ঢাকা ০৯:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ইচ্ছে পূরণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo বিএনপি নেতা ফেরদৌস আলম মৃধা নিজস্ব অর্থায়নের বলদী গ্রামের বেহাল রাস্তা গুলো পূর্ণ সংস্কারের কাজ শুরু করেন Logo সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণ করে সিআইপি অ্যাওয়ার্ড পাওয়া জসিম উদ্দিনকে সংবর্ধনা Logo মুরাদনগরে খামারগ্রাম প্রবাসী সংগঠনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দোয়া মাহফিল Logo বুড়িচং বাকশীমূল স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত Logo খুলনায় যুবককে গুলি করে হত্যার চেষ্টা Logo সিলেট জেলা যুবদলের নেতা আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ Logo ফুলবাড়ীতে প্রি-পেইড মিটার বন্ধের দাবি Logo বরুড়ার দলুয়া তুলাগাও দাখিল মাদ্রাসার ৫৪ তম বার্ষিক বড় খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত Logo ফুলবাড়ীতে কানাহার ডাঙ্গা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

শীতে ত্বক ও পায়ের যত্ন

মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার:

ত্বক শরীরের একক বৃহত্তম অঙ্গ। পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে শরীরকে খাপ খাইয়ে স্বাভাবিক অবস্থা রক্ষা করা ত্বকের একটি প্রধান কাজ। এ জন্য ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। গ্রন্থি নিঃসৃত তেলের মাধ্যমে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা বজায় থাকে। শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ত্বকের স্বাভাবিক তেলের আস্তরণ শুষে নেয়। ফলে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হতে থাকে। বিশেষ করে একজিমা, সোরিয়াসিস, ইকথায়োসিস এবং অ্যালার্জিজনিত রোগে যারা ভুগে থাকেন তাদের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সুস্থদের এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ জন্য শীতে ত্বকের জন্য বিশেষ যত্নের প্রয়োজন।

গোসল:অনেকে শীতে গরম পানিতে গোসল করেন। এতে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে থাকে। কুসুম গরম পানিতে স্বল্প সময়ে গোসল শেষ করুন। গোসলে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষারীয় সাবান ব্যাবহার করুন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী সাবান নির্বাচনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। একজিমা, সোরিয়াসিস, ইকথাওসিস ইত্যাদি রোগে যারা ভুগে থাকেন, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অটামিল বা সি সল্ট বাথ নিতে পারেন।

ময়েশ্চারাইজার:কোনো রোগ না থাকলেও শীতে ত্বক স্বাভাবিক রাখতে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ময়েশ্চারাইজার ত্বকের নিঃসৃত তেল সংরক্ষণে সহায়তা করে এবং ত্বক মসৃণ রাখে। গোসলের পর পরই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো। ক্রিম, লোশন, জেল এমনকি সাবান হিসেবে ময়েশ্চারাইজার বাজারে পাওয়া যায়। এগুলো নির্বাচনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

পোশাক:টাইট ফিট এবং সিনথেটিক পোশাক ত্বককে আরও শুষ্ক ও রুক্ষ করে এবং অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। কাজেই আরামদায়ক এবং প্রাকৃতিক তন্তু দিয়ে তৈরি পোশাক পরিধান করুন। পলিয়েস্টার, লিলেন, নাইলন ইত্যাদি পরিহার করুন।

হিউমিডিফায়ার:ঘরে জলীয় বাষ্পের অনুপাত ঠিক রাখতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। এর মাধ্যমে রুমের জলীয় বাষ্প ৪০ থেকে ৬০ শতাংশে রাখুন। বিশেষ করে একজিমা, সোরিয়াসিস, ইকথাওসিস ইত্যাদি রোগে যারা ভুগে থাকেন তাদের জন্য হিউমিডিফায়ার বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে।

মনে রাখবেন, একজিমা, সোরিয়াসিস, ইকথাওসিস ইত্যাদি রোগে যারা ভুগছেন শীতে তাদের ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস, ভাইরাস ও পরজীবী জনিত ত্বকের সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

কাজেই শীতে ত্বকের যত্ন নিন। সর্বোপরি—পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন।খোলামেলা ও আলোকিত পরিবেশে থাকার চেষ্টা করুন।চিন্তা মুক্ত থাকুন এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

শীত এলেই পা ফাটা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় অনেকের। ফাটা পা দেখতেও বিশ্রী লাগে। তবে একটু সচেতন হয়ে যত্ন নিলে এই শীতেও পা থাকবে কোমল ও পরিষ্কার।

শীতের সময় পায়ের চামড়া ফাটা খুবই কমন সমস্যা। বিরক্তিকর এই ফাটা পায়ের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে যা করতে হবে:
ঘুমানোর আগে অবশ্যই পায়ে খানিক ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নেবেন। এতে পা নরম ও কোমল থাকবে। পা ঢাকা জুতা ব্যবহার করুন। বুট জুতো হলে আরও ভালো। এতে পাও ভালো থাকবে এবং ধুলা-ময়লাও লাগবে না।
এটি শীতে পায়ের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি।
অনেকেই মোজা পরতে চান না।
অন্তত শীতে পায়ে মোজা পরার অভ্যাস তৈরি করুন। বাজারে বেশ কিছু ডিজাইন ও রঙের মোজা পাওয়া যায়, পছন্দ করে কিনে নিন। প্রচুর পানি পান করুন, এতে আপনার ত্বক ভেতর থেকে সতেজ ও প্রাণবন্ত থাকবে। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে ও পা ময়েশ্চারাইজার লাগানোর আগে গরম পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন।

এছাড়াও এই শীতে মাসে অন্তত দু’দিন ঘরে পায়ের বিশেষ যত্ন নিন। প্রথমে নখে নেইল পলিশ থাকলে তুলে নিন।
নখে ক্রিম লাগিয়ে পাত্রে গরম পানিতে শ্যাম্পু, লবণ ও লেবুর রস মিশিয়ে তাতে পা ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। পা মুছে নিন।নখে ক্রিম দিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। সতর্কতার সঙ্গে নখের গোড়ায় জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে নিন। হাত-পায়ে ক্রিম ম্যাসাজের পর চালের গুঁড়া, চিনি, লেবুর রস মিশিয়ে স্ক্র্যাব দিয়ে ঘষে মৃত কোষ তুলে ফেলুন
> তারপর বাফার দিয়ে নখের ওপর লেগে থাকা ময়লা ঘষে পরিষ্কার করুন।মুলতানি মাটি মধু এবং গোলাপ জলের পেস্ট তৈরি করে পায়ে মেখে ১৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এবার পা মুছে ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগিয়ে নিন।

পা ফাটার কারণ: শুধু শীতেই নয়, প্রচণ্ড গরমেও পা ফেটে যায়। তেল বা ক্রিম লাগিয়ে পাকে ফাটার হাত থেকে আমরা বাঁচানোর চেষ্টা করি। কিন্তু কী কারণে পা ফাটে চলুন সেটা জেনে নেই-
১. খালি পায়ে ঘোরার ফলে পায়ে এক ধরনের ফাঙ্গাস তৈরি হয়। এই ফাঙ্গাসটাই ধীরে ধীরে বেড়ে পায়ের গোড়ালিতে ছড়ায়। আর এর ফলেই পা ফেটে যায়।
২. আমরা বাড়িতে সাধারণত ঘর পরিষ্কার করার জন্য যেসব ডিটার্জেন্ট বা সাবান ব্যবহার করি তা পায়ে লাগার ফলেও পা ফেটে যায়।
৩. বেশি সময় পানিতে থাকার ফলে।
৪. প্লাস্টিকের জুতা চপ্পল পরার ফলেও পা ফেটে যায়।
৫. অত্যধিক ওজন থাকার ফলে পায়ের ওপর অত্যধিক চাপ পড়ে, সে কারণেও পা ফেটে যায়।
৬. শরীরে ভিটামিন, আয়রন ও ক্যালসিয়ামের অভাব হলেও পা ফেটে যায়।
সুতরাং এসব বিষয় লক্ষ্য রেখে কারণগুলো এড়িয়ে চললেই পা ফাটা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

প্রতিকারের উপায়:
১. খুব ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় পা মোজা দিয়ে ঢেকে রাখুন।
২. ঘরের ভেতরে মেঝেতে স্যান্ডেল ব্যবহার করুন।
৩. শীতকালে গোড়ালি ঢাকা ও আরামদায়ক জুতা পরার চেষ্টা করুন।
৪. শীতকালীন বেশি বেশি শাকসবজি খান।
৫. শীতকালে অনেকেরই পানি পানের পরিমাণ কমে যায়। সেক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
৬. প্রতিদিন গোসল বা অজুর সময় পা ভেজানোর পর শুকনো তোয়ালে বা কাপড় দিয়ে ভালো করে মুছে নিন।
৭. গোড়ালি ও তালুতে পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন মাখুন।
৮. সপ্তাহে অন্তত এক দিন পায়ের বিশেষ যত্ন নিন।
৯. গামলায় লেবুর রসমিশ্রিত হালকা গরম পানিতে পা ভিজিয়ে পা ঘষে মৃত কোষ ফেলে দিন। লেবুর রসে যে অ্যাসিটিক অ্যাসিড আছে তা মৃত কোষ ঝরতে সাহায্য করবে। তারপর পা মুছে পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন লাগিয়ে নিন।
জটিলতা বেশি হলে বা সংক্রমণ হয়েছে মনে হলে চর্ম বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

লেখক: চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদ,শিক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মী

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইচ্ছে পূরণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

SBN

SBN

শীতে ত্বক ও পায়ের যত্ন

আপডেট সময় ১২:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৪

মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার:

ত্বক শরীরের একক বৃহত্তম অঙ্গ। পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে শরীরকে খাপ খাইয়ে স্বাভাবিক অবস্থা রক্ষা করা ত্বকের একটি প্রধান কাজ। এ জন্য ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। গ্রন্থি নিঃসৃত তেলের মাধ্যমে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা বজায় থাকে। শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ত্বকের স্বাভাবিক তেলের আস্তরণ শুষে নেয়। ফলে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হতে থাকে। বিশেষ করে একজিমা, সোরিয়াসিস, ইকথায়োসিস এবং অ্যালার্জিজনিত রোগে যারা ভুগে থাকেন তাদের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সুস্থদের এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ জন্য শীতে ত্বকের জন্য বিশেষ যত্নের প্রয়োজন।

গোসল:অনেকে শীতে গরম পানিতে গোসল করেন। এতে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে থাকে। কুসুম গরম পানিতে স্বল্প সময়ে গোসল শেষ করুন। গোসলে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষারীয় সাবান ব্যাবহার করুন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী সাবান নির্বাচনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। একজিমা, সোরিয়াসিস, ইকথাওসিস ইত্যাদি রোগে যারা ভুগে থাকেন, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অটামিল বা সি সল্ট বাথ নিতে পারেন।

ময়েশ্চারাইজার:কোনো রোগ না থাকলেও শীতে ত্বক স্বাভাবিক রাখতে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ময়েশ্চারাইজার ত্বকের নিঃসৃত তেল সংরক্ষণে সহায়তা করে এবং ত্বক মসৃণ রাখে। গোসলের পর পরই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো। ক্রিম, লোশন, জেল এমনকি সাবান হিসেবে ময়েশ্চারাইজার বাজারে পাওয়া যায়। এগুলো নির্বাচনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

পোশাক:টাইট ফিট এবং সিনথেটিক পোশাক ত্বককে আরও শুষ্ক ও রুক্ষ করে এবং অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। কাজেই আরামদায়ক এবং প্রাকৃতিক তন্তু দিয়ে তৈরি পোশাক পরিধান করুন। পলিয়েস্টার, লিলেন, নাইলন ইত্যাদি পরিহার করুন।

হিউমিডিফায়ার:ঘরে জলীয় বাষ্পের অনুপাত ঠিক রাখতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। এর মাধ্যমে রুমের জলীয় বাষ্প ৪০ থেকে ৬০ শতাংশে রাখুন। বিশেষ করে একজিমা, সোরিয়াসিস, ইকথাওসিস ইত্যাদি রোগে যারা ভুগে থাকেন তাদের জন্য হিউমিডিফায়ার বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে।

মনে রাখবেন, একজিমা, সোরিয়াসিস, ইকথাওসিস ইত্যাদি রোগে যারা ভুগছেন শীতে তাদের ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস, ভাইরাস ও পরজীবী জনিত ত্বকের সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

কাজেই শীতে ত্বকের যত্ন নিন। সর্বোপরি—পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন।খোলামেলা ও আলোকিত পরিবেশে থাকার চেষ্টা করুন।চিন্তা মুক্ত থাকুন এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

শীত এলেই পা ফাটা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় অনেকের। ফাটা পা দেখতেও বিশ্রী লাগে। তবে একটু সচেতন হয়ে যত্ন নিলে এই শীতেও পা থাকবে কোমল ও পরিষ্কার।

শীতের সময় পায়ের চামড়া ফাটা খুবই কমন সমস্যা। বিরক্তিকর এই ফাটা পায়ের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে যা করতে হবে:
ঘুমানোর আগে অবশ্যই পায়ে খানিক ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নেবেন। এতে পা নরম ও কোমল থাকবে। পা ঢাকা জুতা ব্যবহার করুন। বুট জুতো হলে আরও ভালো। এতে পাও ভালো থাকবে এবং ধুলা-ময়লাও লাগবে না।
এটি শীতে পায়ের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি।
অনেকেই মোজা পরতে চান না।
অন্তত শীতে পায়ে মোজা পরার অভ্যাস তৈরি করুন। বাজারে বেশ কিছু ডিজাইন ও রঙের মোজা পাওয়া যায়, পছন্দ করে কিনে নিন। প্রচুর পানি পান করুন, এতে আপনার ত্বক ভেতর থেকে সতেজ ও প্রাণবন্ত থাকবে। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে ও পা ময়েশ্চারাইজার লাগানোর আগে গরম পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন।

এছাড়াও এই শীতে মাসে অন্তত দু’দিন ঘরে পায়ের বিশেষ যত্ন নিন। প্রথমে নখে নেইল পলিশ থাকলে তুলে নিন।
নখে ক্রিম লাগিয়ে পাত্রে গরম পানিতে শ্যাম্পু, লবণ ও লেবুর রস মিশিয়ে তাতে পা ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। পা মুছে নিন।নখে ক্রিম দিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। সতর্কতার সঙ্গে নখের গোড়ায় জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে নিন। হাত-পায়ে ক্রিম ম্যাসাজের পর চালের গুঁড়া, চিনি, লেবুর রস মিশিয়ে স্ক্র্যাব দিয়ে ঘষে মৃত কোষ তুলে ফেলুন
> তারপর বাফার দিয়ে নখের ওপর লেগে থাকা ময়লা ঘষে পরিষ্কার করুন।মুলতানি মাটি মধু এবং গোলাপ জলের পেস্ট তৈরি করে পায়ে মেখে ১৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এবার পা মুছে ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগিয়ে নিন।

পা ফাটার কারণ: শুধু শীতেই নয়, প্রচণ্ড গরমেও পা ফেটে যায়। তেল বা ক্রিম লাগিয়ে পাকে ফাটার হাত থেকে আমরা বাঁচানোর চেষ্টা করি। কিন্তু কী কারণে পা ফাটে চলুন সেটা জেনে নেই-
১. খালি পায়ে ঘোরার ফলে পায়ে এক ধরনের ফাঙ্গাস তৈরি হয়। এই ফাঙ্গাসটাই ধীরে ধীরে বেড়ে পায়ের গোড়ালিতে ছড়ায়। আর এর ফলেই পা ফেটে যায়।
২. আমরা বাড়িতে সাধারণত ঘর পরিষ্কার করার জন্য যেসব ডিটার্জেন্ট বা সাবান ব্যবহার করি তা পায়ে লাগার ফলেও পা ফেটে যায়।
৩. বেশি সময় পানিতে থাকার ফলে।
৪. প্লাস্টিকের জুতা চপ্পল পরার ফলেও পা ফেটে যায়।
৫. অত্যধিক ওজন থাকার ফলে পায়ের ওপর অত্যধিক চাপ পড়ে, সে কারণেও পা ফেটে যায়।
৬. শরীরে ভিটামিন, আয়রন ও ক্যালসিয়ামের অভাব হলেও পা ফেটে যায়।
সুতরাং এসব বিষয় লক্ষ্য রেখে কারণগুলো এড়িয়ে চললেই পা ফাটা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

প্রতিকারের উপায়:
১. খুব ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় পা মোজা দিয়ে ঢেকে রাখুন।
২. ঘরের ভেতরে মেঝেতে স্যান্ডেল ব্যবহার করুন।
৩. শীতকালে গোড়ালি ঢাকা ও আরামদায়ক জুতা পরার চেষ্টা করুন।
৪. শীতকালীন বেশি বেশি শাকসবজি খান।
৫. শীতকালে অনেকেরই পানি পানের পরিমাণ কমে যায়। সেক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
৬. প্রতিদিন গোসল বা অজুর সময় পা ভেজানোর পর শুকনো তোয়ালে বা কাপড় দিয়ে ভালো করে মুছে নিন।
৭. গোড়ালি ও তালুতে পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন মাখুন।
৮. সপ্তাহে অন্তত এক দিন পায়ের বিশেষ যত্ন নিন।
৯. গামলায় লেবুর রসমিশ্রিত হালকা গরম পানিতে পা ভিজিয়ে পা ঘষে মৃত কোষ ফেলে দিন। লেবুর রসে যে অ্যাসিটিক অ্যাসিড আছে তা মৃত কোষ ঝরতে সাহায্য করবে। তারপর পা মুছে পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন লাগিয়ে নিন।
জটিলতা বেশি হলে বা সংক্রমণ হয়েছে মনে হলে চর্ম বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

লেখক: চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদ,শিক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মী