
মো: নাজমুল হোসেন ইমন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নাটোর থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজার রুটের বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখেছেন বাস চালক শ্রমিক কর্মচারিরা। গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে তাদের ন্যায্য বেতনের দাবিতে তারা এই কর্মসূচি পালন করছেন। সকালে রাজশাহীর সিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেন দূরপাল্লার বাস চালক, হেলপার, সুপারভাইজারসহ সহায়ক কর্মচারিরা। তারা তাদের বেতনভাতা বাড়ানোর দাবি করেন।
এদিকে এসব রুটের দূরপাল্লার বাস শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন ও দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সোমবার সকাল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী দেশ ট্রাভেলস, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, গ্রামীণ ট্রাভেলস, হানিফ, হানিফ কেটিসি ও শ্যামলী পরিবহনের সকল বাস পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
দূরপাল্লার বাস চালক ও শ্রমিকরা আরও জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাতায়াতে একজন বাস চালককে ১ হাজার ৩৫০, সুপারভাইজারকে ৫৭০ এবং হেলপারকে ৫৩০ টাকা পারিশ্রমিক দিয়ে আসছেন বাস মালিকেরা। গত ১৫ বছর ধরে এই রুটের বাস চালক, শ্রমিক, কর্মচারিদের বেতন ও পারিশ্রমিক বাড়ানো হয়নি। দফায় দফায় বাস মালিকদের সঙ্গে আলোচনার পরও কোন সমাধান হয়নি। ফলে সোমবার ভোর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী-নাটোর-ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট-কক্সবাজারের মধ্যে চলাচলকারী সব গাড়ি বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছেন তারা। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মহাখালী রুটের একতা পরিবহনের বাস চলাচল করছে। একতার চালক শ্রমিক কর্মচারিরা এই ধর্মঘটে অংশ নেয়নি।
এদিকে দূরপাল্লার পরিবহন ধর্মঘটের ফলে বিপাকে পড়েছেন হাজারো যাত্রী। সকালে তারা গন্তব্যে যেতে সিরোইল বাস টার্মিনালে এসে দেখতে পান প্রধান বাস কোম্পানির সব কাউন্টার বন্ধ। ঢাকার উদ্দেশ্যে কোন বাস কোচ ছেড়ে যায়নি। তবে রাজশাহী অভ্যন্তরীণ ও আন্তঃজেলা রুটের লোকাল বাসগুলি চলাচল করছে। এর আগে একই দাবিতে গত ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর বাস চালক শ্রমিক কর্মচারিরা ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ রাখেন।
ঢাকাগামী যাত্রী মো: ফুহাদ আলম বলেন, জরুরি কাজে ঢাকায় যেতে হতো। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছি। বিকল্প গাড়ির ভাড়া দ্বিগুণ, সেটাও ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। যাত্রীদের এমন হয়রানি না করেও আন্দোলেন করা যেত। তাহলে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি জানান, এর আগে মালিকেরা দাবি পূরণের অঙ্গীকার করলেও দাবিগুলির সুরাহা হয়নি। এ কারণে ঢাকাগামী বাস সার্ভিসের চালক, শ্রমিক ও কর্মচারিরা পরিবহন সার্ভিস বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের দাবি দাওয়া পূরণ না হলে এই রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
বাস বন্ধের বিষয়টি নিয়ে চাঁপাইয়ের বাস কাউন্টারগুলোর কেউ কথা বলতে চাননি