
যতিচিহ্ন
দেবদিয়া মজুমদার
কিচ্ছু চাইনি আমি,
আজীবন ভালোবাসা ছাড়া
মা বলেছে আমি খুব স্বার্থপর
হাজার হাজার মানুষ ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধে
প্যালেস্টাইন এর যুদ্ধে-
প্রাণ শপে দিয়েছে,
ভেঙে পড়েছে হাজার হাজার ঘর বাড়ি,
আমি এখানে দাঁড়িপাল্লায় বসাই
তুচ্ছ এক টুকরো ভালোবাসা কে?
জানলা দিয়ে বিকেলের পড়ন্ত রোদ্দুরে
নাকটা কোনওক্রমে কুঁচকে বের করে,
দেখতাম, বাবাই এর মা তাকে হাথ ধরে
স্কুল থেকে নিয়ে আসছে-
আমার স্কুলগাড়ি চলে গেলো মিনিট কুড়ি হবে?
অন্ধকার এক ময়দান-এর মত বড় ডাইনিং রুমের একপ্রান্তে,
ঠাণ্ডা এক থালা ভাত-ডাল-আলুভাজা রাখা…
স্টীল এর গ্লাস এর জলের ঘন -নিকষ কালো অন্ধকারে,
সারাজীবন মিশিয়েছি আমার অবাধ্য প্রত্যাশা গুলো –
কিছু চাইনি আমি,
আজীবন ভালোবাসা ছাড়া
কলেজের পরীক্ষার পর বন্ধুদের বাবা-মায়েরা তাদের বিরিয়ানি খাওয়াতে নিয়ে গ্যাছে,
আমি কোলবালিশের উপুড় হয়ে অঝোরে কেঁদেছিলাম…
চোয়ালে ভুট্টা চিবানোর ব্যথা–
আমি তো সাইড-ওয়াক এ দাড়িয়ে থাকা ওই বাচ্চাটা–
চপ-এর দোকানে ভিড় দেখি,
মানুষের ক্ষিধে মিটতে দেখি
ভালোবাসা বিক্রি হলে আমিও কিনতাম ৫০ টাকার এক প্লেট
ক্ষিধে মেটানোর জন্য,
অথচ সারাজীবন, সেই ৫০ টাকাটা থাকা সত্বেও
আমি হাথ পেতেছি মনে হয়েছে
ফুটপাত এর সেই বাচ্ছাটার মতো কাঙালের জন্ম আমার,
বিধাতার পরিহাসে, যোগ্যতা থাকলেও ভিক্ষা চাই
দূরের থেকে কাঙালের মতনই আকুল চোখে চেয়ে যাই —
মা ভুল বুঝতো আমাকে…
আমি তো “আজীবন ভালোবাসা” চাইনি!
একটা শব্ধ আগে বিরতির জন্য
আমাকে এতটা স্বার্থপর কেনো ভাবতো মা?
সেই সাইডওয়াক এ দাড়িয়ে থাকা
বাচ্ছাটার পেঁয়াজি আলুর চপ এর
তুচ্ছ চাওয়ার মতনই,
কিচ্ছু চাইনি আমি আজীবন,
ভালোবাসা ছাড়া ।।
~দেবদিয়া মজুমদার,
( প্রাণিবিদ্যা বিভাগ )
ব্যারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজ।