ঢাকা ০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বুড়িচং উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার Logo বিএনপি-জামায়াত নিধন করা ওসি জাবীদ এখন ঝিনাইদহ পিবিআইতে Logo সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ জাহাঙ্গীর আলম, পিতৃহারা হলো তিন বছরের ইরফান Logo রক্তের কালিতে লেখা ১৪ ডিসেম্বর—শোক ও গৌরবের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস Logo হাদির উপর গুলির ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন থেকে ফেরার পথে ২ জনকে কুপিয়ে জখম Logo ওসমান হাদির সুস্থতা কামনায় মুরাদনগরে দোয়া মাহফিল Logo রাণীনগরে ৬০০ শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo কালীগঞ্জে অপহরণের ১৬ ঘন্টা পর এক যুবককে উদ্ধার, তিন অপহরণকারী গ্রেফতার Logo শরীফ ওসমান হাদীর ওপর হামলার পর সীমান্তে বিজিবির কড়া নিরাপত্তা Logo দীগলটারীতে ভাঙা সেতুর কারণে দুই পাড়ের পাঁচ শতাধিক মানুষের চরম দুর্ভোগ

রূপগঞ্জে হাসপাতালের নাম পাল্টে প্রতারণা ফাঁদ

রাকিবুল ইসলাম, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসপাতালের নাম পরিবর্তণ করে নতুন করে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে শওকত হোসাইন সুমন নামে এক ভূয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, শওকত হোসাইন সুমন নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দেওয়ার কারণে এস এইচ এস হেলথ কেয়ার হসপিটাল ও ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ নামক প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে র‌্যাব গ্রেপ্তারের পর প্রতারনার দায়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ২ বছরের জেল ও ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করে। ডেমরায় ভূয়া ডাক্তার হিসেবে ২ বছর জেল খেটে বের হওয়ার পর নতুন প্রতারণার ফাঁদ হিসেবে রূপগঞ্জের কাঞ্চন এলাকায় গড়ে তোলেন এসএমএস নামে আরেকটি হাসপাতাল।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শওকত হোসাইন সুমন ব্যবসা শাখা থেকে এইচএসসি কোন রকমে পাশ করলেও নিজেকে পরিচয় দিতো চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে। সেই সুবাধে রাজধানী ঢাকার ডেমরা এলাকায় কয়েক বছর আগে গড়ে তোলেন এস এইচ এস হেলথ কেয়ার হসপিটাল ও ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ নামে একটি বেসরকারি হাসপাতাল। ডেমরা এলাকায় হাসপাতালটি পরিচালনা করা কালীন সময় রোগীদের ভূল চিকিৎসাসহ, বিভিন্ন অনিয়মের নিয়েই চলছিল হাসপাতালটি। এসকল অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩ বছর আগে হাসপাতালটিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ অভিযান পরিচালনা। অভিযান পরিচালনা করা কালীন সময় হাসপাতালের চেয়ারম্যান শওকত হোসেইন সুমনের কাছে কোন ডাক্তারি সার্টিফিকেট না পাওয়ায় তাকে ২ বছরের কারাদন্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা করে র‌্যাবের সাথে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। পরে দুই বছর জেল খাটার পর নতুন করে প্রতারণা ফাঁদ পাতেন সুমন। এ কারণে রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন এলাকায় একটি পরিত্যাক্ত কমিউনিটি সেন্টার ফিরোজ ভুইয়ার কাছ থেকে ভাড়া নেন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য। হাসপাতালটির বাইরে প্রধান ফটকে নাম এসএমএস হেলস কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার নাম দেওয়া হলেও চুক্তিপত্রে হাসপাতালের নাম দেওয়া হয় এস এইচ এস হেলথ কেয়ার হসপিটাল ও ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ.।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালটিতে প্রবেশ করতেই নেই কোন রোগীর কোলাহল। হাসপাতালের ভেতরে একজন রিসিপশনিষ্ট, ব্যবস্থাপক ও উপব্যবস্থাপকসহ মোট তিনজন কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়েই চলছে হাসপাতাল। হাসপাতালের ডাক্তার ও অন্যান্য স্টাফরা কোথায় জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ জানায় হাসপাতালের ডাক্তার বসে মাঝে মাঝে। এখনো ভালভাবে কোন কিছু শুরু করা হয়নি। কয়েকদিন পর থেকে সবকিছু ভালভাবে শুরু করা হবে বলে জানান তিনি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটার নয় যেন ভূতুরে কক্ষ। শুধু তাই নয় ভিতরে রাখা ল্যাবের কিছু যন্ত্রাংশ মান দাতার আমলের পুরাতন। সঠিক রোগ নির্নয়ে এগুলো কতটা কার্যকর ও নিরাপদ তা নিয়েও আছে প্রশ্ন। নেই পরিবে অধিদপ্তর ও ফায়ার সনদ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গত প্রায় ১ বছর আগে হাসপাতালটি চালু করা হলেও এখানো ঠিক মতো কোন ডাক্তার পাওয়া যায় না। এখানে কোন ধরনের পরিক্ষা নিরিক্ষাও করা হচ্ছে না। এ হাসপাতালটির কার্যক্রম শুধু নামমাত্র পরিচালনা করা হয়। শুনেছি এ হাসপাতালটির মালিক ডাক্তার না হয়েও নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে ২ বছর জেল খেটেছে। এমন একজন ভূয়া ডাক্তার হাসপাতাল দিয়েছে আমাদের এলাকায় যেটি খুবই ন্যাক্কারজনক। আমরা দ্রুত এই হাসপাতালটি বন্ধের দাবি জানাচ্ছি ।
হাসপাতাল ভবনের মালিক ফিরোজ ভুইয়া বলেন, হাসপাতালের মালিক সুমন আমার সাথে বারবার চুক্তি ভঙ্গ করেছে। ভাড়া ও এডভান্স বাবদ আমি সুমনে কাছে ৩০ লাখ টাকা পাওনা। টাকা দেওয়ার নামে সে বিভিন্ন টালবাহানা করে আসছে। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে কোন রোগী না থাকলেও স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে সে শেয়ারের নামে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মনি আক্তার জানান, আমাদের হাসপাতালের সবকিছুর অনুমোদন রয়েছে। আমরা সঠিকভাবেই হাসপাতাল পরিচালনা করে আসছি। হাসপাতালের নামে প্রতারণা ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না হাসপাতালের মালিক এ ব্যাপারে বলতে পারবে।
এ ব্যপারে এসএমএস হেলথ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক লিঃ এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর শাওকত হোসাইন সুমন এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা পুরো সত্যি নয়। এর মধ্যে যারা আমার পূর্বের অংশিদার হিসেবে ছিলো তারা আমাকে ফেলে মোটা অংকের টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে, যে জন্য এখন আমি একটু অর্থনৈতিক টানা পোরেনে আছি। তবে আমি রূপগঞ্জের কিছু অংশিদার নিয়ে হাসপাতাল আবার নতুন করে শুরু করতেছি। আশা করছি সব ঠিক করে ফেলতে পারবো।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বুড়িচং উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার

SBN

SBN

রূপগঞ্জে হাসপাতালের নাম পাল্টে প্রতারণা ফাঁদ

আপডেট সময় ০৭:৪০:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

রাকিবুল ইসলাম, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসপাতালের নাম পরিবর্তণ করে নতুন করে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে শওকত হোসাইন সুমন নামে এক ভূয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, শওকত হোসাইন সুমন নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দেওয়ার কারণে এস এইচ এস হেলথ কেয়ার হসপিটাল ও ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ নামক প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে র‌্যাব গ্রেপ্তারের পর প্রতারনার দায়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ২ বছরের জেল ও ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করে। ডেমরায় ভূয়া ডাক্তার হিসেবে ২ বছর জেল খেটে বের হওয়ার পর নতুন প্রতারণার ফাঁদ হিসেবে রূপগঞ্জের কাঞ্চন এলাকায় গড়ে তোলেন এসএমএস নামে আরেকটি হাসপাতাল।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শওকত হোসাইন সুমন ব্যবসা শাখা থেকে এইচএসসি কোন রকমে পাশ করলেও নিজেকে পরিচয় দিতো চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে। সেই সুবাধে রাজধানী ঢাকার ডেমরা এলাকায় কয়েক বছর আগে গড়ে তোলেন এস এইচ এস হেলথ কেয়ার হসপিটাল ও ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ নামে একটি বেসরকারি হাসপাতাল। ডেমরা এলাকায় হাসপাতালটি পরিচালনা করা কালীন সময় রোগীদের ভূল চিকিৎসাসহ, বিভিন্ন অনিয়মের নিয়েই চলছিল হাসপাতালটি। এসকল অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩ বছর আগে হাসপাতালটিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ অভিযান পরিচালনা। অভিযান পরিচালনা করা কালীন সময় হাসপাতালের চেয়ারম্যান শওকত হোসেইন সুমনের কাছে কোন ডাক্তারি সার্টিফিকেট না পাওয়ায় তাকে ২ বছরের কারাদন্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা করে র‌্যাবের সাথে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। পরে দুই বছর জেল খাটার পর নতুন করে প্রতারণা ফাঁদ পাতেন সুমন। এ কারণে রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন এলাকায় একটি পরিত্যাক্ত কমিউনিটি সেন্টার ফিরোজ ভুইয়ার কাছ থেকে ভাড়া নেন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য। হাসপাতালটির বাইরে প্রধান ফটকে নাম এসএমএস হেলস কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার নাম দেওয়া হলেও চুক্তিপত্রে হাসপাতালের নাম দেওয়া হয় এস এইচ এস হেলথ কেয়ার হসপিটাল ও ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ.।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালটিতে প্রবেশ করতেই নেই কোন রোগীর কোলাহল। হাসপাতালের ভেতরে একজন রিসিপশনিষ্ট, ব্যবস্থাপক ও উপব্যবস্থাপকসহ মোট তিনজন কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়েই চলছে হাসপাতাল। হাসপাতালের ডাক্তার ও অন্যান্য স্টাফরা কোথায় জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ জানায় হাসপাতালের ডাক্তার বসে মাঝে মাঝে। এখনো ভালভাবে কোন কিছু শুরু করা হয়নি। কয়েকদিন পর থেকে সবকিছু ভালভাবে শুরু করা হবে বলে জানান তিনি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটার নয় যেন ভূতুরে কক্ষ। শুধু তাই নয় ভিতরে রাখা ল্যাবের কিছু যন্ত্রাংশ মান দাতার আমলের পুরাতন। সঠিক রোগ নির্নয়ে এগুলো কতটা কার্যকর ও নিরাপদ তা নিয়েও আছে প্রশ্ন। নেই পরিবে অধিদপ্তর ও ফায়ার সনদ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গত প্রায় ১ বছর আগে হাসপাতালটি চালু করা হলেও এখানো ঠিক মতো কোন ডাক্তার পাওয়া যায় না। এখানে কোন ধরনের পরিক্ষা নিরিক্ষাও করা হচ্ছে না। এ হাসপাতালটির কার্যক্রম শুধু নামমাত্র পরিচালনা করা হয়। শুনেছি এ হাসপাতালটির মালিক ডাক্তার না হয়েও নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে ২ বছর জেল খেটেছে। এমন একজন ভূয়া ডাক্তার হাসপাতাল দিয়েছে আমাদের এলাকায় যেটি খুবই ন্যাক্কারজনক। আমরা দ্রুত এই হাসপাতালটি বন্ধের দাবি জানাচ্ছি ।
হাসপাতাল ভবনের মালিক ফিরোজ ভুইয়া বলেন, হাসপাতালের মালিক সুমন আমার সাথে বারবার চুক্তি ভঙ্গ করেছে। ভাড়া ও এডভান্স বাবদ আমি সুমনে কাছে ৩০ লাখ টাকা পাওনা। টাকা দেওয়ার নামে সে বিভিন্ন টালবাহানা করে আসছে। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে কোন রোগী না থাকলেও স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে সে শেয়ারের নামে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মনি আক্তার জানান, আমাদের হাসপাতালের সবকিছুর অনুমোদন রয়েছে। আমরা সঠিকভাবেই হাসপাতাল পরিচালনা করে আসছি। হাসপাতালের নামে প্রতারণা ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না হাসপাতালের মালিক এ ব্যাপারে বলতে পারবে।
এ ব্যপারে এসএমএস হেলথ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক লিঃ এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর শাওকত হোসাইন সুমন এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা পুরো সত্যি নয়। এর মধ্যে যারা আমার পূর্বের অংশিদার হিসেবে ছিলো তারা আমাকে ফেলে মোটা অংকের টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে, যে জন্য এখন আমি একটু অর্থনৈতিক টানা পোরেনে আছি। তবে আমি রূপগঞ্জের কিছু অংশিদার নিয়ে হাসপাতাল আবার নতুন করে শুরু করতেছি। আশা করছি সব ঠিক করে ফেলতে পারবো।