
জাপানের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চীনা জনগণের প্রতিরোধ-যুদ্ধ ও বিশ্ব ফ্যাসিবাদ-বিরোধী যুদ্ধ বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান গত (বুধবার) বেইজিংয়ের মহাগণভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, দেশের প্রেসিডেন্ট ও কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান সি চিন পিং অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন।
প্রেসিডেন্ট সি জোর দিয়ে বলেন, ন্যায়বিচারের বিশ্বাস অটল, শান্তির আকাঙ্ক্ষা অপ্রতিরোধ্য এবং জনগণের শক্তি অজেয়। যে কোন সময় আমাদের মানবজাতির সাধারণ মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে হবে, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করতে হবে, বিশ্বকে ন্যায্যতা ও শান্তিতে পূর্ণ করতে হবে। আমাদের শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে চলতে হবে, বিশ্বশান্তি দৃঢ়ভাবে রক্ষা করতে হবে, মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার জন্য কাজ করতে হবে, এবং জনগণের কল্যাণ উন্নত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হবে।
সকালে সাড়ে ১১টার দিকে বিদেশি নেতা ও তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে নিয়ে সি চিন পিং ও তার স্ত্রী ফেং লি ইউয়ান বাঙ্কোয়েট হলে প্রবেশ করলে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সি চিন পিং গুরুত্বপূর্ণ ভাষণটি দেন। তিনি প্রথম চীন সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে সকলকে আন্তরিক স্বাগত জানান এবং দেশের সকল জাতিগত মানুষ ও বিশ্বের সকল দেশের জনগণকে বিজয় দিবসের উষ্ণ অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, ৮০ বছর আগে চীনা জনগণ ১৪ বছরের কঠোর রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর জাপানি সামরিক আক্রমণকারীদের সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করে, বিশ্ব ফ্যাসিবাদ-বিরোধী যুদ্ধের সম্পূর্ণ বিজয় ঘোষণা করে। এটা আধুনিক সময়ে চীনা জাতির ঐতিহাসিক মোড় এবং বিশ্ব উন্নয়নেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। চীনা জনগণ ফ্যাসিবাদ-বিরোধী মিত্র ও সকল দেশের জনগণের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে লড়াই করার মাধ্যমে এই মহান বিজয় অর্জন করেছে। সেসব বিদেশি সরকার ও আন্তর্জাতিক বন্ধু, যারা চীনা জনগণকে আগ্রাসন প্রতিরোধে সমর্থন ও সাহায্য করেছিল, তাদেরকে চীন সরকার ও জনগণ কখনও ভুলে যাবে না।
সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, সামরিক সামর্থ্য বা দুর্বলতা শক্তির উপর নির্ভর করে; দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য বা ব্যর্থতা ন্যায়বিচারের উপর নির্ভর করে। ন্যায়বিচার, আলো ও অগ্রগতি অবশ্যই মন্দ, অন্ধকার ও প্রতিক্রিয়াকে পরাজিত করবে। মানবজাতি একই পৃথিবীতে বাস করে, সবার উচিত সম্প্রীতির সাথে বসবাস করা, একসঙ্গে কাজ করা।
তিনি বলেন, চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন হল শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন, চীন সবসময় বিশ্বশান্তির শক্তি, স্থিতিশীলতার শক্তি এবং অগ্রগতির শক্তি। আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি সব দেশ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেবে, একসঙ্গে বিশ্বের আধুনিকায়নকে উৎসাহিত করবে মানবজাতির সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যত তৈরি করবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সি চিন পিং, ফেং লি ইউয়ান এবং বিদেশি নেতা ও অতিথিরা একসঙ্গে ‘ইতিহাস থেকে শেখা, একসঙ্গে ভবিষ্যৎ তৈরি করা’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
সূত্র:তুহিনা-হাশিম-স্বর্ণা,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।