ঢাকা ০৪:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ‎ঢাকা কলেজে হামলার প্রতিবাদে লালমনিরহাট সরকারি কলেজে শিক্ষকদের কর্মবিরতি Logo বাগেরহাটের দশানী পচা দীঘি থেকে এক রাজমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার Logo মুন্সীগঞ্জে ৭ কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ জাল ও ইলিশ জব্দ Logo জরিপে সতর্কবার্তা: বিভাজনের পথে এগোচ্ছে তাইওয়ান প্রশাসন Logo বেইজিং নারী শীর্ষ-সম্মেলনে সি চিন পিংয়ের ঐতিহাসিক আহ্বান Logo বিআরআই দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ৬.২ শতাংশ বৃদ্ধি Logo বিশ্বজুড়ে প্রশংসা চীনের নারী উন্নয়ন মডেল: সিজিটিএন জরিপ Logo ফতুল্লায় ৮৫ লক্ষ টাকার ভারতীয় শাড়িসহ ২ জন পাচারকারী আটক Logo মোটরসাইকেল ওভারটেক করায় মোংলায় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা Logo সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ ডাকাত ছোটন বাহিনীর ১ সহযোগী অস্ত্র ও গোলাবারুদ’সহ আটক

সরাইলে সরকারি ঔষধ পেতে গুনতে হয় টাকা

দীপক কুমার দেব নাথ,
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহজাদাপুর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সরকারি ঔষধ পেতে গুনতে হয় টাকা। এমন অভিযোগ ঔষধ নিতে আসা স্থানীয় রোগীদের।

তবে বাস্তবে ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে নেই কোন মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট সহ অন্যান্য লোকবল। সপ্তাহে ২-৩ দিন সেখানে বসে ঔষধ বিতরণ করেন অফিস সহায়ক প্রানেশ কুমার নামের এক জন। পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকার(এফডব্লিওভি) দায়িত্ব পালন করেন দিলরুবা আক্তার।

রোগীদের অভিযোগ চিকিৎসক তো নেই-ই তার ওপর টাকা ছাড়া মিলে না কোন সরকারি ঔষধ। তারা বলছিলেন আগে দিতে হতো ২০ টাকা। এরপর ৩০ এখন দিতে হচ্ছে ৪০ টাকা। তবে দায়িত্বে নিয়োজিতরা সরকারি ঔষধ দিয়ে টাকা নেয়ার বিষয়টি মিথ্যা বলে জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, সরকারি ঔষধ ফ্রি। টাকা নেয়ার প্রশ্নই আসে না। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে । সরজমিনে দেখা যায়, গত রোববার ঘড়ির কাটায় সকাল ১০টা ৫ মিনিট। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আশপাশের গ্রাম থেকে আসা শিশুদের নিয়ে ২০-২৫ জন মহিলার দল লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তারা একজন একজন করে ভেতরে প্রবেশ করেছেন। কিছুক্ষণ পর হাতে করে ঔষধ নিয়ে বেড়িয়ে আসছেন।

এখানে কেমন চিকিৎসা চলছে জানতে চাইলে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৩-৪ জন মহিলা বলতে থাকেন, আমরা অনেক কষ্ট করে এখানে আসি চিকিৎসা নিতে। শিশু ও আমাদের সমস্যার চিকিৎসার উদ্যেশ্যে আসি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এখানে কোন চিকিৎসক নেই। ঔষধ দিতেন একজন ফার্মাসিস্ট তিনিও আসেন না। নেই এমএলএসএসও। বলতে গেলে স্বাস্থ্য বিভাগের কোন লোকই নেই। প্রাণেষ নামের একজন লোক আসেন মাঝে মধ্যে। কয়েকটা টাকা নিয়ে তিনি কিছু ঔষধ দেন। আর ওদিকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একজন মহিলা বসেন। মা ও শিশুদের দেখে তিনি সিরাপ আর ট্যাবলেট দেন। এর জন্য তিনি আগে আমাদের কাছ থেকে নিতেন ২০ টাকা। এখন তিনি ৪০ টাকার কম দিলে ঔষধ দেন না। সরকার নাকি আমাদেরকে বিনামূল্যে ঔষধ দিয়েছেন। তাহলে আবার টাকা নেয় কেন?

আরেক মহিলা বলেন, আমার দুই বাচ্চার ঔষধের জন্য ৮০ টাকা দিতে হয়েছে। কার কাছে অভিযোগ করবো? এদের অনেক ক্ষমতা। অভিযোগ দিলে আমাদেরকে উল্টো বিপদে ফেলে দিবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) দিলরুবা আক্তার বলেন, টাকা নেয়ার অভিযোগটি মিথ্যা। বেশ কিছু দিন ঔষধের সরবরাহ ছিল না। গত কয়েকদিন আগে ঔষধ আসছে। আমি স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালন করছি। স্বাস্থ্য বিভাগের একজন মাঝেমধ্যে আসেন।

শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. আকিজ উদ্দিন বলেন, এফডব্লিওভি মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকেন। সরকারি ঔষধ দিয়ে টাকা নেয়ার কোন বিধান নেই। এমনটা করে থাকলে সেইটা অপরাধ।

সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) চিকিৎসক তানজিদ তামান্না দিনা বলেন, সেখানে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের ঔষধ সরবরাহ আছে। ঔষধের বিনিময়ে টাকা নেয়া মোটেও বিধি সম্মত নয়। সরকারি ঔষধ ক্রয়-বিক্রয় দুটোই দন্ডনীয় অপরাধ। প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

‎ঢাকা কলেজে হামলার প্রতিবাদে লালমনিরহাট সরকারি কলেজে শিক্ষকদের কর্মবিরতি

SBN

SBN

সরাইলে সরকারি ঔষধ পেতে গুনতে হয় টাকা

আপডেট সময় ০৫:৫২:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

দীপক কুমার দেব নাথ,
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহজাদাপুর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সরকারি ঔষধ পেতে গুনতে হয় টাকা। এমন অভিযোগ ঔষধ নিতে আসা স্থানীয় রোগীদের।

তবে বাস্তবে ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে নেই কোন মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট সহ অন্যান্য লোকবল। সপ্তাহে ২-৩ দিন সেখানে বসে ঔষধ বিতরণ করেন অফিস সহায়ক প্রানেশ কুমার নামের এক জন। পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকার(এফডব্লিওভি) দায়িত্ব পালন করেন দিলরুবা আক্তার।

রোগীদের অভিযোগ চিকিৎসক তো নেই-ই তার ওপর টাকা ছাড়া মিলে না কোন সরকারি ঔষধ। তারা বলছিলেন আগে দিতে হতো ২০ টাকা। এরপর ৩০ এখন দিতে হচ্ছে ৪০ টাকা। তবে দায়িত্বে নিয়োজিতরা সরকারি ঔষধ দিয়ে টাকা নেয়ার বিষয়টি মিথ্যা বলে জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, সরকারি ঔষধ ফ্রি। টাকা নেয়ার প্রশ্নই আসে না। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে । সরজমিনে দেখা যায়, গত রোববার ঘড়ির কাটায় সকাল ১০টা ৫ মিনিট। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আশপাশের গ্রাম থেকে আসা শিশুদের নিয়ে ২০-২৫ জন মহিলার দল লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তারা একজন একজন করে ভেতরে প্রবেশ করেছেন। কিছুক্ষণ পর হাতে করে ঔষধ নিয়ে বেড়িয়ে আসছেন।

এখানে কেমন চিকিৎসা চলছে জানতে চাইলে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৩-৪ জন মহিলা বলতে থাকেন, আমরা অনেক কষ্ট করে এখানে আসি চিকিৎসা নিতে। শিশু ও আমাদের সমস্যার চিকিৎসার উদ্যেশ্যে আসি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এখানে কোন চিকিৎসক নেই। ঔষধ দিতেন একজন ফার্মাসিস্ট তিনিও আসেন না। নেই এমএলএসএসও। বলতে গেলে স্বাস্থ্য বিভাগের কোন লোকই নেই। প্রাণেষ নামের একজন লোক আসেন মাঝে মধ্যে। কয়েকটা টাকা নিয়ে তিনি কিছু ঔষধ দেন। আর ওদিকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একজন মহিলা বসেন। মা ও শিশুদের দেখে তিনি সিরাপ আর ট্যাবলেট দেন। এর জন্য তিনি আগে আমাদের কাছ থেকে নিতেন ২০ টাকা। এখন তিনি ৪০ টাকার কম দিলে ঔষধ দেন না। সরকার নাকি আমাদেরকে বিনামূল্যে ঔষধ দিয়েছেন। তাহলে আবার টাকা নেয় কেন?

আরেক মহিলা বলেন, আমার দুই বাচ্চার ঔষধের জন্য ৮০ টাকা দিতে হয়েছে। কার কাছে অভিযোগ করবো? এদের অনেক ক্ষমতা। অভিযোগ দিলে আমাদেরকে উল্টো বিপদে ফেলে দিবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) দিলরুবা আক্তার বলেন, টাকা নেয়ার অভিযোগটি মিথ্যা। বেশ কিছু দিন ঔষধের সরবরাহ ছিল না। গত কয়েকদিন আগে ঔষধ আসছে। আমি স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালন করছি। স্বাস্থ্য বিভাগের একজন মাঝেমধ্যে আসেন।

শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. আকিজ উদ্দিন বলেন, এফডব্লিওভি মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকেন। সরকারি ঔষধ দিয়ে টাকা নেয়ার কোন বিধান নেই। এমনটা করে থাকলে সেইটা অপরাধ।

সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) চিকিৎসক তানজিদ তামান্না দিনা বলেন, সেখানে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের ঔষধ সরবরাহ আছে। ঔষধের বিনিময়ে টাকা নেয়া মোটেও বিধি সম্মত নয়। সরকারি ঔষধ ক্রয়-বিক্রয় দুটোই দন্ডনীয় অপরাধ। প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।