ডেস্ক রিপোর্টঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সাবেক সেনা সার্জেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলী হায়দারের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে এসিল্যান্ড ইফফাত আরা জামান উর্মির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও হবিগঞ্জের ডিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
জানা গেছে, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সাবেক সেনা সার্জেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলী হায়দারের কন্যা রুজিনা আক্তারের রেজিস্ট্রি দলিলমুলে ক্রয়কৃত এক শতক বত্রিশ অযুতাংশ ভূমি নামজারি করতে পাঁচবার আবেদন করেন। চারবারই ফাইল গায়েবের খপ্পরে পড়েন। ৫ম বার আবেদনের শুনানি শেষে এসিল্যান্ড ইফফাত আরা জামান উর্মি লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছেন ওই দাগে কোনো ভূমি নেই। অথচ একই দাগে মাসুক মিয়া নামে এক ব্যক্তির নামজারি করে দেন এসিল্যান্ড।
তাছাড়া শুনানির সময় মাসুক মিয়া ও তার ছেলেকে চেয়ারে বসিয়ে এবং মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলীকে দেড় ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে শুনানি করে তার সঙ্গে এসিল্যান্ড অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন মর্মে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও হবিগঞ্জের ডিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে ২১ ডিসেম্বর শুনানির জন্য ধার্য করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রুজিনা আক্তার উপজেলার নাগেরখানা মহল্লার তোপখানা মৌজায় অবস্থিত ১৬৭৭নং দাগে তার চাচা মঈনুদ্দিন মিয়ার কাছ থেকে ৮০ পয়েন্ট ও অপর প্রতিবেশী মাসুক মিয়ার নিকট থেকে ১ শতক বাড়ি ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ৫৬৫১/১৯নং রেজিস্ট্রি দলিলমুলে ক্রয় করে সেখানে একটি দালান ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন।
ওই ভূমির খাজনা দিতে গেলে ৫-৬নং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার জানান উক্ত দাগে কোনো ভূমি নেই। পরে ২০২১ সালের ৩০ মে রুজিনার পক্ষে আলী হায়দার এসিল্যান্ড বরাবরে মিস কেইস দায়ের করেন। ওই মামলার ফাইল গায়েব হলে ২১ ডিসেম্বর আরেকটি কেস দাখিল করলে সেটিও গায়েব হয়ে যায়। পরপর আরও ৩টি মিস কেইস দাখিল করেন তিনি।
৫ম দফায় দায়েরকৃত মিস কেইসের শুনানি করে এসিল্যান্ড স্বাক্ষরিত একটি পত্রে জানানো হয় ওই দাগে কোনো ভূমি নেই। অথচ চলতি বছরের ২৩ মার্চ মাসুক মিয়ার আবেদনের শুনানি করে ওই দাগ থেকে তাকে ১ শতক ৩২ পয়েন্ট ভূমি তার নামে ভুয়া নামজারি করে দেন এসিল্যান্ড ইফাত আরা জামান উর্মি।
মুক্তিযোদ্ধা আলী হায়দার জানান, সর্বশেষ মাসুক মিয়ার নামজারি শুনানির দিন তাকে দেড় ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখেছেন; অপরদিকে মাসুক মিয়া ও তার ছেলেকে চেয়ার বসিয়ে রেখে আমার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন এসিল্যান্ড।
তিনি বলেন, আমার মেয়ের রেজিস্ট্রি দলিল থাকলেও ভূমি না থাকার অজুহাতে নামজারি করেননি; অপরদিকে একই দাগ থেকে মাসুক মিয়ার নামে ভুয়া নামজারি করে দিয়ে আমাকে এবং আমার মেয়ের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
এসিল্যান্ড ইফফাত আরা জামান উর্মি বলেন, আমি যতটুকু জানি তিনি আমার কাছে একটি নামজারির আবেদন করেছিলেন। তার অন্য কোনো অভিযোগ সম্পর্কে আমি অবগত নই।
একজন মুক্তিযোদ্ধাকে দাঁড় করিয়ে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা ইনটেনশনালি হয়ে গেছে; যা আমার ইচ্ছাকৃত নয়।