ঢাকা ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ইচ্ছে পূরণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo বিএনপি নেতা ফেরদৌস আলম মৃধা নিজস্ব অর্থায়নের বলদী গ্রামের বেহাল রাস্তা গুলো পূর্ণ সংস্কারের কাজ শুরু করেন Logo সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণ করে সিআইপি অ্যাওয়ার্ড পাওয়া জসিম উদ্দিনকে সংবর্ধনা Logo মুরাদনগরে খামারগ্রাম প্রবাসী সংগঠনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দোয়া মাহফিল Logo বুড়িচং বাকশীমূল স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত Logo খুলনায় যুবককে গুলি করে হত্যার চেষ্টা Logo সিলেট জেলা যুবদলের নেতা আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ Logo ফুলবাড়ীতে প্রি-পেইড মিটার বন্ধের দাবি Logo বরুড়ার দলুয়া তুলাগাও দাখিল মাদ্রাসার ৫৪ তম বার্ষিক বড় খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত Logo ফুলবাড়ীতে কানাহার ডাঙ্গা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

হারবিনে প্রস্ফুটিত তুষারকণাগুলি পর্যটন শিল্পে প্রস্ফুটিত পুষ্পের মতো

গত গ্রীষ্মে, বারবিকিউ-এর জন্য শানতংয়ের ছোট শহর জিবো চীনা পর্যটকদের আকর্ষণ করেছে। ২০২৪ সালের শুরুতে, উত্তর চীনের হারবিন শহর শীতকালীন বৈশিষ্ট্যময় পর্যটন এবং পর্যটকদের পরিষেবার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় শহর হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ এমন মন্তব্য করেছে: “এই শীতকালে, ‘চিরবসন্ত’ নামে পরিচিত হাইনান শহরও হারবিনের কাছে হেরে গেছে।”

নববর্ষের ছুটির দিনে মাত্র তিন দিনের মধ্যে, হারবিনের মোট পর্যটন রাজস্ব ৫.৯১৪ বিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছেছে। ৩ মিলিয়নেরও বেশি পর্যটক আকর্ষণ করেছে এবং তার পর্যটন জনপ্রিয়তা গত মাসের তুলনায় ২৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২৪ সালে হারবিন সবচেয়ে জনপ্রিয় শহরে পরিণত হয়েছে। অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন: শীতের পর্যটনের জন্য উপযোগী দেশজুড়ে এতগুলো শহর আছে, কেন হারবিন এই সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠল?

৫ তারিখে, ৪০তম চীনের হারবিন আন্তর্জাতিক বরফ ও তুষার উৎসব শুরু হয়। মাত্র ৩ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ৪০ হাজার মানুষকে তা আকর্ষণ করেছে। হারবিনের একটি সুদীর্ঘ বরফ ও তুষার সংস্কৃতি রয়েছে এবং বরফ ও তুষার উত্সবের ইতিহাস ৬০ বছরেরও বেশি। দর্শনার্থীরা শুধুমাত্র বিভিন্ন বরফের ভাস্কর্য শিল্প দেখতে পারে না, তবে বরফের পালেতে চড়ে, বরফের বানর শিকার করে এবং বরফ ও তুষার শিল্প কার্নিভলে অংশগ্রহণ করতে পারে। আজকাল, বরফ ও তুষার পর্যটন খেলাধুলা- অর্থনীতির সাথে একীভূত হয়েছে। এর সুগভীর সাংস্কৃতিক তাৎপর্যও রয়েছে।

চমৎকারভাবে তৈরি করা নীল ও সাদা চীনামাটির বাসন তুষার ভাস্কর্য, ফ্রিহ্যান্ড-স্টাইলের বরফ ও তুষার কালি পেইন্টিং, অনন্য বরফের ছাপ… ‘আইস সিটি’র জন্য প্রকৃতির অনন্য উপহারের উপর নির্ভর করে, তুষারফলক ও বরফের স্ফটিকগুলিতে আরও বেশি চমৎকার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি প্রস্ফুটিত হচ্ছে।

সারা বিশ্বের পর্যটকদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য, হারবিন অনেক হৃদয় উষ্ণকারী ব্যবস্থা অবলম্বন করেছে। সংস্কৃতি ও পর্যটন বিভাগ পর্যটন মানচিত্র এবং ভ্রমণ নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। পর্যটকরা যাতে পা পিছলে না পড়েন, সেজন্য সেন্ট্রাল স্ট্রিট ভূগর্ভস্থ প্যাসেজগুলিতে কার্পেট বিছানো হয়েছে। উষ্ণ-হৃদয়ের স্বেচ্ছাসেবকরা বিনামূল্যে ব্রাউন-সুগার আদা চা পরিবেশন করছে। দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে বিনামূল্যে পাতাল রেলে যাত্রা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাস্তায় ছোট উষ্ণ ঘর স্থাপন করা হয়েছে। হারবিনের স্থানীয় নাগরিকরা পর্যটকদের বিনামূল্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হয়ে উঠেছে। অরোকেন জাতির লোকেরা সেন্ট্রাল স্ট্রিটে রেইনডিয়ার নিয়ে এসেছেন। হিমায়িত নাশপাতি খাওয়ার সুবিধার জন্য ছোট ছোট টুকরা করে কেটে দেওয়া হয়েছে। মিষ্টি আলু খাওয়ার সুবিধার জন্য সঙ্গে চামচ দেওয়া হচ্ছে। এমন কি মিষ্টি পছন্দ করা দক্ষিণ চীনের পর্যটকের জন্য খাবারের সাথে চিনি দেওয়া ইত্যাদি… এই শীতে, “হারবিন”-এর বিভিন্ন পরিষেবা ব্যবস্থা আশ্চর্য উন্নতি হয়েছে। পর্যটকরা অনুভব করতে পারছেন যে, হারবিন শহরে সব নাগরিকের অংশগ্রহণে সত্যিকার অর্থে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পর্যটন পরিবেশ গড়ে উঠেছে।

শানতং জিবো, উত্তর-পূর্ব চীনের হারবিন, সেইসাথে দ্বিতীয় এবং তৃতীয়-স্তরের শহর যেমন ছেংতু, হাংচৌ, ছাংশা এবং নানচিং ধীরে ধীরে চীনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হয়ে উঠেছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট-এর খবরে বলা হয়, চীনের অভ্যন্তরীণ পর্যটন দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিল (ডব্লিউটিটিসি) এবং অক্সফোর্ড ইকোনমিক্সের যৌথভাবে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অনুমান করা হয় যে, ২০২৩ সালে চীনের জিডিপিতে পর্যটন শিল্প ৭.৮% অবদান রাখবে। যা ২০১৯ সালের ১১.৬%-এর কাছাকাছি আসবে। বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন যে, যদিও চীনের বহির্মুখী এবং অভ্যন্তরীণ পর্যটন ব্যবসা এখনও প্রাক-মহামারী পর্যায়ে পৌঁছেনি, তবে, অভ্যন্তরীণ পর্যটন শিল্পের আকার ২০১৯ সালের চেয়ে বেশি হয়েছে।

হারবিন একসময় চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভারী শিল্পের কেন্দ্র এবং সরঞ্জাম উৎপাদন কেন্দ্র ছিল। এখন তার নিজস্ব অনন্য চেতনা দিয়ে অগণিত পর্যটক আকর্ষণ করছে। নতুন অর্থনীতি এবং নতুন ব্যবসা এখানে বিকশিত হচ্ছে। হারবিনে প্রস্ফুটিত তুষারকণাগুলি পর্যটন শিল্পে প্রস্ফুটিত পুষ্পের মতো হয়েছে, যা অর্থনীতি ও ভোক্তা পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে মানুষের আশা।
সূত্র:ইয়াং-তৌহিদ-ছাই: চায়না মিডিয়া গ্রুপ।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইচ্ছে পূরণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

SBN

SBN

হারবিনে প্রস্ফুটিত তুষারকণাগুলি পর্যটন শিল্পে প্রস্ফুটিত পুষ্পের মতো

আপডেট সময় ০৪:০৭:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪

গত গ্রীষ্মে, বারবিকিউ-এর জন্য শানতংয়ের ছোট শহর জিবো চীনা পর্যটকদের আকর্ষণ করেছে। ২০২৪ সালের শুরুতে, উত্তর চীনের হারবিন শহর শীতকালীন বৈশিষ্ট্যময় পর্যটন এবং পর্যটকদের পরিষেবার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় শহর হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ এমন মন্তব্য করেছে: “এই শীতকালে, ‘চিরবসন্ত’ নামে পরিচিত হাইনান শহরও হারবিনের কাছে হেরে গেছে।”

নববর্ষের ছুটির দিনে মাত্র তিন দিনের মধ্যে, হারবিনের মোট পর্যটন রাজস্ব ৫.৯১৪ বিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছেছে। ৩ মিলিয়নেরও বেশি পর্যটক আকর্ষণ করেছে এবং তার পর্যটন জনপ্রিয়তা গত মাসের তুলনায় ২৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২৪ সালে হারবিন সবচেয়ে জনপ্রিয় শহরে পরিণত হয়েছে। অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন: শীতের পর্যটনের জন্য উপযোগী দেশজুড়ে এতগুলো শহর আছে, কেন হারবিন এই সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠল?

৫ তারিখে, ৪০তম চীনের হারবিন আন্তর্জাতিক বরফ ও তুষার উৎসব শুরু হয়। মাত্র ৩ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ৪০ হাজার মানুষকে তা আকর্ষণ করেছে। হারবিনের একটি সুদীর্ঘ বরফ ও তুষার সংস্কৃতি রয়েছে এবং বরফ ও তুষার উত্সবের ইতিহাস ৬০ বছরেরও বেশি। দর্শনার্থীরা শুধুমাত্র বিভিন্ন বরফের ভাস্কর্য শিল্প দেখতে পারে না, তবে বরফের পালেতে চড়ে, বরফের বানর শিকার করে এবং বরফ ও তুষার শিল্প কার্নিভলে অংশগ্রহণ করতে পারে। আজকাল, বরফ ও তুষার পর্যটন খেলাধুলা- অর্থনীতির সাথে একীভূত হয়েছে। এর সুগভীর সাংস্কৃতিক তাৎপর্যও রয়েছে।

চমৎকারভাবে তৈরি করা নীল ও সাদা চীনামাটির বাসন তুষার ভাস্কর্য, ফ্রিহ্যান্ড-স্টাইলের বরফ ও তুষার কালি পেইন্টিং, অনন্য বরফের ছাপ… ‘আইস সিটি’র জন্য প্রকৃতির অনন্য উপহারের উপর নির্ভর করে, তুষারফলক ও বরফের স্ফটিকগুলিতে আরও বেশি চমৎকার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি প্রস্ফুটিত হচ্ছে।

সারা বিশ্বের পর্যটকদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য, হারবিন অনেক হৃদয় উষ্ণকারী ব্যবস্থা অবলম্বন করেছে। সংস্কৃতি ও পর্যটন বিভাগ পর্যটন মানচিত্র এবং ভ্রমণ নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। পর্যটকরা যাতে পা পিছলে না পড়েন, সেজন্য সেন্ট্রাল স্ট্রিট ভূগর্ভস্থ প্যাসেজগুলিতে কার্পেট বিছানো হয়েছে। উষ্ণ-হৃদয়ের স্বেচ্ছাসেবকরা বিনামূল্যে ব্রাউন-সুগার আদা চা পরিবেশন করছে। দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে বিনামূল্যে পাতাল রেলে যাত্রা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাস্তায় ছোট উষ্ণ ঘর স্থাপন করা হয়েছে। হারবিনের স্থানীয় নাগরিকরা পর্যটকদের বিনামূল্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হয়ে উঠেছে। অরোকেন জাতির লোকেরা সেন্ট্রাল স্ট্রিটে রেইনডিয়ার নিয়ে এসেছেন। হিমায়িত নাশপাতি খাওয়ার সুবিধার জন্য ছোট ছোট টুকরা করে কেটে দেওয়া হয়েছে। মিষ্টি আলু খাওয়ার সুবিধার জন্য সঙ্গে চামচ দেওয়া হচ্ছে। এমন কি মিষ্টি পছন্দ করা দক্ষিণ চীনের পর্যটকের জন্য খাবারের সাথে চিনি দেওয়া ইত্যাদি… এই শীতে, “হারবিন”-এর বিভিন্ন পরিষেবা ব্যবস্থা আশ্চর্য উন্নতি হয়েছে। পর্যটকরা অনুভব করতে পারছেন যে, হারবিন শহরে সব নাগরিকের অংশগ্রহণে সত্যিকার অর্থে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পর্যটন পরিবেশ গড়ে উঠেছে।

শানতং জিবো, উত্তর-পূর্ব চীনের হারবিন, সেইসাথে দ্বিতীয় এবং তৃতীয়-স্তরের শহর যেমন ছেংতু, হাংচৌ, ছাংশা এবং নানচিং ধীরে ধীরে চীনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হয়ে উঠেছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট-এর খবরে বলা হয়, চীনের অভ্যন্তরীণ পর্যটন দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিল (ডব্লিউটিটিসি) এবং অক্সফোর্ড ইকোনমিক্সের যৌথভাবে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অনুমান করা হয় যে, ২০২৩ সালে চীনের জিডিপিতে পর্যটন শিল্প ৭.৮% অবদান রাখবে। যা ২০১৯ সালের ১১.৬%-এর কাছাকাছি আসবে। বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন যে, যদিও চীনের বহির্মুখী এবং অভ্যন্তরীণ পর্যটন ব্যবসা এখনও প্রাক-মহামারী পর্যায়ে পৌঁছেনি, তবে, অভ্যন্তরীণ পর্যটন শিল্পের আকার ২০১৯ সালের চেয়ে বেশি হয়েছে।

হারবিন একসময় চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভারী শিল্পের কেন্দ্র এবং সরঞ্জাম উৎপাদন কেন্দ্র ছিল। এখন তার নিজস্ব অনন্য চেতনা দিয়ে অগণিত পর্যটক আকর্ষণ করছে। নতুন অর্থনীতি এবং নতুন ব্যবসা এখানে বিকশিত হচ্ছে। হারবিনে প্রস্ফুটিত তুষারকণাগুলি পর্যটন শিল্পে প্রস্ফুটিত পুষ্পের মতো হয়েছে, যা অর্থনীতি ও ভোক্তা পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে মানুষের আশা।
সূত্র:ইয়াং-তৌহিদ-ছাই: চায়না মিডিয়া গ্রুপ।