ঢাকা ১২:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা বৈষাম্যের বিরুদ্ধে সিলেটে শিক্ষার্থীদের ১ দফা আন্দোলন

মাহমুদুল ইসলাম ফয়সাল, সুনামগঞ্জ

সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের (প্রতিবন্ধীর) জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে বিল পাস করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

সিলেটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে (১৪ জুলাই) রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে দাবী আদায়ের লক্ষ্যে এক মশাল মিছিল বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিটি পয়েন্টে এক বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়।

এম.সি কলেজের শিক্ষার্থী তানজিনা বেগমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব আহমদ, এম.সি কলেজের আয়শা আক্তার, লিডিং ইউনিভার্সিটির বুশরা সুহাইল, সিলেট সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সানি, মদনমোহন কলেজের শিক্ষার্থী আল মাহমুদ, রাজু আহমদ, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সির শিক্ষার্থী মাশরুখ জলিল, শিক্ষার্থী মোঃ জুয়েন খান, মানবাধিকারীকর্মী আবুল হোসেন শরীফ প্রমুখ সহ সিলেটের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ।

সমাপনী বক্তব্যে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সির শিক্ষার্থী তারেক আহমেদ বলেন, কোটা সংস্কারের ১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরা সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি। স্মারকলিপিতে সংসদের জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া/ অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) আইন পাস এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন কালে যে মামলা করা হয়েছে তা তুলে নেয়ার দাবী জানানো হয়েছে। আমাদের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, আমাদের সর্বজনশ্রদ্ধেয় মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অংশগ্রহণকালে ব্যক্তিগত কোনো সুবিধা চেয়েছিলেন কিনা জানিনা। আমরা ইতিহাস পড়ে, জেনে, শুনে এতটুকু নিশ্চিত যে, এ ভূ-খন্ডের উপর তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের করা নানান সীমাহীন বৈষম্য আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে ওনারা যুদ্ধে গিয়েছেন, জীবনবাজি রেখে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আমরা তাদের সম্মান করি, তাদের যেকোনো সময়ের অসচ্ছলতা, অসুস্থতা, দুর্বলতার প্রেক্ষিতে সহযোগিতার হাত বাড়াতে চাই, তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাই। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকার তাদেরকে ও তাদের পরিবারের পাশে থেকেছে, বিপদে-আপদে সহযোগিতা করছে। বর্তমান সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আরও সম্মানজনক অবস্থানে এসেছে। চিকিৎসা সহ জীবনধারণের প্রয়োজনে বাড়তি আরও সুবিধা সংযুক্ত হয়েছে।

এমতাবস্থায়, চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা কিসের প্রেক্ষিতে, কোন স্বার্থে? এখন না মুক্তিযোদ্ধারা চাকরির প্রতিযোগিতায় নামবে, না তার ছেলেমেয়েরা চাকরিতে প্রতিযোগিতা করবে? ৩য় প্রজন্ম তথা নাতি-পুতিদের জন্য কোটাকে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা’ নাম দেওয়া কি আদৌ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সম্মানজনক দেখায়? এই অস্বাভাবিক কোটা ব্যবস্থা কত প্রজন্ম পর্যন্ত, কত বছর পর্যন্ত চলবে?

এই দেশে সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য থাকবে না। আমরা এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাদের বাপ দাদার কোটায় চাকরী নয় তারা যেনো মেধার ভিত্তিতে চাকরী পায়।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কোটা বৈষাম্যের বিরুদ্ধে সিলেটে শিক্ষার্থীদের ১ দফা আন্দোলন

আপডেট সময় ০৭:৪৮:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪

মাহমুদুল ইসলাম ফয়সাল, সুনামগঞ্জ

সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের (প্রতিবন্ধীর) জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে বিল পাস করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

সিলেটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে (১৪ জুলাই) রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে দাবী আদায়ের লক্ষ্যে এক মশাল মিছিল বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিটি পয়েন্টে এক বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়।

এম.সি কলেজের শিক্ষার্থী তানজিনা বেগমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব আহমদ, এম.সি কলেজের আয়শা আক্তার, লিডিং ইউনিভার্সিটির বুশরা সুহাইল, সিলেট সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সানি, মদনমোহন কলেজের শিক্ষার্থী আল মাহমুদ, রাজু আহমদ, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সির শিক্ষার্থী মাশরুখ জলিল, শিক্ষার্থী মোঃ জুয়েন খান, মানবাধিকারীকর্মী আবুল হোসেন শরীফ প্রমুখ সহ সিলেটের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ।

সমাপনী বক্তব্যে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সির শিক্ষার্থী তারেক আহমেদ বলেন, কোটা সংস্কারের ১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরা সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি। স্মারকলিপিতে সংসদের জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া/ অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) আইন পাস এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন কালে যে মামলা করা হয়েছে তা তুলে নেয়ার দাবী জানানো হয়েছে। আমাদের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, আমাদের সর্বজনশ্রদ্ধেয় মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অংশগ্রহণকালে ব্যক্তিগত কোনো সুবিধা চেয়েছিলেন কিনা জানিনা। আমরা ইতিহাস পড়ে, জেনে, শুনে এতটুকু নিশ্চিত যে, এ ভূ-খন্ডের উপর তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের করা নানান সীমাহীন বৈষম্য আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে ওনারা যুদ্ধে গিয়েছেন, জীবনবাজি রেখে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আমরা তাদের সম্মান করি, তাদের যেকোনো সময়ের অসচ্ছলতা, অসুস্থতা, দুর্বলতার প্রেক্ষিতে সহযোগিতার হাত বাড়াতে চাই, তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাই। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকার তাদেরকে ও তাদের পরিবারের পাশে থেকেছে, বিপদে-আপদে সহযোগিতা করছে। বর্তমান সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আরও সম্মানজনক অবস্থানে এসেছে। চিকিৎসা সহ জীবনধারণের প্রয়োজনে বাড়তি আরও সুবিধা সংযুক্ত হয়েছে।

এমতাবস্থায়, চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা কিসের প্রেক্ষিতে, কোন স্বার্থে? এখন না মুক্তিযোদ্ধারা চাকরির প্রতিযোগিতায় নামবে, না তার ছেলেমেয়েরা চাকরিতে প্রতিযোগিতা করবে? ৩য় প্রজন্ম তথা নাতি-পুতিদের জন্য কোটাকে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা’ নাম দেওয়া কি আদৌ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সম্মানজনক দেখায়? এই অস্বাভাবিক কোটা ব্যবস্থা কত প্রজন্ম পর্যন্ত, কত বছর পর্যন্ত চলবে?

এই দেশে সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য থাকবে না। আমরা এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাদের বাপ দাদার কোটায় চাকরী নয় তারা যেনো মেধার ভিত্তিতে চাকরী পায়।