
নাহিদ জামান,
খুলনা প্রতিনিধিঃ
খুলনা শহরের প্রতিটি হাসপাতাল ব্যক্তিগত ডাক্তারের চেম্বারসহ প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরে দেখা যায় কর্তৃপক্ষের বিধিনিষেধ অমান্য করে অফিসিয়াল সময়ে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিগন ডাক্তারের চেম্বারে ভীড় জমিয়ে রাখছেন। তাদের অনাকাংক্ষিত এই ভীড়ের কারণে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা মারাত্বক বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দিনভর মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের দখলে থাকে খুলনা সদর হাসপাতাল খুলনা আবু নাসের বিষেশাহিত হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল হাসপাতাল সহ প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সকাল থেকেই তারা হাসপাতালের চিকিৎসকদের চেম্বার ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে অবাধ বিচরণ করে থাকেন। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে, হাসপাতালের ভেতরে ডাক্তারদের চেম্বারের সামনে অবস্থান নিয়ে তারা রোগীদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাহেঁচড়া করে থাকেন। ব্যবস্থাপত্র ছবি তোলেন, দেখেন কোন কোম্পানির ঔষধ লেখা হয়েছে। এসময় বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির জেলা প্রতিনিধিরাও মোটরসাইকেল নিয়ে অবস্থান করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। হঠাৎ সাংবাদিক এর উপস্থিতি দেখে সটকে পড়ে রিপ্রেজেন্টেটিভরা। এদিকে হাসপাতালের সন্নিকটে অবস্থিত চার থেকে পাঁচটি প্রাইভেট ক্লিনিকের কিছু দালাল নিজেদের মোবাইল নম্বর দিয়ে রোগী বা তার স্বজনদের বিভিন্ন ক্লিনিক বা ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেন এবং অনেকটা বাধ্য করেন তাদের নির্দিষ্ট ক্লিনিকে পরীক্ষা নীরিক্ষা করানোর কথা বলে নিয়ে যান। আজ ২৬ শে সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক কাছে শিশুদের চিকিৎসা বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হয়নি চিকিৎসক। আছিয়া বেগম (৩২) নামে এক রুগীর অভিভাবক বলেন, ডাক্তার রুগী দেখবে কোন সময়,ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলতেই শেষ হয় না। কখন ডাক্তার রোগী দেখে ওষুধ লিখে দিবে। সরকারের কাজের কাজ কিছুই হয়না, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন, কি করব ভাই এম,এ পাশ করেও সরকারি চাকুরী সোনার হরিণ তাই বাধ্য হয়েই কোম্পানির দালালি করছি। এ ব্যাপারে দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা হাসপাতালের ডাক্তারের চেম্বারে কোন প্রকার ভিজিট করতে পারবে না। সপ্তাহে দুই দিন রবিবার- সোমবারে ভিজিট করতে পারে। এই বিধি নিষেধ যদি কোন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি অমান্য করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অথচ রুগীদের অভিযোগগের ফলে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় এটা ডাক্তার সাহেব এর চেম্বার এর দরজা। এরা রোগি নয়, তবে রোগীকে ঔষধ দেওয়ার জন্য ডাক্তারকে ব্যাবহার করতে লাইন ধরে অপেক্ষায় আছে। হাসপাতালগুলোতে যেখানে রুগীর সিরিয়াল থাকার কথা, সেখানে দেখা যায় ঔষধ কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টটেটিভদের সিরিয়াল। আর ডাক্তার সাহেবরা যত ঔষধ লিখবে তত বেশি কমিশন। যেখানে রুগীরে এক রকমের ঔষধ দিলে ভালো হয়ে যাবে সেখানে দেওয়া হচ্ছে কয়েক রকমের ঔষধ। এ যেন এক মহামারি ব্যবসা। দাকোপের বাজুয়া ইউনিয়নের চাঁদপাড়া গ্রামের সুপদ মন্ডল বলেন বাংলাদেশের ডাক্তারদের কাছে রুগী গেলে এক বস্তা ঔষধ ধরিয়ে দেওয়া হয়। যা খেতে খেতে রোগীর অবস্থা কাহিল হয়ে যায় অথচ কয়েক মাস আগে আমি ভারতে গিয়ে চিকিৎসা হয়ে আসলাম ডাক্তার আমার ঔষধের পিকসিকশন দেখে একটা মুচকি হাসি দিলেন আমার দিকে তাকিয়ে। তারপর সব ঔষধ খেতে মানা করে তিনি মাত্র দুইটি ঔষধের নাম লিখে দিয়ে বললেন এই ঔষধ দুইটা খাও তোমার রোগ ভালো হয়ে যাবে আর পারলে তিন মাস পরে এসে একবার দেখিয়ে যাবে। তাই আমাদের দেশের কথা আর কি বলবো ডাক্তার যদি সকল কোম্পানির রিপ্রেজেন্টটেটিভদের মন রক্ষা করে ঔষধ লেখে তাহলে রোগীর অবস্থা কি হবে একবার ভেবে দেখুনতো। তাই সময় থাকতে এদের প্রতিহত করার জন্য এলাকার সুধীসমাজের জোড় দাবি সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে।
মুক্তির লড়াই ডেস্ক : 



























