ঢাকা ০৮:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালোবাসায় সিক্ত

ভালোবাসায় সিক্ত
দিলরুবা।

প্রতিটি সুুন্দরের জন্য বীজ বুনতে হয় ভালোবাসা দিয়ে।আর ভালবাসার স্পন্দন হৃদয়ে অনুভুতি পাওয়া জন্য অংকন করতে হয় ভালবাসা নামক স্বপ্নের জাল বা নেটওয়ার্ক।।

এরই মধ্যেই খুঁজে নিতে হয় ভালোলাগা ভালোবাসার অনুভুতি।।ভালোবাসার অনুভুতির তৈরি হয় কাব্য,কবিতা,, গীতাঞ্জলির মত মনমন্দিরে।
প্রেমিক প্রেমিকা সংসার, ছেলেমেয়ে কর্মস্হল,বন্ধু-বান্ধব ভ্রমন,প্রকৃতি ইত্যাদির মাঝে। কোন না কোন ভাবে জড়িয়ে থাকে আমাদের হৃদয়ে ভালোবাসার অনুভুতি।। যা কখনো আমাদের মনকে ব্যথাতুর করে আবার কখনও কখনও পুলকিত করে। ঠিক তেমনি ২০১৮ সাল….
আমার চাকুরী জীবনের শেষ অধ্যায়… আমি চাকুরী ছেড়ে সংসারে।

তখনকার সময়েরএকটি ঘটনা,
আমার একজন সদস্যের ফেলে
আসার অনুভুতি আজ শেয়ার করলাম।
যার কথা বলছি সে ১৪নং আউট ফলের বাসিন্দা।
সিটি কর্পোরেশন চাকুরী করেন।তার নাম মমতাজ বেগম। সে দীর্ঘ ২২বছর আমার সাথে কাজে জড়িত ছিল।

তার স্বামীর নাম মুসলেম। দুই ছেলে, একমেয়ে….
রনি জনি.. আর আলো।
এই নিয়েই তার সংসার ছিল।
তার পরিবারের যে কোন সমস্যা ভালো,মন্দ আমাকে বলতো।
কোন পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমার কাছে ওরা আসতো।
আর আমিও তাঁদের সাথে চলতে চলতে মনের অজান্তেই একটু একটু করে ভালোবাসে ফেলেছিলাম।

প্রতিদিনই তাদের সাথে কথা বিনিময় হয়তো।
এতে করে একটি শক্তবন্ধন তৈরি হয়ে গেলো।
ঠিক ঐ মূহুর্তে আমার প্রেজেক্ট ক্লোজ হওয়াতে চলে আসি।

এর কিছু দিন পর প্রায় পাঁচ মাস পরের ঘটনা।
তার ছোট ছেলে জনি পুকুরে বন্ধুদের সাথে সাঁতার প্রতিযোগীতায় করতে গিয়ে মারা যায়। পানিতে কিছুক্ষণ… সাঁতার কাঁটার পর, ডুব দিলে পরে আর তাকে দেখা যায়নি।
তখন বন্ধুদের চিল্লাচিল্লিতে মহল্লার লোকজন জড়ো হয় এবং ডুবুরী এসে তাকে মৃত উদ্ধার করেন।

ঠিক সেই দিনই তার মা মমতাজ বেগম,
ছেলের বিয়োগ ব্যথায় কান্নায় জর্জরিত পাগল প্রায়।

ছেলেকে কবর ও দেওয়া হয়নি।
তখন আমার অফিসের একজন কলিগকে দেখে তার কষ্টের আবেগ জড়িত কন্ঠে বার বার আকুতি, মিনতি করে বলেছিল মমতাজ বেগম।
আমার দিলরুবা আপাকে বলবেন, আমার ছেলের মৃত্যুর সংবাদটা।

এই কথাটি আমি জানতে পারি মৃত্যুর পাঁচ ছয় দিন পর।তখন আমি অনুভব করেছিলাম সত্যি একজন মানুষ আর একজন মানুষকে কতটা ভালোবাসলে নিজের কলিজার টুকরো সন্তানকে লাশ দেখে ও তার কষ্ট অন্য একজন ভালোবাসার মানুষকে জানাতে চায়।ঐদিন আমি ও কষ্টে অনেক কেঁদে ছিলাম। তারপর আবশ্য মাস খানেক পরে, উনার সাথে দেখা করেছিলাম। আমাকে দেখে আবারও সেই কাঁন্না জড়িত কন্ঠে ছেলের স্মৃতিচারন করেন।এইগুলো ছিলো আমার জন্য খুবই কষ্টের।ভালোবাসা হৃদয় ছু্ঁয়ে যায় আবার হৃদয় তছনছ ও করে ।।আমার অবস্হা ও তখন ঠিক সেই রকম হয়ে ছিল…
ভাষা হারিয়ে ফেলি।

সত্যি সত্যি ভালোবাসা পেতে হলেও যে নিজেকে ভালোবাসার যোগ্য করে তুলতে হয়।সেই দিন আবার নতুন করে শিখলাম। সত্যিকারের ভালোবাসা পেতে হলে অন্যকেও ভালোবাসতে হয় এটাই প্রমাণ মেলে। তবে উন্মুক্ত ভালোবাসা টিকে থাকে যুগ যুগ ধরে।।।আমি আজ ও তাঁদেকে প্রচণ্ড ভালোবাসি।।।।
তার ছেলের জন্য প্রার্থনা করি আল্লাহ
যেনো তাকে জান্নাতের বাগিচা দান করেন।আমিন
৩০-০৩-২০২১ইং,সাল।
দিলরুবা।।।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভালোবাসায় সিক্ত

আপডেট সময় ০৮:৪৬:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

ভালোবাসায় সিক্ত
দিলরুবা।

প্রতিটি সুুন্দরের জন্য বীজ বুনতে হয় ভালোবাসা দিয়ে।আর ভালবাসার স্পন্দন হৃদয়ে অনুভুতি পাওয়া জন্য অংকন করতে হয় ভালবাসা নামক স্বপ্নের জাল বা নেটওয়ার্ক।।

এরই মধ্যেই খুঁজে নিতে হয় ভালোলাগা ভালোবাসার অনুভুতি।।ভালোবাসার অনুভুতির তৈরি হয় কাব্য,কবিতা,, গীতাঞ্জলির মত মনমন্দিরে।
প্রেমিক প্রেমিকা সংসার, ছেলেমেয়ে কর্মস্হল,বন্ধু-বান্ধব ভ্রমন,প্রকৃতি ইত্যাদির মাঝে। কোন না কোন ভাবে জড়িয়ে থাকে আমাদের হৃদয়ে ভালোবাসার অনুভুতি।। যা কখনো আমাদের মনকে ব্যথাতুর করে আবার কখনও কখনও পুলকিত করে। ঠিক তেমনি ২০১৮ সাল….
আমার চাকুরী জীবনের শেষ অধ্যায়… আমি চাকুরী ছেড়ে সংসারে।

তখনকার সময়েরএকটি ঘটনা,
আমার একজন সদস্যের ফেলে
আসার অনুভুতি আজ শেয়ার করলাম।
যার কথা বলছি সে ১৪নং আউট ফলের বাসিন্দা।
সিটি কর্পোরেশন চাকুরী করেন।তার নাম মমতাজ বেগম। সে দীর্ঘ ২২বছর আমার সাথে কাজে জড়িত ছিল।

তার স্বামীর নাম মুসলেম। দুই ছেলে, একমেয়ে….
রনি জনি.. আর আলো।
এই নিয়েই তার সংসার ছিল।
তার পরিবারের যে কোন সমস্যা ভালো,মন্দ আমাকে বলতো।
কোন পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমার কাছে ওরা আসতো।
আর আমিও তাঁদের সাথে চলতে চলতে মনের অজান্তেই একটু একটু করে ভালোবাসে ফেলেছিলাম।

প্রতিদিনই তাদের সাথে কথা বিনিময় হয়তো।
এতে করে একটি শক্তবন্ধন তৈরি হয়ে গেলো।
ঠিক ঐ মূহুর্তে আমার প্রেজেক্ট ক্লোজ হওয়াতে চলে আসি।

এর কিছু দিন পর প্রায় পাঁচ মাস পরের ঘটনা।
তার ছোট ছেলে জনি পুকুরে বন্ধুদের সাথে সাঁতার প্রতিযোগীতায় করতে গিয়ে মারা যায়। পানিতে কিছুক্ষণ… সাঁতার কাঁটার পর, ডুব দিলে পরে আর তাকে দেখা যায়নি।
তখন বন্ধুদের চিল্লাচিল্লিতে মহল্লার লোকজন জড়ো হয় এবং ডুবুরী এসে তাকে মৃত উদ্ধার করেন।

ঠিক সেই দিনই তার মা মমতাজ বেগম,
ছেলের বিয়োগ ব্যথায় কান্নায় জর্জরিত পাগল প্রায়।

ছেলেকে কবর ও দেওয়া হয়নি।
তখন আমার অফিসের একজন কলিগকে দেখে তার কষ্টের আবেগ জড়িত কন্ঠে বার বার আকুতি, মিনতি করে বলেছিল মমতাজ বেগম।
আমার দিলরুবা আপাকে বলবেন, আমার ছেলের মৃত্যুর সংবাদটা।

এই কথাটি আমি জানতে পারি মৃত্যুর পাঁচ ছয় দিন পর।তখন আমি অনুভব করেছিলাম সত্যি একজন মানুষ আর একজন মানুষকে কতটা ভালোবাসলে নিজের কলিজার টুকরো সন্তানকে লাশ দেখে ও তার কষ্ট অন্য একজন ভালোবাসার মানুষকে জানাতে চায়।ঐদিন আমি ও কষ্টে অনেক কেঁদে ছিলাম। তারপর আবশ্য মাস খানেক পরে, উনার সাথে দেখা করেছিলাম। আমাকে দেখে আবারও সেই কাঁন্না জড়িত কন্ঠে ছেলের স্মৃতিচারন করেন।এইগুলো ছিলো আমার জন্য খুবই কষ্টের।ভালোবাসা হৃদয় ছু্ঁয়ে যায় আবার হৃদয় তছনছ ও করে ।।আমার অবস্হা ও তখন ঠিক সেই রকম হয়ে ছিল…
ভাষা হারিয়ে ফেলি।

সত্যি সত্যি ভালোবাসা পেতে হলেও যে নিজেকে ভালোবাসার যোগ্য করে তুলতে হয়।সেই দিন আবার নতুন করে শিখলাম। সত্যিকারের ভালোবাসা পেতে হলে অন্যকেও ভালোবাসতে হয় এটাই প্রমাণ মেলে। তবে উন্মুক্ত ভালোবাসা টিকে থাকে যুগ যুগ ধরে।।।আমি আজ ও তাঁদেকে প্রচণ্ড ভালোবাসি।।।।
তার ছেলের জন্য প্রার্থনা করি আল্লাহ
যেনো তাকে জান্নাতের বাগিচা দান করেন।আমিন
৩০-০৩-২০২১ইং,সাল।
দিলরুবা।।।