
শাহিন আলম আশিক
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর যে নতুন, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন তরুণ প্রজন্ম দেখেছিল, সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সেই স্বপ্নকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছে। জনগণ ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছিল একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র এবং আইনের শাসনের প্রত্যাশায়। কিন্তু আজ সেই প্রত্যাশা চরমভাবে ম্লান।
রাজশাহীর তানোর থানায় একটি ছোট্ট শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু এবং তাকে জীবিত উদ্ধারে রাষ্ট্রের চরম ব্যর্থতা প্রমাণ করে যে, সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা আজও কতটা ভঙ্গুর। একটি রাষ্ট্র তার সবচেয়ে দুর্বল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে, তা রাষ্ট্রীয় সংবেদনশীলতা ও নিয়ন্ত্রণের অভাবকেই তুলে ধরে।
পাশাপাশি, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী হাদীর ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করার ন্যাক্কারজনক আক্রমণ দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। ফ্যাসিবাদমুক্তির পরেও একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারা প্রমাণ করে যে, রাজনৈতিক সহিংসতা এবং অস্থিতিশীলতা এখনও বিদ্যমান।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের সম্মিলিত সংগ্রাম।
কিন্তু এই ঘটনাগুলো দেখিয়ে দিল—মানুষের নিরাপত্তা নেই; রাষ্ট্র একটি শিশুকে জীবিত উদ্ধার করতে পারে না, একজন রাজনৈতিক কর্মীকে নিরাপত্তা দিতে পারে না। নতুন সরকারের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা এবং গণঅভ্যুত্থানের অর্জন উভয়ই প্রশ্নের মুখে।
এই স্বপ্নভঙ্গ রোধ করতে সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে গণঅভ্যুত্থানের মূল চেতনাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে: জিরো টলারেন্স নীতি: তানোরের শিশু মৃত্যু ও হাদীর ওপর হামলার ঘটনায় দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করে কঠোর জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা।
নিরাপত্তা পুনর্গঠন: রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে নাগরিকদের, বিশেষ করে দুর্বল এবং রাজনৈতিক কর্মীদের জন্য, সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সরকারের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা এবং দৃঢ় নিয়ন্ত্রণই পারে স্বপ্নভঙ্গের এই প্রতিচ্ছবিকে মুছে ফেলে একটি স্থিতিশীল ও নিরাপদ বাংলাদেশের দিকে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। জনগণের আস্থা এবং গণঅভ্যুত্থানের অর্জন রক্ষা করাই এখন সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি।
মুক্তির লড়াই ডেস্ক : 























