বৃষ্টিস্নাত
সংদীপ্তা
একটু বড়ো হওয়ার পর থেকেই
আর বৃষ্টি ভিজিনি কোনোদিন।
দাঁড়িয়ে পড়েছি।
ছাউনির তলায় অপেক্ষা করেছি বৃষ্টি থামবার।
বড়ো ইচ্ছে করে বৃষ্টির কাছে যেতে।
আজও একঝাঁক বৃষ্টির সামনে নিজেকে মেলে ধরতে ইচ্ছে করে খুব।
কিন্তু এখন আর অমন করে বৃষ্টি ভেজা যায়না।
এই বয়সটাই ভীষণ খারাপ!
সকলের কুনজর থাকে আমাদের দিকে।
সদাসতর্ক হয়ে বৃষ্টি ভিজবো কীকরে?
অতো ভয়ে ভয়ে শীতল হওয়া যায় বুঝি!
বৃষ্টির জল গায়ে পড়লেই সুতির জামা
শরীরে আঁট হয়ে চেপে বসে।
সে তো ইচ্ছাকৃত নয়।
তবু মা বলে-“ওই পোশাকে বেরোলে
মন্দ বলবে লোকে।”
আর মন্দ হবার ভয়টা তো আমার বরাবরের।
সবদিক ভেবে সাবধানে পা টিপে টিপে
বাড়ি আসি।
আমি তো স্পর্শকাতর-যদি ছুঁয়ে দেয় ভুল লোকে!
যদি দূর থেকে কেউ দেখে আড় চোখে!
যদি কারও ভালো লেগে যায়
ওই বৃষ্টি ধোয়া অঙ্গসৌষ্ঠব!
তবে সেই কথা বাড়িতে জানাবো কোন মুখে?
বৃষ্টি ভিজলেই আমি অশালীন।
তাই বহু দিন হয়ে গেলো,যাইনি বৃষ্টির কাছে।
শুধু বুক ভরে নিয়েছি মাটির সোঁদা গন্ধ।
মাটি ভিজেছে,তবে মনের মাটি রুক্ষ অনেক কাল।
ভাবছি এই বর্ষায় নিয়ম ভাঙলে কেমন হয়?
বৃষ্টির কাছে গিয়ে যদি হাত পাতি!
বদনাম হয়ে যাবে রাতারাতি?
তবে তাই হোক।
নষ্ট মেয়েই হবো নাহয়।
যারা উন্নাসিকের মতোন বৃষ্টি ভেজে,
আনন্দে মশগুল সারারাত।
আমিও তাদেরই দলে-
হাওয়ায় ওড়াবো চুল খোপা খুলে।।