ঢাকা ১১:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ; বাবার মরদেহ ২৩ ঘণ্টা আটকে রাখলো ছেলে Logo নীলফামারীতে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন Logo ঝিনাইদহে ব্যবসায়ী মুরাদ হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার Logo লালমনিরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে কু-প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ Logo ময়মনসিংহ-শেরপুর সীমান্তে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চোরাচালানী মালামাল আটক Logo চাঁদপুরে বিচারক হিসাবে যোগ দিলেন মোহাম্মদ কামাল হোসাইন Logo রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিলের দাবীতে নাগরিক পরিষদের Logo কুমিল্লার দুই সাংবাদিকের ৫ বছরের দুর্বিষহ হয়রানির অবসান Logo ব্রুনাইয়ে প্রবাসীদের ভোট নিবন্ধন কার্যক্রমের উদ্বোধন Logo ঝিনাইদহে ২৫’শ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ

সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ; বাবার মরদেহ ২৩ ঘণ্টা আটকে রাখলো ছেলে

মোঃ ইলিয়াস আলী, ঠাকুরগাঁও

সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল ৪ বোন ও ১ ভাইয়ের। ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায়। এ কারণে একমাত্র ছেলের কাছে আশ্রয় পায়নি বাবা তসলিম উদ্দীন (৭০)। বৃদ্ধ বয়সে তিনি ছিলেন মেয়ের বাড়িতে। সেখানে মারা যাওয়ার পর মরদেহ নিজ বাড়িতে দাফনের জন্য নিয়ে আসা হলে গ্রহণ করেননি ছেলে। অনুমতি না মেলায় কবর খুঁড়তে পারেনি আত্মীয়-স্বজনরা।

অবশেষে ২৩ ঘণ্টা পর সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় স্থানীয়দের উদ্যোগ ও থানা পুলিশের সহায়তায় দাফন হয়েছে মরদেহ। ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। তবে সম্পত্তির কারণে বাবার মরদেহ একা ফেলে রাখা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে।

এমনি এক ঘটনা ঘটেছে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের পশ্চিম সরলিয়া গ্রামে। একমাত্র ছেলে মহসিন আলী বাবার ভরণ পোষণ না করায় উপজেলায় মহিষমারী গ্রামে মেয়ে বিউটি আক্তারের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন বাবা। মেয়ে বিউটি আক্তারই বাবার দেখাশুনা এবং চিকিৎসা করাচ্ছিলেন।

গত রোববার সন্ধ্যায় বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান তসলিম উদ্দীন। আত্মীয়-স্বজনদের জানিয়ে রাতেই দাফন করার জন্য মরদেহ আনা হয় পশ্চিম সরলিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে। কিন্তু ছেলে মহসিন আলী বাবার মরদেহ বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। এরপর তসলিম উদ্দীনের মরদেহ স্থান পায় ভাইয়ের বাড়িতে বাড়ির বারান্দায়।

স্থানীয়রা জানান, মেয়েদের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার কারণে তসলিম উদ্দীনের ছেলে মহসিন আলী বাবার মৃত্যু স্বাভাবিক হয়নি অভিযোগ তুলে রোববার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরে মরদেহ দাফন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। স্থানীয়দের অনুরোধে মরদেহ নেওয়া হয় ছেলে বাড়িতে।

এ বিষয়ে মহসিন আলী বলেন, বাবা বোনের বাড়িতে মারা যাওয়ায় সন্দেহ হয়েছিল। এ কারণে থানায় অভিযোগ করেছি। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ আগের। এখানে সম্পত্তির কোনো বিষয় নয়। এখন আমরা সবাই আপোষ হয়ে গেছি।

দু্ওসুও ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হবিবুর রহমান বলেন, মৃত্যুর পরপরই জমি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ছেলে লাশ আটকে রাখে। পরে দু’পক্ষকে নিয়ে বসে মীমাংসা করা হয়। দুপুরের পর কবর খুঁড়ার অনুমতি দেয় মহসিন আলী। এরপরে বিকেল ৪টায় জানাজা শেষে তার বাবার দাফন করা হয়।

বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুরুল হুদা বলেন, এটি সম্পূর্ণ পারিবারিক সমস্যা। গতরাতে ছেলে একটি অভিযোগ দিয়েছিল। আজ কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং মৃত্যুর বিষয়ে সন্দেহ দূর হওয়ায় ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ; বাবার মরদেহ ২৩ ঘণ্টা আটকে রাখলো ছেলে

SBN

SBN

সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ; বাবার মরদেহ ২৩ ঘণ্টা আটকে রাখলো ছেলে

আপডেট সময় ১১:০০:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

মোঃ ইলিয়াস আলী, ঠাকুরগাঁও

সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল ৪ বোন ও ১ ভাইয়ের। ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায়। এ কারণে একমাত্র ছেলের কাছে আশ্রয় পায়নি বাবা তসলিম উদ্দীন (৭০)। বৃদ্ধ বয়সে তিনি ছিলেন মেয়ের বাড়িতে। সেখানে মারা যাওয়ার পর মরদেহ নিজ বাড়িতে দাফনের জন্য নিয়ে আসা হলে গ্রহণ করেননি ছেলে। অনুমতি না মেলায় কবর খুঁড়তে পারেনি আত্মীয়-স্বজনরা।

অবশেষে ২৩ ঘণ্টা পর সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় স্থানীয়দের উদ্যোগ ও থানা পুলিশের সহায়তায় দাফন হয়েছে মরদেহ। ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। তবে সম্পত্তির কারণে বাবার মরদেহ একা ফেলে রাখা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে।

এমনি এক ঘটনা ঘটেছে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের পশ্চিম সরলিয়া গ্রামে। একমাত্র ছেলে মহসিন আলী বাবার ভরণ পোষণ না করায় উপজেলায় মহিষমারী গ্রামে মেয়ে বিউটি আক্তারের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন বাবা। মেয়ে বিউটি আক্তারই বাবার দেখাশুনা এবং চিকিৎসা করাচ্ছিলেন।

গত রোববার সন্ধ্যায় বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান তসলিম উদ্দীন। আত্মীয়-স্বজনদের জানিয়ে রাতেই দাফন করার জন্য মরদেহ আনা হয় পশ্চিম সরলিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে। কিন্তু ছেলে মহসিন আলী বাবার মরদেহ বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। এরপর তসলিম উদ্দীনের মরদেহ স্থান পায় ভাইয়ের বাড়িতে বাড়ির বারান্দায়।

স্থানীয়রা জানান, মেয়েদের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার কারণে তসলিম উদ্দীনের ছেলে মহসিন আলী বাবার মৃত্যু স্বাভাবিক হয়নি অভিযোগ তুলে রোববার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরে মরদেহ দাফন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। স্থানীয়দের অনুরোধে মরদেহ নেওয়া হয় ছেলে বাড়িতে।

এ বিষয়ে মহসিন আলী বলেন, বাবা বোনের বাড়িতে মারা যাওয়ায় সন্দেহ হয়েছিল। এ কারণে থানায় অভিযোগ করেছি। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ আগের। এখানে সম্পত্তির কোনো বিষয় নয়। এখন আমরা সবাই আপোষ হয়ে গেছি।

দু্ওসুও ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হবিবুর রহমান বলেন, মৃত্যুর পরপরই জমি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ছেলে লাশ আটকে রাখে। পরে দু’পক্ষকে নিয়ে বসে মীমাংসা করা হয়। দুপুরের পর কবর খুঁড়ার অনুমতি দেয় মহসিন আলী। এরপরে বিকেল ৪টায় জানাজা শেষে তার বাবার দাফন করা হয়।

বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুরুল হুদা বলেন, এটি সম্পূর্ণ পারিবারিক সমস্যা। গতরাতে ছেলে একটি অভিযোগ দিয়েছিল। আজ কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং মৃত্যুর বিষয়ে সন্দেহ দূর হওয়ায় ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।