ঢাকা ০৮:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১: বিজয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে—রণাঙ্গনে চূড়ান্ত আঘাতের দিন Logo বুড়িচং উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার Logo বিএনপি-জামায়াত নিধন করা ওসি জাবীদ এখন ঝিনাইদহ পিবিআইতে Logo সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ জাহাঙ্গীর আলম, পিতৃহারা হলো তিন বছরের ইরফান Logo রক্তের কালিতে লেখা ১৪ ডিসেম্বর—শোক ও গৌরবের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস Logo হাদির উপর গুলির ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন থেকে ফেরার পথে ২ জনকে কুপিয়ে জখম Logo ওসমান হাদির সুস্থতা কামনায় মুরাদনগরে দোয়া মাহফিল Logo রাণীনগরে ৬০০ শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo কালীগঞ্জে অপহরণের ১৬ ঘন্টা পর এক যুবককে উদ্ধার, তিন অপহরণকারী গ্রেফতার Logo শরীফ ওসমান হাদীর ওপর হামলার পর সীমান্তে বিজিবির কড়া নিরাপত্তা

সরাইলে পারিবারিক কলহের কারণে স্কুল শিক্ষিকার আত্মহত্যা

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পারিবারিক কলহের কারণে মনি রানী নাগ (৩৫) নামে এক স্কুল শিক্ষিকার আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।

স্কুল শিক্ষিকার বাবা অজিত নাগ সংবাদ কর্মীদের জানান, বিয়ের পর থেকে তার মেয়ে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের নির্যাতনে অতিষ্ঠ ছিল। একাধিকবার সালিস মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে,আবার নিস্পত্তিও হয়েছে। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি মেয়ের। রোববার নিজের জীবন দিয়ে শ্বশুর শ্বাশুড়ির অত্যাচার নির্যাতনের প্রতিবাদ করলো। চিরদিনের জন্য এতিম হয়ে গেল মনি রাণীর অবুঝ দুই কন্যাশিশু অতশি (১০) ও মতুরা (০৭)। কিন্তু অজিত নাগের অভিযোগ অস্বীকার করছেন স্বামীর পরিবারের লোকজন।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শাহবাজপুর এলাকার অজিত নাগের একমাত্র মেয়ে মনি রাণী নাগ। গত ১৭-১৮ বছর আগে সামাজিক ভাবেই অরুয়াইলের সাহাপাড়া এলাকার জিতু ধরের ছেলে অনিক রায়ের সাথে বিয়ে হয় মনি রাণীর। বিয়ের সময় যৌতক হিসাবে মনির বাবা অনিককে ২ লাখ টাকার ফার্নিচার দিয়েছিলেন। অনিক অরুয়াইল বাজারের ষ্টুডিও ব্যবসায়ি। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মনি রাণীর উপর অত্যাচার নির্যাতনের অভিযোগ পান অজিত নাগ। কষ্ট সহ্য করেও সংসার করার চেষ্টা করেন মনি। বিয়ের দুই বছর পর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি হয় মনি রাণীর। পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের কালিশিমুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন তিনি। ইতোমধ্যে অতশি ও মতুরা নামের দুই কন্যা সন্তানের মা হন তিনি। দিনে দিনে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলছিল। বাকবিতন্ডা, হাতাহাতি ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে।

মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখতে সালিসের মাধ্যমে একাধিকবার বিরোধ নিস্পত্তি করেছেন অজিত নাগ। এরপরও স্বামীর সংসারে সুখ পাচ্ছিলেন না মনি রাণী। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে রোববার দুপুরের দিকে আত্মহত্যা করতে বিষ পান করে ফেলেন মনি। অবস্থা বেগতিক দেখে মনি রাণীকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বামী অনিক। মনির অবস্থা যখন ক্রমেই অবনতির দিকে তখন হাসপাতাল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান স্বামী অনিক। কিছুক্ষণ পরই মৃত্যুবরণ করেন মনি রাণী।

মনি রাণীর বাবা অজিত নাগ আরও বলেন, বিয়ের পর থেকে মেয়েটিকে শান্তি দেয়নি। তারা আমার মেয়ের মৃত্যুই চেয়েছিল। আমি এই বিষয়ে আইনি পক্রিয়ায় বিচার চাইব।

সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মো: নোমান মিয়া বলেন, আনুমানিক বিকাল আড়াইটা থেকে ৩টার দিকে বিষ পান করা অবস্থায় মনিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বামী। আমরা ওয়াশ শুরু করার সময়ই মারা যান মনি রাণী।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অফিসার পাঠিয়েছি। মরদেহের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১: বিজয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে—রণাঙ্গনে চূড়ান্ত আঘাতের দিন

SBN

SBN

সরাইলে পারিবারিক কলহের কারণে স্কুল শিক্ষিকার আত্মহত্যা

আপডেট সময় ০৮:৪৬:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৩

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পারিবারিক কলহের কারণে মনি রানী নাগ (৩৫) নামে এক স্কুল শিক্ষিকার আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।

স্কুল শিক্ষিকার বাবা অজিত নাগ সংবাদ কর্মীদের জানান, বিয়ের পর থেকে তার মেয়ে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের নির্যাতনে অতিষ্ঠ ছিল। একাধিকবার সালিস মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে,আবার নিস্পত্তিও হয়েছে। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি মেয়ের। রোববার নিজের জীবন দিয়ে শ্বশুর শ্বাশুড়ির অত্যাচার নির্যাতনের প্রতিবাদ করলো। চিরদিনের জন্য এতিম হয়ে গেল মনি রাণীর অবুঝ দুই কন্যাশিশু অতশি (১০) ও মতুরা (০৭)। কিন্তু অজিত নাগের অভিযোগ অস্বীকার করছেন স্বামীর পরিবারের লোকজন।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শাহবাজপুর এলাকার অজিত নাগের একমাত্র মেয়ে মনি রাণী নাগ। গত ১৭-১৮ বছর আগে সামাজিক ভাবেই অরুয়াইলের সাহাপাড়া এলাকার জিতু ধরের ছেলে অনিক রায়ের সাথে বিয়ে হয় মনি রাণীর। বিয়ের সময় যৌতক হিসাবে মনির বাবা অনিককে ২ লাখ টাকার ফার্নিচার দিয়েছিলেন। অনিক অরুয়াইল বাজারের ষ্টুডিও ব্যবসায়ি। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মনি রাণীর উপর অত্যাচার নির্যাতনের অভিযোগ পান অজিত নাগ। কষ্ট সহ্য করেও সংসার করার চেষ্টা করেন মনি। বিয়ের দুই বছর পর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি হয় মনি রাণীর। পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের কালিশিমুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন তিনি। ইতোমধ্যে অতশি ও মতুরা নামের দুই কন্যা সন্তানের মা হন তিনি। দিনে দিনে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলছিল। বাকবিতন্ডা, হাতাহাতি ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে।

মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখতে সালিসের মাধ্যমে একাধিকবার বিরোধ নিস্পত্তি করেছেন অজিত নাগ। এরপরও স্বামীর সংসারে সুখ পাচ্ছিলেন না মনি রাণী। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে রোববার দুপুরের দিকে আত্মহত্যা করতে বিষ পান করে ফেলেন মনি। অবস্থা বেগতিক দেখে মনি রাণীকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বামী অনিক। মনির অবস্থা যখন ক্রমেই অবনতির দিকে তখন হাসপাতাল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান স্বামী অনিক। কিছুক্ষণ পরই মৃত্যুবরণ করেন মনি রাণী।

মনি রাণীর বাবা অজিত নাগ আরও বলেন, বিয়ের পর থেকে মেয়েটিকে শান্তি দেয়নি। তারা আমার মেয়ের মৃত্যুই চেয়েছিল। আমি এই বিষয়ে আইনি পক্রিয়ায় বিচার চাইব।

সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মো: নোমান মিয়া বলেন, আনুমানিক বিকাল আড়াইটা থেকে ৩টার দিকে বিষ পান করা অবস্থায় মনিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বামী। আমরা ওয়াশ শুরু করার সময়ই মারা যান মনি রাণী।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অফিসার পাঠিয়েছি। মরদেহের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।