মো: নাজমুল হোসেন ইমন,
স্টাফ রিপোর্টার
২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজির হয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৯টার দিকে দুদক কার্যালয়ের মূল গেইট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন, ব্যারিস্টার খাজা তানভীরসহ অন্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ড. ইউনূস চিঠি দিয়ে দুদককে জানিয়েছেন তিনি ৫ অক্টোবর তাদের কার্যালয়ে যাবেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, অর্থ পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জবাব দিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ে যাবেন। তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বুধবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চার পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। বুধবার বেলা পৌনে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করে নয়, বরং আইন মেনে দুদক কাজ করে বলে জানিয়েছেন সংস্থার সচিব মো. মাহবুব হোসেন। ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন সময়ের আলোকে বলেন, ‘দুদকের দেওয়া চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ড. ইউনূস পাল্টা চিঠি দিয়ে দুদককে জানিয়েছেন যে, তিনি ৫ অক্টোবর দুদকে যাবেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তিনি সকাল ৯টার দিকে দুদকে হাজির হবেন।’
দুদক সূত্র জানায়, শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ড. ইউনূসহ ১৩ জনকে তলব করেছিল দুদক। এর মধ্যে গ্রামীণ টেলিকমের চার পরিচালককে বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তারা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালক নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী। এদিকে, দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করে কাজ করে না। বরং আইন মেনে কাজ করে। বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের চার পরিচালককে মামলার তদন্তের স্বার্থেই ডাকা হয়েছে। দুদক আইন মেনে কাজ করে। কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করে কাজ করে না। তদন্তের স্বার্থে ড. ইউনূসকেও ডাকা হয়েছে।
দুদক ও আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অর্থ পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনকে তলব করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। ওই চিঠিতে ৫ অক্টোবর ড. ইউনূসকে হাজির হতে বলা হয়েছে। দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৩০ মে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে দুদক। সংস্থার উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার আসামিরা হলেন-গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।
এছাড়া অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলামকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।