ঢাকা ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo গুলশানে র‍্যাবের ক্যাশিয়ার শাহ আলমের ইস্পায় গড়ে তুলেছে অপরাধের আখড়া Logo বুড়িচংয়ে বিভিন্ন স্থানে বৈশাখী মেলায় চলছে জুয়ার আসর Logo লালমনিরহাটে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন Logo স্লিপের অর্থ ছাড় করানোর নামে ঘুষের টাকা আদায়ের অভিযোগ Logo ফুলবাড়ীতে বিএনপি’র মিছিলে ককটেল হামলা মামলায় আ.লীগের তিন নেতা গ্রেপ্তার Logo ফুলবাড়ী সীমান্ত পথে অবৈধভাবে ভারতে অনুপবেশের সময় স্বামী-স্ত্রী আটক Logo ফুলবাড়ীতে ৪ আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার Logo নার্সিং শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি স্বীকৃতির দাবিতে রাঙামাটিতে কর্মসূচি Logo গাইবান্ধায় ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা Logo চট্টগ্রামের আগ্নেয়াস্ত্র ও ইয়াবাসহ মাদক কারবারীকে আটক

স্লিপের অর্থ ছাড় করানোর নামে ঘুষের টাকা আদায়ের অভিযোগ

শাহিনুর রহমান পিন্টু, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ”বিদ্যালয় পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা (স্লিপ)” ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম কিস্তির বরাদ্ধকৃত অর্থ ছাড় করা বাবদ বিদ্যালয় প্রতি ২০০টাকা করে মোট ৩০ হাজার ঘুষের টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। ১৭ এপ্রিল উপজেলার ১৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সকল প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাগণের অংশগ্রহনে মাসিক সমন্বয় সভায় ঘোষণা দিয়ে হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে অর্থ ছাড় করানো বাবদ উক্ত টাকা আদায় করা হয়।

ক্লাস্টার ভিত্তিক নির্ধারিত শিক্ষকগণ ঘুষের এই টাকা আদায় করেন বলে জানা যায়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, মার্চ মাসের ১৯ তারিখ প্রতিটি বিদ্যালয় স্লিপের প্রথম কিস্তির টাকা পায়। হিসাব রক্ষণ অফিসের সাথে শিক্ষক সমিতির নেতাদের কথা হলে তারা নাকি প্রতিটি বিদ্যালয়ের আলাদা আলাদা অর্থ ছাড় করানোর প্রস্তাব দেয়। সেপথে না হেটে শিক্ষক সমিতির নেতাদের সাথে দেনদরবারের মাধ্যমে সে সময় অর্থ ছাড় করান হয়।

এ কারনে ওই অফিসে দেওয়ার জন্য ঘুষের টাকা তোলা হয়েছে।গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মতিউর রহমান মানিক, বলরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন মন্ডল, বড় সিমলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম, ভাতঘরা জটার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, সমসের নগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাবলু মিয়া, মালিয়াট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান ফিরোজসহ আরো কয়েকজন দ্বায়িত্ব নিয়ে উক্ত টাকা আদায় করেন বলেও তারা জানান। স্লিপের অর্থ ছাড় করার জন্য ঘুষের টাকা আদায়ের তথ্য প্রমাণ ইতিমধ্যে প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে।

জানা যায়,শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনুপাতে বিদ্যালয় ভিত্তিক স্লিপের বরাদ্দ নির্ধারিত হয় সর্বোচ্চ ৫০ জন শিক্ষার্থী হলে ৩৫২৫৩.১৯, ৫০% হারে প্রথম কিস্তি ১৭৬২৬.৫৯ টাকা। ৫১-৩০০ শিক্ষার্থী হলে ৭০৫০৬.৩৮,৫০% হারে প্রথম কিস্তি ৩৫২৫৩.১৯ টাকা। ৩০১-৬০০ শিক্ষার্থী হলে ১০৫৭৫৯.৫৮ এর ৫০% হারে প্রথম কিস্তি ৫২৮৭৯.৭৯ টাকা। ৬০১-১০০০ শিক্ষার্থী হলে ১৪১০১২.৭৭ এর ৫০% হারে প্রথম কিস্তি ৭০৫০৬. ৩৮ টাকা । আর ১০০০ এর অধিক হলে ১৭৬২৬৫.৯৬ এর প্রথম কিস্তি ৮৮১৩২.৯ টাকা। এই হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলার ৫০% হারে প্রথম কিস্তি ৫৩ লাখ ৭৬ হাজার ১১১ টাকা ছাড় করা হয়।

বাংলাদেশ প্রাইমারি শিক্ষক সমিতির কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি দুলালমুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিহার সুলতানা হিসাব রক্ষণ অফিসে ঘুষ দেওয়ার জন্য অর্থ আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন,সাক্ষাতে কথা বলব। উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন বলেন, স্লিপের ফাইল আমি ছেড়ে দিয়েছি। আমার অফিসে উৎকোচ হিসেবে কোন অর্থ গ্রহণ করা হয় না। কেউ যদি আমার অফিসের নামে টাকা তোলে তাহলে তার দায়-দায়িত্ব তাদের নিতে হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.মাসুদুুর রহমান এর আহবানে মাসিক সমন্বয় সভায় স্লিপের অর্থ ছাড়ের জন্য ঘুষের টাকা আদায়ের ব্যাপারে তার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন,মিটিং এ আছি।পরে কথা হবে। ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অনন্দ কিশোর সাহা বলেন,স্লিপের ফাইল রেডি করে স্ব স্ব স্কুলকে দিয়ে দেবে। পরবর্তীতে তারা হিসাব রক্ষণ কার্যালয় থেকে ফাইল ছাড় করিয়ে নেবে। এখানে টাকা তোলার তো কোন সুযোগ নেই। ব্যাপারটি আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

গুলশানে র‍্যাবের ক্যাশিয়ার শাহ আলমের ইস্পায় গড়ে তুলেছে অপরাধের আখড়া

SBN

SBN

স্লিপের অর্থ ছাড় করানোর নামে ঘুষের টাকা আদায়ের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৭:০৯:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

শাহিনুর রহমান পিন্টু, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ”বিদ্যালয় পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা (স্লিপ)” ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম কিস্তির বরাদ্ধকৃত অর্থ ছাড় করা বাবদ বিদ্যালয় প্রতি ২০০টাকা করে মোট ৩০ হাজার ঘুষের টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। ১৭ এপ্রিল উপজেলার ১৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সকল প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাগণের অংশগ্রহনে মাসিক সমন্বয় সভায় ঘোষণা দিয়ে হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে অর্থ ছাড় করানো বাবদ উক্ত টাকা আদায় করা হয়।

ক্লাস্টার ভিত্তিক নির্ধারিত শিক্ষকগণ ঘুষের এই টাকা আদায় করেন বলে জানা যায়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, মার্চ মাসের ১৯ তারিখ প্রতিটি বিদ্যালয় স্লিপের প্রথম কিস্তির টাকা পায়। হিসাব রক্ষণ অফিসের সাথে শিক্ষক সমিতির নেতাদের কথা হলে তারা নাকি প্রতিটি বিদ্যালয়ের আলাদা আলাদা অর্থ ছাড় করানোর প্রস্তাব দেয়। সেপথে না হেটে শিক্ষক সমিতির নেতাদের সাথে দেনদরবারের মাধ্যমে সে সময় অর্থ ছাড় করান হয়।

এ কারনে ওই অফিসে দেওয়ার জন্য ঘুষের টাকা তোলা হয়েছে।গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মতিউর রহমান মানিক, বলরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন মন্ডল, বড় সিমলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম, ভাতঘরা জটার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, সমসের নগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাবলু মিয়া, মালিয়াট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান ফিরোজসহ আরো কয়েকজন দ্বায়িত্ব নিয়ে উক্ত টাকা আদায় করেন বলেও তারা জানান। স্লিপের অর্থ ছাড় করার জন্য ঘুষের টাকা আদায়ের তথ্য প্রমাণ ইতিমধ্যে প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে।

জানা যায়,শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনুপাতে বিদ্যালয় ভিত্তিক স্লিপের বরাদ্দ নির্ধারিত হয় সর্বোচ্চ ৫০ জন শিক্ষার্থী হলে ৩৫২৫৩.১৯, ৫০% হারে প্রথম কিস্তি ১৭৬২৬.৫৯ টাকা। ৫১-৩০০ শিক্ষার্থী হলে ৭০৫০৬.৩৮,৫০% হারে প্রথম কিস্তি ৩৫২৫৩.১৯ টাকা। ৩০১-৬০০ শিক্ষার্থী হলে ১০৫৭৫৯.৫৮ এর ৫০% হারে প্রথম কিস্তি ৫২৮৭৯.৭৯ টাকা। ৬০১-১০০০ শিক্ষার্থী হলে ১৪১০১২.৭৭ এর ৫০% হারে প্রথম কিস্তি ৭০৫০৬. ৩৮ টাকা । আর ১০০০ এর অধিক হলে ১৭৬২৬৫.৯৬ এর প্রথম কিস্তি ৮৮১৩২.৯ টাকা। এই হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলার ৫০% হারে প্রথম কিস্তি ৫৩ লাখ ৭৬ হাজার ১১১ টাকা ছাড় করা হয়।

বাংলাদেশ প্রাইমারি শিক্ষক সমিতির কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি দুলালমুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিহার সুলতানা হিসাব রক্ষণ অফিসে ঘুষ দেওয়ার জন্য অর্থ আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন,সাক্ষাতে কথা বলব। উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন বলেন, স্লিপের ফাইল আমি ছেড়ে দিয়েছি। আমার অফিসে উৎকোচ হিসেবে কোন অর্থ গ্রহণ করা হয় না। কেউ যদি আমার অফিসের নামে টাকা তোলে তাহলে তার দায়-দায়িত্ব তাদের নিতে হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.মাসুদুুর রহমান এর আহবানে মাসিক সমন্বয় সভায় স্লিপের অর্থ ছাড়ের জন্য ঘুষের টাকা আদায়ের ব্যাপারে তার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন,মিটিং এ আছি।পরে কথা হবে। ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অনন্দ কিশোর সাহা বলেন,স্লিপের ফাইল রেডি করে স্ব স্ব স্কুলকে দিয়ে দেবে। পরবর্তীতে তারা হিসাব রক্ষণ কার্যালয় থেকে ফাইল ছাড় করিয়ে নেবে। এখানে টাকা তোলার তো কোন সুযোগ নেই। ব্যাপারটি আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।