ঢাকা ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শাহরাস্তিতে ওলামালীগ নেতা মাদরাসা কমিটির সভাপতি, ৩ সদস্যের পদত্যাগ Logo ব্যালট পেপার ছাপানো’র ঘোষণা দেওয়া সেই যুবদল নেতা বহিষ্কার Logo কটিয়াদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১৫ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা Logo খুলনা চাঞ্চল্যকর টগর হত্যার প্রধান আসামী গ্রেফতার Logo ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে আর কোনো বাধা মেই Logo ঝিনাইগাতীতে দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসায় সরকারি বই বিক্রির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ Logo সি-পুতিন নেতৃত্বে রাশিয়া-চীন সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে Logo থিয়েনচিন সম্মেলন গ্লোবাল সাউথকে সুসংহত করেছে:কিউবা Logo থিয়েনচিনে উদ্বোধন চীন-এসসিও সবুজ শিল্প প্ল্যাটফর্ম Logo দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকীতে এসসিও-র নেতৃবৃন্দের বিবৃতি

শাহরাস্তিতে ওলামালীগ নেতা মাদরাসা কমিটির সভাপতি, ৩ সদস্যের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

চাঁদপুরের শাহরাস্তির বলশিদ মহিলা মডেল আলিম মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন চাঁদপুর জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। বিষয়টি জানাজানি হলে সভাপতির অব্যাহতি দাবি করে কমিটির ৩ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎসাহী সদস্য মনিরুজ্জামান, অভিভাবক সদস্য মো. খোরশেদ আলম ও সদস্য আয়েশা বেগম পদত্যাগ করেছেন।

জানা যায়, বিগত সময়ে বিভিন্ন সুবিধা ভোগের জন্য তিন দফা মাদরাসার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। মাদরাসাটির যাত্রাকালে নামকরণ করা হয় ফজিলতের নেছা মহিলা মাদ্রাসা। যা প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলামের মায়ের নামে নামকরণ হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশেষ সুবিধা আদায়ে আমিনুল ইসলাম ওই নামের আগে পরে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা মাদরাসা নামকরণ করেন। বর্তমান বলশিদ মডেল মহিলা আলিম মাদরাসা নামকরণ হলেও প্রধান ফটকে এখনো শোভা পাচ্ছে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা মাদরাসা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলছে, শিক্ষক মিলনায়তন খোলা থাকলেও উপস্থিতি অল্প।

মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক ঝর্না আক্তার জানান, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উপজেলায় মিটিংয়ে রয়েছেন আর অফিস সহকারী ছুটিতে। ঘোষিত কমিটির বিষয়ে আমি নিশ্চিত না। শুনেছি আমার নাম থাকতে পারে, তবে কমিটি আসলেই হয়েছে কিনা আমি জানি না।”

এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগকারী বাবুল হোসেন পাটোয়ারী জানান, মাদরাসাটির নাম তিন দফা পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমান ঘোষিত কমিটির সভাপতি একজন আওয়ামী লীগ নেতা, তিনি জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে তিনি এ মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। বিগত কয়েক বছর পূর্বে তিনি আহমদ নগর আবদুল আজিজ আলিম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা বলে তিনি অঘোষিত ভাবে দুটি মাদরাসার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তার স্ত্রী নাজমা বেগম মাদরাসার অফিস সহকারী। এছাড়াও তার পরিবারের ৫ সদস্য বিভিন্ন পদে চাকুরী করে আসছেন। বাড়িতে বসেই তার স্ত্রী হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন জানান, “অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে গোপনে এই কমিটি করা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানতাম না।

কমিটির সদস্য খোরশেদ আলম জানান, “আমার দুই মেয়ে ওই মাদরাসায় পড়ালেখা করছে। একদিন অফিসে যাওয়ার পর আমাকে বলা হয় আমি অভিভাবক সদস্য, এখানে স্বাক্ষর করতে হবে। কিছু না বুঝেই স্বাক্ষর করি। পরে জানতে পারি এটি পরিকল্পিত একটি কৌশল। তাই আমি পদত্যাগ পত্র দিয়েছি।

মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন জানান, অধ্যক্ষের কক্ষের চাবি সভাপতির কাছে থাকে এবং অফিসের মূল্যবান কাগজপত্র তিনিই সংরক্ষণ করেন। গত ১৩ আগস্ট কমিটির সভা হয়েছে, সেগুলোর রেজুলেশন সভাপতির কাছে রয়েছে। কমিটি গঠন করা হয়েছে তবে সদস্যদের নামের তালিকাও ওনার কাছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এলাকাবাসীর দাবি, এ কমিটি অবৈধ ও অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় গঠিত। তারা অভিযোগের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে এলাকাবাসীর মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠনের আহবান জানান।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে ওলামালীগ নেতা মাদরাসা কমিটির সভাপতি, ৩ সদস্যের পদত্যাগ

SBN

SBN

শাহরাস্তিতে ওলামালীগ নেতা মাদরাসা কমিটির সভাপতি, ৩ সদস্যের পদত্যাগ

আপডেট সময় ১০:৩৬:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

চাঁদপুরের শাহরাস্তির বলশিদ মহিলা মডেল আলিম মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন চাঁদপুর জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। বিষয়টি জানাজানি হলে সভাপতির অব্যাহতি দাবি করে কমিটির ৩ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎসাহী সদস্য মনিরুজ্জামান, অভিভাবক সদস্য মো. খোরশেদ আলম ও সদস্য আয়েশা বেগম পদত্যাগ করেছেন।

জানা যায়, বিগত সময়ে বিভিন্ন সুবিধা ভোগের জন্য তিন দফা মাদরাসার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। মাদরাসাটির যাত্রাকালে নামকরণ করা হয় ফজিলতের নেছা মহিলা মাদ্রাসা। যা প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলামের মায়ের নামে নামকরণ হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশেষ সুবিধা আদায়ে আমিনুল ইসলাম ওই নামের আগে পরে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা মাদরাসা নামকরণ করেন। বর্তমান বলশিদ মডেল মহিলা আলিম মাদরাসা নামকরণ হলেও প্রধান ফটকে এখনো শোভা পাচ্ছে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা মাদরাসা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলছে, শিক্ষক মিলনায়তন খোলা থাকলেও উপস্থিতি অল্প।

মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক ঝর্না আক্তার জানান, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উপজেলায় মিটিংয়ে রয়েছেন আর অফিস সহকারী ছুটিতে। ঘোষিত কমিটির বিষয়ে আমি নিশ্চিত না। শুনেছি আমার নাম থাকতে পারে, তবে কমিটি আসলেই হয়েছে কিনা আমি জানি না।”

এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগকারী বাবুল হোসেন পাটোয়ারী জানান, মাদরাসাটির নাম তিন দফা পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমান ঘোষিত কমিটির সভাপতি একজন আওয়ামী লীগ নেতা, তিনি জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে তিনি এ মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। বিগত কয়েক বছর পূর্বে তিনি আহমদ নগর আবদুল আজিজ আলিম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা বলে তিনি অঘোষিত ভাবে দুটি মাদরাসার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তার স্ত্রী নাজমা বেগম মাদরাসার অফিস সহকারী। এছাড়াও তার পরিবারের ৫ সদস্য বিভিন্ন পদে চাকুরী করে আসছেন। বাড়িতে বসেই তার স্ত্রী হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন জানান, “অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে গোপনে এই কমিটি করা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানতাম না।

কমিটির সদস্য খোরশেদ আলম জানান, “আমার দুই মেয়ে ওই মাদরাসায় পড়ালেখা করছে। একদিন অফিসে যাওয়ার পর আমাকে বলা হয় আমি অভিভাবক সদস্য, এখানে স্বাক্ষর করতে হবে। কিছু না বুঝেই স্বাক্ষর করি। পরে জানতে পারি এটি পরিকল্পিত একটি কৌশল। তাই আমি পদত্যাগ পত্র দিয়েছি।

মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন জানান, অধ্যক্ষের কক্ষের চাবি সভাপতির কাছে থাকে এবং অফিসের মূল্যবান কাগজপত্র তিনিই সংরক্ষণ করেন। গত ১৩ আগস্ট কমিটির সভা হয়েছে, সেগুলোর রেজুলেশন সভাপতির কাছে রয়েছে। কমিটি গঠন করা হয়েছে তবে সদস্যদের নামের তালিকাও ওনার কাছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এলাকাবাসীর দাবি, এ কমিটি অবৈধ ও অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় গঠিত। তারা অভিযোগের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে এলাকাবাসীর মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠনের আহবান জানান।