এ জে সোহেল, স্টাফ রিপোর্টার
প্রেমের ফাঁদে ফেলে ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলিং এর মাধ্যমে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে ৭ প্রতারককে গ্রেফতার করেন কুমিল্লার ডিবি পুলিশ। প্রতারণার সময় আটককৃতরা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ ও সাংবাদিকদের পরিচয় দিয়ে বিশাল অঙ্কের টাকা আদায় করে আসছিল। ০৪ মে ২৪ ইং রোজ শনিবার দুপুরে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।
ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন সময়ে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এ সময়ে চাঁদা আদায়ের জন্য ব্যবহৃত ভুক্তভোগির স্বাক্ষরিত সাতটি অলিখিত স্টাম্প, স্বাক্ষরিত সাতটি খালি ব্যাংক চেক উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় প্রতারক চক্রটি আর্থিকভাবে সচল ব্যক্তিদের টার্গেট করে সম্পর্কের একপর্যায়ে এই চক্রে সুন্দরী মহিলাদের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে ঘনিষ্ঠ সময় কাটানোর ভিডিও চিত্রধারণ করে ব্ল্যাকমেইলিং শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ /১/ ২০২৪ ইং তারিখ আনুমানিক ৩ ঘটিকার সময় প্রতারক চক্রের সদস্য তাসনুভা ও মোজাম্মেল এর পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শারীরিক সম্পর্কের প্রলোভনে কোতোয়ালি থানা দিন ভালোতোফা গ্রামের মো: কবির হোসেনের বাড়িতে অনতি কাজের ভিডিও ধারণ করে, ধারণকৃত ভিডিও দেখিয়ে ভিকটিমের কাছ থেকে ৩০০০০ হাজার টাকা সাতটি খালি স্টাম্প, সাতটি চেক ও নগদ ২ লক্ষ টাকা প্রাথমিকভাবে আদায় করে,পরবর্তীতে আরো ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দেয়ার শর্তে ভিকটিমকে ছেড়ে দেয়। ঘটনা শেষ এখানেই নয় ভুয়া সাংবাদিক পরিচয়দানকারী মোজাম্মেল হক কাল সময় নামক টিভি নিউজ তাদের ধারণকৃত অনৈতিক ভিডিও দিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। এতে ভিকটিম তার মান সম্মানের কথা চিন্তা করে উপায় না পেয়ে নগদ এবং বিকাশের মাধ্যমে সর্বমোট ২৯ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা চাঁদা প্রদান করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা গোয়েন্দা সদস্যরা সৈয়দ আয়াতুল্লাহ কে সনাক্তপূর্বক কান্দিরপাড় টাউন হলের রাস্তা হতে দিবাগত রাত দেড়টার সময় গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে
ব্যবহৃত একটি সিমসহ বাটন ফোন সাতটি স্ট্যাম্প, সাতটি চেক উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
গ্রেপ্তার প্রতারক চক্রের সদস্যরা হল, ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়া সৈয়দ অয়াত উল্যাহ(৩৭) মোজাম্মেল হক (৩৬) মোঃ আব্দুর রহিম (৪২)
সাখাওয়াত হোসেন(২৮) এর নাম প্রকাশ করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের তথ্য মতে মো: মোজাম্মেল (৩৬) ও আব্দুর রহিম (৪২) কে কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানাধীন নিজ গ্রামস্থ আসামিদের নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় নগদ ২৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামি আয়াতুল্লাহ ও সাখাওয়াতের দেয়া তথ্য মতে অপর পরিকল্পনাকারী একমাত্র নারী সদস্য তাসনুবা আক্তার কে কুমিল্লা চান্দিনা থানাধীন কেশোরা গ্রাম হতে ভোর পাঁচটা ত্রিশ মিনিটে গ্রেফতার করা হয়।
একই তারিখে সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান আরো জানান কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় ডাকাতি প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ ৫ ডাকাত গ্রেফতারে সক্ষম হয়। ।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতি পরিকল্পনা বিষয়টি স্বীকার কর। আসামিরা জানায় তারা গৌরীপুর এলাকার বাসা বাড়িতে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে সমবেত হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট এলাকাটি রে কি করে ডাকাতি করার পূর্বে তারা বৃষ্টির রাত অমাবস্যার রাত বা তার আগে পরে এবং অন্ধকার রাত্রিতে ডাকাতি করে থাকে বলে জানায়। জিজ্ঞাসাবাদের কতিপয় ডাকাতের নাম আরো প্রকাশ করেছে তদন্ত স্বার্থে আপাতত প্রকাশ করা হলো না।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো মোঃ মিলন মিয়া, মোঃ মামুন মিয়, মোঃ বাবু মিয়া, মোঃ রিদয় মিয়া, পারভেজ এদের সকলের নামেই এক বা একাধিক ডাকাতি মামলা পূর্বের দায়ের করা আছে। এচক্রটি আন্ত জেলা ডাকাত ।দলের সক্রিয় সদস্য এরা।
এ সংক্রান্তের দাউদকান্দি মডেল থানার মামলা নং ০৩ তারিখ ৪/৫/২০১৪ ধারা ১৮৭৮ সালের অস্ আইন ১৯এ/১৯এফ এবং দাউদকান্দি মডেল থানার মামলা নং ০৪ তারিখ ৪-৫-২৪ ধারা ৩৯৯/ ৪০২ প্যানেল কোড রুজু করা হয়েছে।