটিমকে মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে।