
অণুগল্প
সুস্মিতা
“কি যেন নাম বললে মা তুমি এই নতুন প্রিপারেশনটার? চিকেন মোজারেলা উইথ হানি, তাইনা?” আঙুল চাটতে চাটতে জিজ্ঞেস করল মেয়ে রচনা। মায়ের হাতের রান্না নিয়ে মেয়ের মুগ্ধতা আর শেষ হয়না। সেটা অবশ্যই স্বাভাবিক। সে বলেই চলল ”সত্যিই মা, তোমার মতো নিত্যনতুন প্রিপারেশন আর কেউ করতেই পারেনা। আমার শাশুড়ি তো এইসব রান্নার নামই শোনেননি কোনোদিন। তুমি কিন্ত এটার রেসিপি আমাকে ঠিকমতো বলে দেবে।”
গরবিনী মা মুখে অহংকারী হাসি মাখিয়ে বলতে শুরু করলেন -”প্রথমে বোনলেস চিকেন পিসগুলো ঘন্টাখানেক… তারপরে …” রেসিপিটি বেশ যত্নসহকারে নিখুঁত ব্যাখ্যা করলেন সুনয়নার শাশুড়ি। তাঁর পর্যবেক্ষণ শক্তি চমৎকার। এবং তিনি পলিটিক্যালি কারেক্ট। ননদ একটি রেসিপি চেয়েছে, শাশুড়ি সেটি জানেন, অতএব তিনি জানাচ্ছেন। দৃশ্যটিতে কোনও ভুল নেই।
শুধু ভারি যত্নসহকারে শাশুড়ি এড়িয়ে গেলেন একটি তথ্য, একবারও বললেননা যে ”আজকের সব রান্নাই কিন্তু নূতন বৌমা সুনয়না করেছে।”
রান্নাঘরে এঁটো বাসন গোছাতে গোছাতে সুনয়নার ঠোঁটের কোণে আজও একটু পাতলা হাসি ফুটে উঠল …
যদিও এবাড়ির বউ হয়ে আসার পর থেকে গত কয়েক মাসে ও এই ব্যাপারটার সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠছে।
সুনয়না আজকাল মনে মনে ”প্ল্যাজিয়ারিসম” শব্দটা নিয়ে প্রায়ই নাড়াচাড়া করে। শব্দটার মানেটা যেন কি? “কারুর সৃষ্টিশীল কাজের কৃতিত্ব চুরি করাকেই তো প্ল্যাজিয়ারিসম বলা হয়”- তাইনা?