সম্প্রতি গোয়া ক্রনিকলসহ কিছু ভারতীয় গণমাধ্যমে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবর অনুসারে, উত্তর-পূর্ব ভারতে একটি ‘নতুন রাষ্ট্র’ গড়ার পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ।
উত্তর-পূর্ব ভারতের জটিল ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও জাতিগত সমস্যা রয়েছে। ক্রমাগত দাঙ্গা ও সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে, ভারতীয় গণমাধ্যমের বিশ্লেষণ হচ্ছে, সিআইএ-র পরিকল্পনা সফল হলে, উত্তর-পূর্ব ভারতে অস্থিরতা বাড়াবে এবং ভারতের জন্য কৌশলগত চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে।
কেন ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে সিআইএ-র এমন পরিকল্পনা? প্রকৃতপক্ষে, ধর্মীয় সংঘাত ভারতীয় সমাজে বিভাজনের একটি প্রধান কারণ। আর এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ও করছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু লোক এই বিষয়টিকে হাইপ করে চলেছে। এসব খবরের মধ্যে বার বার ভারতের মণিপুর রাজ্যের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে।
গত বছরের মে মাসে মণিপুরে ধর্মীয় সংঘাত বেড়ে যায়। এর ফলে দুই মাসে ১৪০ জনেরও বেশি লোক মারা যায় এবং ৫০ হাজারেরও বেশি লোক গৃহহারা হয়। একই সাথে, এই অঞ্চলের “স্বাধীনতা” পক্ষে কণ্ঠস্বর আরও জোরালো হচ্ছে।
মে মাসে, মণিপুর সম্পর্কে একটি বড় মিথ্যা তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যায়। এ ধরনের মিথ্যা তথ্য এ অঞ্চলের বিভিন্ন জাতি ও ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্বের জন্ম দেয়।
তদন্তের পর দেখা যায় যে, গত এক বছরে ৩০৬৭৯টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট এ কাজে জড়িত ছিল। প্রযুক্তিগত তদন্তের পর বোঝা যায়, এর মধ্যে ২৭২০টি রোবট অ্যাকাউন্ট। এর পেছনে সিআইএ-র হাত রয়েছে।
এই প্রক্রিয়ায়, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন প্রথমে ভারতের কিছু ধর্মীয় গোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন “প্রমাণ” করে দীর্ঘ সময়ের জন্য তথাকথিত তদন্ত-প্রতিবেদন জারি করে। তারপরে, কিছু আমেরিকান সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট “মাইক্রোফোন” হিসাবে কাজ করে, যখন আমেরিকান মিডিয়া এই বিষয়গুলোকে হাইপ করতে থাকে এবং প্রকাশনার জন্য বিশেষভাবে কিছু সংবেদনশীল নোড নির্বাচন করে।
সংঘাত তীব্র হওয়ার পর, “স্বাধীনতা” এবং “জাতি গঠন” “অবশ্যই” যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী ধাপ হয়।
বস্তুত, ৭০ বছরেরও বেশি সময় আগে, দক্ষিণ এশিয়ায় তার প্রভাব বিস্তারের জন্য, যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপকভাবে ভারতে নিজের অবস্থান শক্ত করার কাজ করা শুরু করেছিল।
তবে, ভারতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে অনেক অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় আছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ভারত কিছু আন্তর্জাতিক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সম্পূর্ণভাবে মান্য করেনি, যা যুক্তরাষ্ট্রকে ভারতের প্রতি অসন্তুষ্ট করে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তা এবং মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্কও এই মর্মে সন্দেহ প্রকাশ করছেন যে, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের একটি নির্ভরযোগ্য মিত্রের ভূমিকা পালন করতে পারে কি না।
সূত্র: শুয়েই ফেই ফেই, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।