ঢাকা ১১:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শ্রীনগরে ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ জাল ও ইলিশসহ ১৪ জনকে আটক Logo মায়ানমারে চারকালে বিপুল পরিমাণ সিমেন্ট, ঔষধ, আলকাতরা ও কোমল পানীয় সামগ্রী জব্দ Logo চাকসু নির্বাচনে ২৬ পদের ২৪টিতেই জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল Logo কুমিল্লায় সয়তানের নিঃস্বাস মুখে দিয়ে দেড় লাখ টাকা নিয়ে ২ প্রতারক উদাও Logo ৩ দফা দাবিতে বালিয়াডাঙ্গীতে শিক্ষকদের বিক্ষোভ সমাবেশ Logo খাদ্য, পানি ও জমিতে নারীর অধিকার রক্ষা করতে হবে – কৃষিবিদ শামীমুর রহমান Logo জুলাই সনদে পিআর যুক্ত করে নির্বাচনের আগেই গণভোটের দাবি ইসলামী আন্দোলনের Logo রাঙামাটিতে ভূমি কমিশন বৈঠক স্থগিতের দাবী পিসিসিপি’র Logo শাহরাস্তিতে যুবলীগ নেতা ও প্যানেল চেয়ারম্যান সোহাগ আটক Logo কুমিল্লা সরকারি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন

শাহরাস্তিতে ত্রিভুজ পরকীয়ার দ্বন্দ্বে আলমগীর হত্যা মামলার প্রধান আসামি তপন গ্রেফতার

মোঃ কামরুজ্জামান সেন্টুঃ

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে আলোচিত মাইক ম্যান আলমগীর হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি তাজুল ইসলাম তপনকে (৪৩) অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এর পূর্বে ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ খান কসাইবাড়ি এলাকা থেকে মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহরাস্তি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাসার।
তিনি আরও জানান, তপন ঘটনার পর থেকে সেখানে ভ্যান গাড়িতে জুতা বিক্রেতার ছদ্মবেশে অবস্থান করছিলো।

জানা যায়, তপন চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের খিতারপাড় গ্রামের শামছুল হকের পুত্র। সে এলাকায় একজন কুখ্যাত বখাটে হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

গত ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় উপজেলার মনিপুর গ্রামের একটি প্রবাসীর বাড়ির ছাদে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয় মো. আলমগীর (৩৬) নামের এক যুবককে।
নিহত আলমগীর একই গ্রামের বাসিন্দা ও পরকিয়া প্রেমিকা সোনিয়ার প্রতিবেশী। এলাকায় তিনি “মাইক ম্যান” হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এলাকার কারো মৃত্যু হলে জানাজার সংবাদ মাইকে প্রচার করতেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের পরপর পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে আলমগীরের মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে ছাদে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে দু’টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ, যার একটি ছিল তপনের। ওই সূত্র ধরে তদন্তে অগ্রগতি হয়।

ঘটনার রাতেই ওই বাড়ির মালিক আবুল হোসেন মানিকের স্ত্রী খোদেজা বেগম ও তার মেয়ে সোনিয়াকে আটক করে পুলিশ।
সোনিয়ার ২ দিনের রিমান্ডে আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য—আলমগীরের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল।
সোনিয়ার স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে, তপনের সঙ্গেও তার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং আলমগীর সেই সম্পর্কের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় তাকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।

ঘটনার পর থেকেই মামলার মূল হোতা তপন পলাতক ছিলেন। অবশেষে ৩ মাস পর প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ খান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

কচুয়া সার্কেলের (শাহরাস্তি – কচুয়া) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আঃ হাই জানান, “তপনকে গ্রেফতারের পর থানায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

আলমগীর হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকাবাসী ইতোমধ্যে মানববন্ধন করে তপনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। স্থানীয়ভাবে সোনিয়ার একাধিক পরকীয়া সম্পর্ক নিয়েও নানা আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে।

শাহরাস্তির এই আলোচিত হত্যা মামলায় মূল হোতা তপন গ্রেফতার হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে। তবে তদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এবং অন্যান্য জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের দাবি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান স্থানীয়রা।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীনগরে ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ জাল ও ইলিশসহ ১৪ জনকে আটক

SBN

SBN

শাহরাস্তিতে ত্রিভুজ পরকীয়ার দ্বন্দ্বে আলমগীর হত্যা মামলার প্রধান আসামি তপন গ্রেফতার

আপডেট সময় ০২:০৮:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

মোঃ কামরুজ্জামান সেন্টুঃ

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে আলোচিত মাইক ম্যান আলমগীর হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি তাজুল ইসলাম তপনকে (৪৩) অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এর পূর্বে ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ খান কসাইবাড়ি এলাকা থেকে মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহরাস্তি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাসার।
তিনি আরও জানান, তপন ঘটনার পর থেকে সেখানে ভ্যান গাড়িতে জুতা বিক্রেতার ছদ্মবেশে অবস্থান করছিলো।

জানা যায়, তপন চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের খিতারপাড় গ্রামের শামছুল হকের পুত্র। সে এলাকায় একজন কুখ্যাত বখাটে হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

গত ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় উপজেলার মনিপুর গ্রামের একটি প্রবাসীর বাড়ির ছাদে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয় মো. আলমগীর (৩৬) নামের এক যুবককে।
নিহত আলমগীর একই গ্রামের বাসিন্দা ও পরকিয়া প্রেমিকা সোনিয়ার প্রতিবেশী। এলাকায় তিনি “মাইক ম্যান” হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এলাকার কারো মৃত্যু হলে জানাজার সংবাদ মাইকে প্রচার করতেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের পরপর পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে আলমগীরের মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে ছাদে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে দু’টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ, যার একটি ছিল তপনের। ওই সূত্র ধরে তদন্তে অগ্রগতি হয়।

ঘটনার রাতেই ওই বাড়ির মালিক আবুল হোসেন মানিকের স্ত্রী খোদেজা বেগম ও তার মেয়ে সোনিয়াকে আটক করে পুলিশ।
সোনিয়ার ২ দিনের রিমান্ডে আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য—আলমগীরের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল।
সোনিয়ার স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে, তপনের সঙ্গেও তার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং আলমগীর সেই সম্পর্কের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় তাকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।

ঘটনার পর থেকেই মামলার মূল হোতা তপন পলাতক ছিলেন। অবশেষে ৩ মাস পর প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ খান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

কচুয়া সার্কেলের (শাহরাস্তি – কচুয়া) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আঃ হাই জানান, “তপনকে গ্রেফতারের পর থানায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

আলমগীর হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকাবাসী ইতোমধ্যে মানববন্ধন করে তপনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। স্থানীয়ভাবে সোনিয়ার একাধিক পরকীয়া সম্পর্ক নিয়েও নানা আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে।

শাহরাস্তির এই আলোচিত হত্যা মামলায় মূল হোতা তপন গ্রেফতার হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে। তবে তদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এবং অন্যান্য জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের দাবি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান স্থানীয়রা।