ঢাকা ০১:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo চীন থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ হওয়া মানে বিশ্ব থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ হওয়া: কিশোর মাহবুবানি Logo অভ্যন্তরীণ চাহিদা সম্প্রসারণে চীনের কৌশল: সি চিন পিংয়ের প্রবন্ধে বিশ্লেষণ Logo চীনে আমদানি-রপ্তানিতে গতি, অর্থনীতিতে ইতিবাচক সংকেত Logo রিয়াদে চীন-সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কৌশলগত সংলাপ Logo ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১: বিজয়ের পরদিন, রাষ্ট্র গঠন ও যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতির পুনর্গঠনের প্রথম দিন Logo সুবিদাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ Logo মহান বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢাকা প্রেসক্লাবের শ্রদ্ধা নিবেদন Logo কটিয়াদীতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি Logo বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জনসাধারণের জন্য ৭ টি জাহাজ উন্মুক্ত করেছে কোস্ট গার্ড Logo বরুড়ায় বিজয় দিবস উপলক্ষে মহিলা দলের আলোচনা সভা ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত

কালীগঞ্জে ভাংগাড়ি ব্যবসায়ীকে আটকের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

শাহিনুর রহমান পিন্টু, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভাংগাড়ি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ও আটকের ভয় দেখিয়ে ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে।

গত ২১ মার্চ ঘটনাটি ঘটলেও এত দিন তিনি ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি। ভুক্তভোগী ফরিদুল ইসলাম কালীগঞ্জ শহরের পৌরসভার পাশে পুরাতন জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয় করেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে বেশ আতংকে রয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ফরিদুল ইসলাম বলেন, গত ২১ মার্চ ২৫০ টাকায় একটি পুরাতন বাইসাইকেল ওজনে ক্রয় করেন তিনি। পরে কালীগঞ্জ থানার এস আই সিরাজ তাকে ফোন দিয়ে বলেন তোমার কাছে ভাঙ্গা কোন সাইকেল আছে। তিনি উত্তরে বলেন, একটা ছেলে বিক্রয় করেছে। সাইকেলটি আছে। এর পরে এসআই মাখন তাকে ফোন দিয়ে বলেন, সন্ধ্যার পর সাইকেলটি আমাদের কাছে দিয়ে যাবেন। পরে সন্ধ্যার দিকে এস আই প্রতিক কুমার দওসহ কয়েকজন পুলিশ এসেছিল আমার দোকানে। এ সময় ওসির এক ভাইও ছিল তাদের সাথে। ইফতারের পর হওয়ায় দোকানে তিনি ও তার ছেলে ছিলেন। দোকান থেকে তাকে ডেকে নিয়ে পাশের একটি স’মিলে নিয়ে যান এসআই প্রতিক। তখন এসআই প্রতিক তাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখান। ওসি আপনাকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করবে। তুমি চোরাই সিন্ডিকেটের সাথে আছো। তোমাকে টেনে-হেঁচড়ে থানায় নিয়ে যেতে বলেছে ওসি স্যার। তিনি বলেন, একপর্যায়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই প্রতিক। এর দুই মিনিট পরে ওসির ভাই (জুম্মন- ওসির বন্ধু) পরিচয় দেওয়া একজন ৩০ হাজার টাকা দিতে বলেন। এরপর কথা বললেই টাকার পরিমাণ বেড়ে যায়। পরে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন ওসির ভাই জুম্মন।

ওসির ভাই জুম্মন বিভিন্ন জায়গায় এস আই পরিচয় দেয়। কালীগঞ্জ থানার একএসআই নাম পরিচয় গোপন রেখে বলেন জুম্মন ওসি স্যারের বন্ধু হয়। জুম্মন সহ কিছু এসআই আছে তারা বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষকে অতিষ্ঠ করে দিয়েছে।

ফরিদুল মানসম্মান বাঁচাতে সাথে সাথে ৩০ হাজার টাকা এসআই প্রতিককে দেন ও পরের দিন ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। আমাকে ব্লাকমেইল করে টাকাগুলো নিয়েছে। পরে সেই সাইকেলও নিয়ে যায় পুলিশ।

ভাংগাড়ি ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম আরো বলেন, তিনি দীর্ঘদিন এই ভাংগাড়ি ব্যবসার সাথে জড়িত। তার এই দোকানে ৩০ জনের বেশি কাজ করে। তারা সারাদিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে পুরাতন প্লাস্টিক ও লোহার জিনিসপত্র কিনে আনে। সেটা তার কাছে বিক্রি করে চলে যায়। তিনি কোন চোরাই সিন্টিকেটের সাথে জড়িত না। এছাড়া বিভিন্ন সময় তার দোকানে পুলিশ এসে বসে। বিভিন্ন তথ্য জানতে চায়। তিনি তাদের আপ্যায়নসহ তথ্য দিয়েও সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু তার সাথে এমন ব্যবহার করবে সেটা তিনি ভাবতেও পারেননি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই প্রতিক কুমার দত্তর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ব্যবসায়ী ফরিদুল একটা চুরি যাওয়া সাইকেল কিনেছিলেন। সেই সাইকেল উদ্ধার করে মালিককে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার কথা কোনো বিশ্বাসযোগ্য কথা হতে পারে বলেন ভাই।ল? এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আবু আজিফ জানান, বিষয়টি শুনে তিনি ভাংড়ি ব্যবসায়ী ফরিদুলকে থানায় ডেকেছিলেন। ওই ব্যবসায়ী আগামী ৩০ তারিখে বিস্তারিত কথা বলবেন।

পুলিশের কেউ যদি আইন অমান্য করে অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত হয় তাহলে তার দায় তাকেই নিতে হবে; পুলিশ বিভাগকে নয়। ২৫০ টাকার সাইকেলে ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টি অনেকটাই অবিশ্বাস্য। এ ঘটনায় অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চীন থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ হওয়া মানে বিশ্ব থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ হওয়া: কিশোর মাহবুবানি

SBN

SBN

কালীগঞ্জে ভাংগাড়ি ব্যবসায়ীকে আটকের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

আপডেট সময় ১১:৫৩:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

শাহিনুর রহমান পিন্টু, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভাংগাড়ি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ও আটকের ভয় দেখিয়ে ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে।

গত ২১ মার্চ ঘটনাটি ঘটলেও এত দিন তিনি ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি। ভুক্তভোগী ফরিদুল ইসলাম কালীগঞ্জ শহরের পৌরসভার পাশে পুরাতন জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয় করেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে বেশ আতংকে রয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ফরিদুল ইসলাম বলেন, গত ২১ মার্চ ২৫০ টাকায় একটি পুরাতন বাইসাইকেল ওজনে ক্রয় করেন তিনি। পরে কালীগঞ্জ থানার এস আই সিরাজ তাকে ফোন দিয়ে বলেন তোমার কাছে ভাঙ্গা কোন সাইকেল আছে। তিনি উত্তরে বলেন, একটা ছেলে বিক্রয় করেছে। সাইকেলটি আছে। এর পরে এসআই মাখন তাকে ফোন দিয়ে বলেন, সন্ধ্যার পর সাইকেলটি আমাদের কাছে দিয়ে যাবেন। পরে সন্ধ্যার দিকে এস আই প্রতিক কুমার দওসহ কয়েকজন পুলিশ এসেছিল আমার দোকানে। এ সময় ওসির এক ভাইও ছিল তাদের সাথে। ইফতারের পর হওয়ায় দোকানে তিনি ও তার ছেলে ছিলেন। দোকান থেকে তাকে ডেকে নিয়ে পাশের একটি স’মিলে নিয়ে যান এসআই প্রতিক। তখন এসআই প্রতিক তাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখান। ওসি আপনাকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করবে। তুমি চোরাই সিন্ডিকেটের সাথে আছো। তোমাকে টেনে-হেঁচড়ে থানায় নিয়ে যেতে বলেছে ওসি স্যার। তিনি বলেন, একপর্যায়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই প্রতিক। এর দুই মিনিট পরে ওসির ভাই (জুম্মন- ওসির বন্ধু) পরিচয় দেওয়া একজন ৩০ হাজার টাকা দিতে বলেন। এরপর কথা বললেই টাকার পরিমাণ বেড়ে যায়। পরে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন ওসির ভাই জুম্মন।

ওসির ভাই জুম্মন বিভিন্ন জায়গায় এস আই পরিচয় দেয়। কালীগঞ্জ থানার একএসআই নাম পরিচয় গোপন রেখে বলেন জুম্মন ওসি স্যারের বন্ধু হয়। জুম্মন সহ কিছু এসআই আছে তারা বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষকে অতিষ্ঠ করে দিয়েছে।

ফরিদুল মানসম্মান বাঁচাতে সাথে সাথে ৩০ হাজার টাকা এসআই প্রতিককে দেন ও পরের দিন ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। আমাকে ব্লাকমেইল করে টাকাগুলো নিয়েছে। পরে সেই সাইকেলও নিয়ে যায় পুলিশ।

ভাংগাড়ি ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম আরো বলেন, তিনি দীর্ঘদিন এই ভাংগাড়ি ব্যবসার সাথে জড়িত। তার এই দোকানে ৩০ জনের বেশি কাজ করে। তারা সারাদিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে পুরাতন প্লাস্টিক ও লোহার জিনিসপত্র কিনে আনে। সেটা তার কাছে বিক্রি করে চলে যায়। তিনি কোন চোরাই সিন্টিকেটের সাথে জড়িত না। এছাড়া বিভিন্ন সময় তার দোকানে পুলিশ এসে বসে। বিভিন্ন তথ্য জানতে চায়। তিনি তাদের আপ্যায়নসহ তথ্য দিয়েও সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু তার সাথে এমন ব্যবহার করবে সেটা তিনি ভাবতেও পারেননি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই প্রতিক কুমার দত্তর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ব্যবসায়ী ফরিদুল একটা চুরি যাওয়া সাইকেল কিনেছিলেন। সেই সাইকেল উদ্ধার করে মালিককে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার কথা কোনো বিশ্বাসযোগ্য কথা হতে পারে বলেন ভাই।ল? এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আবু আজিফ জানান, বিষয়টি শুনে তিনি ভাংড়ি ব্যবসায়ী ফরিদুলকে থানায় ডেকেছিলেন। ওই ব্যবসায়ী আগামী ৩০ তারিখে বিস্তারিত কথা বলবেন।

পুলিশের কেউ যদি আইন অমান্য করে অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত হয় তাহলে তার দায় তাকেই নিতে হবে; পুলিশ বিভাগকে নয়। ২৫০ টাকার সাইকেলে ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টি অনেকটাই অবিশ্বাস্য। এ ঘটনায় অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।