
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ঢাকা সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলের বিশ্বরোড মোড়ে গত রোববার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন খাঁটিহাতা হাইওয়ে পুলিশ।
পথচারীদের যাতায়াত ও সড়কের যানজট নিরসনের লক্ষেই এই অভিযান চালানো হয়। স্থানীয়রা এই অভিযান কে সাধুবাদ জানালেও তাদের প্রশ্ন হাইওয়ে পুলিশের উচ্ছেদ অভিযান শুধু মাত্র সড়কের পশ্চিম পাশের অংশে কেন?
“সড়কের পশ্চিম পাশে কেন উচ্ছেদ অভিযান, পূর্ব পাশে কেন নয়”পূর্ব পাশে সওজ’র বিশাল জায়গা দখল করে চাঁদা আদায় করছেন প্রভাবশালী একটি মহল নিয়মিত। ওই দখলদারদের উচ্ছেদ না করার কারণ টা কী? এইটা স্থানীয়দের প্রশ্ন।
স্থানীয়রা জানায়, সরাইলের বিশ্বরোড মোড়টি প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেটের কব্জায় বন্দি রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ। ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই সওজ’র জায়গা দখল করে অস্থায়ী মালিক বনে আছেন। তাদেরকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অগ্রিম দিয়ে নিজের টাকায় ওই জাগায় অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে বসেন দোকানীরা। পরে মালিককে প্রতিদিন সকালে অথবা সন্ধ্যায় ৩০০-৫০০ টাকা দিতে হয়। আবার কিছু দখলদার নিজের দোকানের সামনে সওজের ১০০/১৫০ ফুট দূরত্ব নিজের দাবী করে ভাড়া দেন। ওই সব দোকানিকে দৈনিক ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়।
খাঁটিহাতা গ্রামের এক কথিত যুবলীগ নেতা এ দখল বানিজ্যের শীর্ষে রয়েছেন। বিশেষ কারণে হাইওয়ে পুলিশের সাথে তার গভীর সখ্যতা রয়েছে বলে জানা যায়। এমনই দখল বানিজ্য চলছে বিশ্বরোড মোড়ের পশ্চিম পাশেও।
পুলিশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ওইসব দখলদার সিন্ডিকেটের সদস্যদের বিশেষ সহায়তার বিষয়টিও চাউর রয়েছে স্থানীয়দের মুখে মুখে।
বেশ কিছু দিন আগেও হাইওয়ে পুলিশ বিশ্বরোড মোড়ের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চন্দ্র বিশ্বাসের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়। রোববারের উচ্ছেদ অভিযানটি শুধু বিশ্বরোড মোড়ের পশ্চিম পাশে হয়েছে। পূর্ব পাশে সিএনজি স্টেন্ড ও সওজের বিশাল জায়গা দখলে নিয়ে জামানত আর দৈনিক চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। ফলে সিএনজি গুলোকে মহাসড়কের উপরে দাঁড়িয়ে যাত্রী নিতে হচ্ছে। এই অবস্থা এক যুগেরও অধিক সময় ধরে চলছে।
এর আগের অভিযানেও সেখানকার অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করেননি। পূর্ব পাশের বিশাল অংশের দখলদাররা বারবার উচ্ছেদের আওতায় না আসার কারণ কী?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ি বলেন, জানি জায়গাটি সওজের। কর্তৃপক্ষ জায়গাটি অনেক টাকা খরচ করে পাকা করে দিয়েছে সিএনজি ষ্ট্যান্ডের জন্য। কিন্তু এখানকার কিছু পরিস্কার কাপড় পরা লোক তাদের দোকোনের সামনে থেকে মোড় পর্যন্ত ভাড়া দিয়ে রেখেছেন।
ব্যবসা না হলেও তাদেরকে দৈনিক গুনতে হয় ৩০০-৪০০ টাকা। কাউকে চাঁদা নেয়ার বিষয়টি জানালেও ভয়ে থাকতে হয় উঠে যাওয়ার। হাইওয়ে পুলিশের সাথেও তাদের ভাল সম্পর্ক। সকলকে দিয়েই তারা বিনা পয়সায় সওজের জায়গা দেখিয়ে বাণিজ্য করছেন।
খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চন্দ্র বিশ্বাস কয়েকটি গ্রুপ মিলে সেখানে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, শুধু কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্য নয়। আরও কয়েকজন তাদের দোকানের সামনের যতটুকু দেখা যায় ততটুকু জায়গায় দোকানী বসিয়ে টাকা উত্তোলন করে। শুধু পশ্চিম পাশে নয় আমরা পূর্ব পাশেও উচ্ছেদ করেছি। আমরা ডিসি স্যারের সাথে কথা বলেছি ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়ে অভিযান করে ষ্ট্যান্ডসহ সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করব।