মোঃ কামরুজ্জামান সেন্টু
চাঁদপুরের শাহরাস্তির সূয়াপাড়া জি.কে (গোলাম কিবরিয়া) উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য নির্বাচনে অনিয়ম ও সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য অসদুপায় অবলম্বন করে ৩ অভিভাবক সদস্যকে কমিটিতে বহাল রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ২ অভিভাবক সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিভাবক সদস্য আহসান হাবীব ও মো. জামাল হোসেনের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিভাবক সদস্য হিসেবে নির্বাচনী তফসিলে মনোনয়ন ফর্ম ফি বাবদ নির্দিষ্ট কোন টাকার পরিমান উল্লেখ না করে প্রধান শিক্ষক রেজুলেশন অনুযায়ী অভিভাবক সদস্যদের কাছ থেকে মনোনয়ন ফি বাবদ অফেরৎ যোগ্য ১০ হাজার টাকা আদায় করেন।
বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে অভিভাবক সদস্যদের মনোনয়ন ফি ১৫’শ থেকে ২ হাজার টাকা ধার্য করা হলেও তৎকালীন কমিটি তাদের অনুগত কয়েকজন অভিভাবককে অন্তর্ভুক্ত করে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার জন্য অসদ উদ্দেশ্যে মনোনয়ন ফি ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করেন। এক্ষেত্রে এলাকার সাধারণ অভিভাবকগণ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত মনোনয়ন ফি’র কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেনি।
জানা যায়, নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা তৎকালীন প্রিজাইডিং অফিসার মো. শাহজাহান গত ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখ ৯ সদস্যের মনোনয়ন পত্র জমা দেখালেও মনোনয়ন বাবদ ৯০ হাজার টাকার জমা রশিদ যাচাই না করে ওই ৯ সদস্যকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আক্তার হোসেন জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি মোহাম্মদ মনির হোসেন মিরণ’র নির্দেশে অভিভাবক জাফর আহমেদ, মাজহারুল হক মিঠু ও জাকিয়া সুলতানার মনোনয়ন সংগ্রহ করা হয়। তাদের ৩ জনের মনোনয়ন ফি বাবদ ৩০ হাজার টাকা প্রতিষ্ঠানের তহবিলে জমা করার কথা থাকলেও তা জমা হয়নি।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদ্য অপসারিত সভাপতি মোহাম্মদ মনির হোসেন মিরণ জানান, অভিভাবক সদস্যদের মনোনয়ন জমা নেওয়া, মনোনয়ন ফি বাবদ টাকা সংগ্রহের দায়িত্ব সদস্য সচিব তথা প্রধান শিক্ষকের। তিনি টাকা নিয়েছেন কিনা সেটা তিনিই ভালো বলতে পারবেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।
অভিযুক্ত অভিভাবক সদস্য জাফর আহমেদ জানান, আমরা ৩ জন অভিভাবক সদস্য হতে আগ্রহী ছিলাম না। সভাপতি মোহাম্মদ মনির হোসেন মিরণ আমাদের ৩ জনকে সদস্য হতে অনুরোধ করেন। আমাদের মনোনয়ন বাবদ টাকা তিনি নিজেই পরিশোধ করেন বলে জানিয়েছেন।
আরেক অভিভাবক সদস্য মাজহারুল হক মিঠু জানান, আমরা জানি আমাদের মনোনয়ন ফি’র টাকা সভাপতি সাহেব প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক টাকা না নিয়ে কেন আমদেরকে বৈধ প্রার্থী ঘোষণা করেছেন এটা তার বিষয়। তিনি কেন টাকা জমা নেননি সে বিষয়ে আমরা কিছুই বলতে পারবো না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়াসির আরাফাত জানান, টাকা জমা না করেই যারা অভিভাবক সদস্য হয়েছে তাদের বলেছি টাকা স্কুল ফান্ডে জমা করে দিতে। তখন কেন টাকা জমা হয়নি এ বিষয়ে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।