ঢাকা ১০:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আমতলীতে জামায়াতে ইসলামীর ভোট কেন্দ্র ভিত্তিক প্রতিনিধি সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo রূপসায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের শিবিরের সংবর্ধনা Logo নাঙ্গলকোটে অস্ত্রসহ যুবদলকর্মী আটক Logo মানুষ ইলিশের স্বাদ ভুলতে বসেছে Logo শেরপুরে শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ” ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিকতার অনন্য নিদর্শন Logo ফকিরহাটে চাঁদাবাজির অভিযোগ, দুই যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ Logo শেরপুরে চলমান খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo দৈনিক বরুড়া কন্ঠের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত Logo চান্দিনায় হত্যাকাণ্ডের চারদিন পর মামলা নিল পুলিশ Logo গাজীপুরে শহীদ সাংবাদিক তুহিন চত্ত্বর ঘোষণা

শেরপুরে শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ” ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিকতার অনন্য নিদর্শন

মোঃ বেলায়েত হোসেন, শেরপুর

শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের বুকে দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ। স্থাপত্যের অনন্য শৈল্পিক সৌন্দর্য আর ধর্মীয় আবেগের মেলবন্ধনে শতবর্ষ প্রাচীন এই মসজিদ আজও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।

স্থানীয় ইতিহাস বলছে, ইংরেজ শাসনের আগেই নির্মিত হয়েছিল এই মসজিদ। নামের রহস্য লুকিয়ে আছে এর বারোটি দরজায়। পূর্বে ৯টি, দক্ষিণে ২টি এবং উত্তরে ১টি। প্রথমে একতলা হলেও বর্তমানে তা রূপ নিয়েছে পাঁচতলায়। একই সঙ্গে প্রায় ৩-৪ হাজার মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করতে পারেন,যা নিঃসন্দেহে এক বিরল দৃষ্টান্ত।

মসজিদের পাশে রয়েছে বিস্তৃত ‘বড়দিঘী’, যা এর সৌন্দর্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে মসজিদটি একসময় মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৬০-এর দশকে জামালপুরের মাওলানা আজিজুল হক স্বপ্নে এর অবস্থান জানতে পারেন। এরপর প্রায় ১০ ফুট মাটি খুঁড়ে বেরিয়ে আসে এর দেয়াল। ১৯৬৩ সালে পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে আবারও ফিরে আসে ইতিহাসের এই অমূল্য নিদর্শন।

প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটে আসেন নামাজ আদায় ও ঐতিহ্যের টান অনুভব করতে। কেউ আসেন মানত পূরণের জন্য, কেউবা রোগমুক্তির আশায়। শুধু নামাজ নয়, এখানে মানুষের বিশ্বাস, আশা আর কৃতজ্ঞতার সমবেত প্রকাশ ঘটে।

এক মুসল্লি করিম জানান,
“অনেক দূর থেকে এসেছি শুধু এই মসজিদ দেখতে আর নামাজ আদায় করতে। ঐতিহাসিক জায়গায় নামাজ পড়তে পেরে সত্যিই গর্ব বোধ করছি।”

আরেকজন রহিম বলেন,
“এখানে এসে মনটা অদ্ভুত শান্ত হয়ে যায়। হাজারো মানুষ একসাথে নামাজ পড়তে পারে, এটা সত্যিই এক অনন্য অভিজ্ঞতা।”

মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. মাজহারুল ইসলাম জানান,
“এটি শুধু নামাজ পড়ার জায়গা নয়, বরং আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক। বর্তমানে সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ চলছে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এর গৌরব অনুভব করতে পারে।”

শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ কেবল একটি স্থাপনা নয়, এটি শেরপুরবাসীর গর্ব, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এটি মানুষকে একত্রিত করছে প্রার্থনার ছায়াতলে, জাগিয়ে তুলছে ঐতিহ্যের আবেগ আর আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আমতলীতে জামায়াতে ইসলামীর ভোট কেন্দ্র ভিত্তিক প্রতিনিধি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

SBN

SBN

শেরপুরে শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ” ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিকতার অনন্য নিদর্শন

আপডেট সময় ০৬:২৯:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

মোঃ বেলায়েত হোসেন, শেরপুর

শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের বুকে দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ। স্থাপত্যের অনন্য শৈল্পিক সৌন্দর্য আর ধর্মীয় আবেগের মেলবন্ধনে শতবর্ষ প্রাচীন এই মসজিদ আজও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।

স্থানীয় ইতিহাস বলছে, ইংরেজ শাসনের আগেই নির্মিত হয়েছিল এই মসজিদ। নামের রহস্য লুকিয়ে আছে এর বারোটি দরজায়। পূর্বে ৯টি, দক্ষিণে ২টি এবং উত্তরে ১টি। প্রথমে একতলা হলেও বর্তমানে তা রূপ নিয়েছে পাঁচতলায়। একই সঙ্গে প্রায় ৩-৪ হাজার মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করতে পারেন,যা নিঃসন্দেহে এক বিরল দৃষ্টান্ত।

মসজিদের পাশে রয়েছে বিস্তৃত ‘বড়দিঘী’, যা এর সৌন্দর্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে মসজিদটি একসময় মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৬০-এর দশকে জামালপুরের মাওলানা আজিজুল হক স্বপ্নে এর অবস্থান জানতে পারেন। এরপর প্রায় ১০ ফুট মাটি খুঁড়ে বেরিয়ে আসে এর দেয়াল। ১৯৬৩ সালে পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে আবারও ফিরে আসে ইতিহাসের এই অমূল্য নিদর্শন।

প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটে আসেন নামাজ আদায় ও ঐতিহ্যের টান অনুভব করতে। কেউ আসেন মানত পূরণের জন্য, কেউবা রোগমুক্তির আশায়। শুধু নামাজ নয়, এখানে মানুষের বিশ্বাস, আশা আর কৃতজ্ঞতার সমবেত প্রকাশ ঘটে।

এক মুসল্লি করিম জানান,
“অনেক দূর থেকে এসেছি শুধু এই মসজিদ দেখতে আর নামাজ আদায় করতে। ঐতিহাসিক জায়গায় নামাজ পড়তে পেরে সত্যিই গর্ব বোধ করছি।”

আরেকজন রহিম বলেন,
“এখানে এসে মনটা অদ্ভুত শান্ত হয়ে যায়। হাজারো মানুষ একসাথে নামাজ পড়তে পারে, এটা সত্যিই এক অনন্য অভিজ্ঞতা।”

মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. মাজহারুল ইসলাম জানান,
“এটি শুধু নামাজ পড়ার জায়গা নয়, বরং আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক। বর্তমানে সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ চলছে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এর গৌরব অনুভব করতে পারে।”

শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ কেবল একটি স্থাপনা নয়, এটি শেরপুরবাসীর গর্ব, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এটি মানুষকে একত্রিত করছে প্রার্থনার ছায়াতলে, জাগিয়ে তুলছে ঐতিহ্যের আবেগ আর আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধন।