ঢাকা ১২:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo লাকসামে অস্ত্রসহ তিন কিশোর আটক Logo মোংলায় ফ্যাসিস্ট আ.লীগ–সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানদের অপসারণের দাবি Logo লালমনিরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভুয়া ভাউচারে ২৫ লক্ষ টাকা আত্মসাত Logo হাতীবান্ধায় বিছানার নিচ থেকে মাদক উদ্ধার, যুবক আটক Logo নালিতাবাড়ীতে ইয়াবাসহ আটক যুবকের এক বছরের কারাদণ্ড Logo বুড়িচংয়ে কলেজ ছাত্র হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন Logo এ্যাম্বুলেন্স নিতিমালা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কুমিল্লায় মানববন্ধন Logo চীন-যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ইস্যুতে প্রাথমিক ঐকমত্যে Logo আসিয়ান-প্লাস সহযোগিতা পূর্ব এশিয়ার প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি: লি ছিয়াং Logo উদ্ভাবন, উন্মুক্ততা ও ভাগ করা উন্নয়ন: ওয়াশিংটনে সিএমজি’র বৈশ্বিক সংলাপ

প্রমাণ মিলেছে...

লালমনিরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভুয়া ভাউচারে ২৫ লক্ষ টাকা আত্মসাত

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. নিশাত উন নাহার ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে এক বছরে ভূয়া বিল ভাউচারে ২৫ লক্ষ ৯ হাজার ৩ শত ৬৫ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে লালমনিরহাট পরিবার পরিকল্পনার উপপরিচালক মো. শাহজালাল স্বাক্ষরিত এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে এ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রতিবেদনটি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) বরাবর প্রেরণ করেন। যার স্মারক নং-জেপপ/লাল/শা-প্রশা/২৫/১৮৭, তাং ২২/৬/২৫ইং।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, লালমনিরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি ১০ শয্যার ওয়ার্ডের অবস্থা অমানবিক। ১০ শয্যা বাস্তবে নেই। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে সরবরাহকৃত শয্যা অদ্যাবদি কেন্দ্রে ব্যবহারিত হয়ে আসছে।

অথচ শুধুমাত্র ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ‎পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা খাতে ১ লক্ষ ৩২ হাজার। দশ শয্যার ওয়ার্ডের বিছানাপত্র খাতে ৫১ হাজার। প্রচার ও বিজ্ঞাপন খাতে ৩০ হাজার। পেট্রোল লুব্রিকেন্ট খাতে ২ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩৭৫ টাকা। মোটরযান মেরামত খাতে ৭০ হাজার। এ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত খাতে ৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ৩৭৫ টাকা। চিকিৎসা যন্ত্রপাতি খাতে ৯০ হাজার। অন্যান্য যন্ত্রপাতি খাতে ১ লক্ষ ২৫ হাজার। তিনটি যন্ত্রপাতি খাতে ৩ লক্ষ ৫৩ হাজার। এমএসআর খাতে ৪ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯৯০ টাকা। ঔষধ সংগ্রহ খাতে ১০ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯৯০ টাকা। কম্পিউটার সামগ্রী খাতে ৪৫ হাজার। কম্পিউটার মেরামত খাতে ৩৯ হাজার। কম্পিউটার সহ অন্যান্য ৫২ হাজার। আসবাবপত্র সংগ্রহ খাতে ৭৭ হাজার ও আসবাপত্র মেরামত খাতে ৪০ হাজার। বৈদ্যুতিক খাতে ৮২ হাজার ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি খাতে ৬৬ হাজার। স্বাস্থ্য বিধান খাতে ৩৭ হাজার ও পানি সরবরাহ খাতে ৬১ হাজার। দ্রব্যাদি খাতে ৪৩ হাজার ও অন্যান্য মনিহারী খাতে ৪৯ হাজার। সবমিলে এক বছরে ২৫ লক্ষ ৯ হাজার ৩ শত ৬৫ টাকা বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ হলেও ‎তৎকালীন মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. নিশাত উন নাহারের স্বাক্ষরে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মনোয়ারা বেগম ভূয়া বিল ভাউচারে সরকারী ওইসব অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে আউটসোর্সিং নীতিমালা অমান্য করে পরিবহন ব্যয় খাতে ৮ হাজার ও গ্যাস, জ্বালানী খাতে ২৫ হাজার। এমসিএইচ সার্ভিসেস ইউনিটের বরাদ্দ এবং খরচের অমিল রয়েছে। সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থে কেনা মালামাল, স্টক, সরবরাহ ও বিতরণ রেজিস্টার, ঔষধ, আসবাবপত্র, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, এ্যাম্বুলেন্স, কম্পিউটার, মোটরযান মেরামতের তথ্যের কোন ‎হদিস নেই। খরচের স্বপক্ষে বিল ভাউচার সহ স্টক কিংবা সরবরাহ রেজিস্টার দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। কোন প্রকার কেনাকাটার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ভুয়া বিল ভাইচারের মাধ্যমে সরকারী কোষাগার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে পুরো টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ২০০৮ সালে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে মনোয়ারা বেগম যোগদান করেন। এরপর থেকে সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা ক্লিনিক্যাল স্টাফ, এসএসিএমও-এফডাব্লুভি, নিরাপত্তা প্রহরী, আয়া, মিডওয়াইফ, সকল ষ্টাফ সহ ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী পিয়ন, আয়া, নৈশপ্রহরীর পোশাক বিল, আনুতোষিক ভাতা, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের পেনশন সহ অন্যান্য বিলের টাকা উত্তোলনে মনোয়ারা বেগমকে ঘুষ দিতে হয়।

এছাড়াও ওই কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) কে ম্যানেছ করে একটানা একই অফিসে ১৭ বছর বহাল থাকায় মনোয়ারা বেগম শুধুমাত্র একাই সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ধারণা করছেন। তারা আরো বলছেন, এক বছরে যারা ২৫ লক্ষ টাকা আত্নসাত করে তাহলে দীর্ঘ ১৭ বছরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের খোঁজখবর নিলে মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে রহরহ দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যাবে।

এসব দুর্নীতির টাকা দিয়ে দুই মেয়েকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেন। করেছেন ছাদধালাই বাড়ি, কিনেছেন জমি ও ব্যাংকে রেখেছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।

দীর্ঘদিনের এসব অভিযোগে মনোয়ারা বেগমকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র থেকে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে বদলি করার হলেও তিনি ওই অফিসে যান না। এবং প্রায় একমাস ধরে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের হাজিরা খাতা কোন স্বাক্ষর করছেন না বলে একটি সুত্র নিশ্চিত করেছেন। এরআগেও মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও রহস্যজনক কারণে আজো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
‎​

অভিযুক্ত অফিস সহকারি মনোয়ারা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমাকে বিল তৈরি করতে বলেছেন করেছি। ওই বিল সঠিক কি না তাতো আমার দেখার বিষয় নয়। আমি কোন অনিয়ম করিনি।


মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. নিশাত উন নাহার বলেন, আমি দীর্ঘসময় লালমনিরহাটে চাকরি করে সেবা দিয়েছি। লালমনিরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে সরঞ্জামাদি কেনায় অডিট আপত্তির বিষয়টি আমি দেখবো। অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট দেখে কোটি কোটি টাকার অমিল আছে, সেসব আপনারা দেখেন না।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট পরিবার পরিকল্পনার উপপরিচালক মো. শাহজালাল বলেন, শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৫ লাখ নয়, বরং বিগত চার বছরের সকল আর্থিক লেনদেন ও মালামাল ক্রয়ের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্দের পুরো টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।

‎​এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রতিবেদনটি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লাকসামে অস্ত্রসহ তিন কিশোর আটক

SBN

SBN

প্রমাণ মিলেছে...

লালমনিরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভুয়া ভাউচারে ২৫ লক্ষ টাকা আত্মসাত

আপডেট সময় ০৬:০৫:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. নিশাত উন নাহার ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে এক বছরে ভূয়া বিল ভাউচারে ২৫ লক্ষ ৯ হাজার ৩ শত ৬৫ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে লালমনিরহাট পরিবার পরিকল্পনার উপপরিচালক মো. শাহজালাল স্বাক্ষরিত এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে এ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রতিবেদনটি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) বরাবর প্রেরণ করেন। যার স্মারক নং-জেপপ/লাল/শা-প্রশা/২৫/১৮৭, তাং ২২/৬/২৫ইং।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, লালমনিরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি ১০ শয্যার ওয়ার্ডের অবস্থা অমানবিক। ১০ শয্যা বাস্তবে নেই। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে সরবরাহকৃত শয্যা অদ্যাবদি কেন্দ্রে ব্যবহারিত হয়ে আসছে।

অথচ শুধুমাত্র ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ‎পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা খাতে ১ লক্ষ ৩২ হাজার। দশ শয্যার ওয়ার্ডের বিছানাপত্র খাতে ৫১ হাজার। প্রচার ও বিজ্ঞাপন খাতে ৩০ হাজার। পেট্রোল লুব্রিকেন্ট খাতে ২ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩৭৫ টাকা। মোটরযান মেরামত খাতে ৭০ হাজার। এ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত খাতে ৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ৩৭৫ টাকা। চিকিৎসা যন্ত্রপাতি খাতে ৯০ হাজার। অন্যান্য যন্ত্রপাতি খাতে ১ লক্ষ ২৫ হাজার। তিনটি যন্ত্রপাতি খাতে ৩ লক্ষ ৫৩ হাজার। এমএসআর খাতে ৪ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯৯০ টাকা। ঔষধ সংগ্রহ খাতে ১০ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯৯০ টাকা। কম্পিউটার সামগ্রী খাতে ৪৫ হাজার। কম্পিউটার মেরামত খাতে ৩৯ হাজার। কম্পিউটার সহ অন্যান্য ৫২ হাজার। আসবাবপত্র সংগ্রহ খাতে ৭৭ হাজার ও আসবাপত্র মেরামত খাতে ৪০ হাজার। বৈদ্যুতিক খাতে ৮২ হাজার ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি খাতে ৬৬ হাজার। স্বাস্থ্য বিধান খাতে ৩৭ হাজার ও পানি সরবরাহ খাতে ৬১ হাজার। দ্রব্যাদি খাতে ৪৩ হাজার ও অন্যান্য মনিহারী খাতে ৪৯ হাজার। সবমিলে এক বছরে ২৫ লক্ষ ৯ হাজার ৩ শত ৬৫ টাকা বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ হলেও ‎তৎকালীন মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. নিশাত উন নাহারের স্বাক্ষরে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মনোয়ারা বেগম ভূয়া বিল ভাউচারে সরকারী ওইসব অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে আউটসোর্সিং নীতিমালা অমান্য করে পরিবহন ব্যয় খাতে ৮ হাজার ও গ্যাস, জ্বালানী খাতে ২৫ হাজার। এমসিএইচ সার্ভিসেস ইউনিটের বরাদ্দ এবং খরচের অমিল রয়েছে। সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থে কেনা মালামাল, স্টক, সরবরাহ ও বিতরণ রেজিস্টার, ঔষধ, আসবাবপত্র, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, এ্যাম্বুলেন্স, কম্পিউটার, মোটরযান মেরামতের তথ্যের কোন ‎হদিস নেই। খরচের স্বপক্ষে বিল ভাউচার সহ স্টক কিংবা সরবরাহ রেজিস্টার দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। কোন প্রকার কেনাকাটার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ভুয়া বিল ভাইচারের মাধ্যমে সরকারী কোষাগার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে পুরো টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ২০০৮ সালে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে মনোয়ারা বেগম যোগদান করেন। এরপর থেকে সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা ক্লিনিক্যাল স্টাফ, এসএসিএমও-এফডাব্লুভি, নিরাপত্তা প্রহরী, আয়া, মিডওয়াইফ, সকল ষ্টাফ সহ ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী পিয়ন, আয়া, নৈশপ্রহরীর পোশাক বিল, আনুতোষিক ভাতা, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের পেনশন সহ অন্যান্য বিলের টাকা উত্তোলনে মনোয়ারা বেগমকে ঘুষ দিতে হয়।

এছাড়াও ওই কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) কে ম্যানেছ করে একটানা একই অফিসে ১৭ বছর বহাল থাকায় মনোয়ারা বেগম শুধুমাত্র একাই সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ধারণা করছেন। তারা আরো বলছেন, এক বছরে যারা ২৫ লক্ষ টাকা আত্নসাত করে তাহলে দীর্ঘ ১৭ বছরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের খোঁজখবর নিলে মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে রহরহ দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যাবে।

এসব দুর্নীতির টাকা দিয়ে দুই মেয়েকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেন। করেছেন ছাদধালাই বাড়ি, কিনেছেন জমি ও ব্যাংকে রেখেছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।

দীর্ঘদিনের এসব অভিযোগে মনোয়ারা বেগমকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র থেকে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে বদলি করার হলেও তিনি ওই অফিসে যান না। এবং প্রায় একমাস ধরে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের হাজিরা খাতা কোন স্বাক্ষর করছেন না বলে একটি সুত্র নিশ্চিত করেছেন। এরআগেও মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও রহস্যজনক কারণে আজো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
‎​

অভিযুক্ত অফিস সহকারি মনোয়ারা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমাকে বিল তৈরি করতে বলেছেন করেছি। ওই বিল সঠিক কি না তাতো আমার দেখার বিষয় নয়। আমি কোন অনিয়ম করিনি।


মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. নিশাত উন নাহার বলেন, আমি দীর্ঘসময় লালমনিরহাটে চাকরি করে সেবা দিয়েছি। লালমনিরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে সরঞ্জামাদি কেনায় অডিট আপত্তির বিষয়টি আমি দেখবো। অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট দেখে কোটি কোটি টাকার অমিল আছে, সেসব আপনারা দেখেন না।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট পরিবার পরিকল্পনার উপপরিচালক মো. শাহজালাল বলেন, শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৫ লাখ নয়, বরং বিগত চার বছরের সকল আর্থিক লেনদেন ও মালামাল ক্রয়ের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্দের পুরো টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।

‎​এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রতিবেদনটি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।