ঢাকা ০৮:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বরুড়ায় বিজয় দিবস উপলক্ষে মহিলা দলের আলোচনা সভা ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত Logo সুবিধাবঞ্চিত ও ঝরে পড়া শিশুদের নিয়ে সিড ফাউন্ডেশনের বিজয় দিবস উদযাপন Logo ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট এন্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিজয় দিবস পালিত Logo রাঙ্গামাটিতে মহান বিজয় দিবস উদযাপন Logo মুরাদনগরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন Logo বরুড়ায় মহান বিজয় দিবস পালিত Logo মুন্সিগঞ্জে ৩২ কোটি টাকা মূল্যের নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ও সুতা জব্দ Logo ঝিনাইদহে দুই সন্তানের জননীকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা Logo বুড়িচংয়ে অটোরিকশা চালক হত্যাকাণ্ডে মূল আসামি গ্রেফতার Logo কুমিল্লায় বিজয় দিবসে রেলী আলোচনা করেছেন এশিয়া ছিন্নমূল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন

মাছের ব্যবসা করেন শিক্ষক

প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকে নিচ্ছেন বেতন

মাহফুজুর রহমান, মুরাদনগর (কুমিল্লা)

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থেকে মাছের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন এক শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থাকলেও প্রতিনিয়ত প্রদান করছেন স্বাক্ষর। হাজিরা খাতায় উপস্থিতি দেখিয়ে উত্তোলন করেন বেতনের টাকা। বিষয়টি মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ স্থানয়ীরা অবগত থাকলেও অদৃশ্য কারণে নেয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা। দীর্ঘ ৫বছর ধরে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর মোহাম্মদিয়া আলিম মাদ্রাসায় এমন ঘটনা ঘটে আসলেও কর্তৃপক্ষ রয়েছে নীরব ভূমিকায়।

অভিযুক্ত শিক্ষক ফোরকান মিয়া আকুবপুর গ্রামের মৃত আলী আহম্মদের ছেলে। তিনি ১৯৮৮ সালে মাদ্রাসার মাধ্যমিক শাখার কৃষি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি নিয়মিত মাদ্রাসায় না আসায় পাঠদান ব্যবস্থায় তৈরী হয়েছে হ-যবরল পরিস্থিতি। স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পায়না।

মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, কৃষি বিষয়ের শিক্ষক ফোরকান মিয়া এলাকায় মাছের ব্যবসা করেন। তার কয়েকটি মাছের পুকুর আছে তিনি সেখানেই বেশি সময় দেন। মাদ্রাসায় আসলেও এক ঘন্টা করে চলে যান। বছরের বেশিরভাগ সময়ই মাদ্রাসার বাহিরে থাকেন। সপ্তাহে একদিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। বছরের পর বছর এভাবে চললেও গত ৫ বছর যাবত ওনার স্ত্রী শারমিন আক্তারকে দিয়ে বিধি-বহির্ভূত ক্লাস নেন অধ্যক্ষ।

বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা জানায় ফোরকান স্যার নিয়মিত মাদ্রাসায় আসেন না, ওনার স্ত্রীকে দিয়ে ক্লাস নেন। আবার কেউ কেউ বলেন, ওই স্যারকে আমরা চিনিই না।
অভিযুক্ত শিক্ষক ফোরকান মিয়া বলেন, মাঝে মধ্যে ব্যবসার কাজে এদিক সেদিক যাই। তখন তিন-চার দিন মাদ্রাসায় আসতে পারিনা। পরে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করি। ৪ বছর যাবত শরীরে ইউরিন সমস্যা আছে। এই বেতনে চলতে পারিনা। তাই মাছের ব্যবসাসহ এলাকার বিভিন্ন সামাজিক কাজে সময় দেই।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাফিজুর রহমান বলেন, আমি ২০১০ সালে মাদ্রাসায় যোগদান করার পর থেকে ওনাকে অনিয়মিত পাই। অনেকগুলো নোটিশ করেছি। কিন্তু কোন সুরাহ হয়নি। সে অসুস্থ্যতার কথা বলে মাদ্রাসায় নিয়মিত আসে না। শুনেছি মাছের ব্যবসা করেন। এছাড়াও ফোরকান মিয়ার স্ত্রী ক্লাশ নেওয়ার বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির দ্বারা রেজুলেশনকৃত নয়। আসলে সব কিছুই নিয়ম বহির্ভূত হয়ে গেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম তালুকদার জানান, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা-বানিজ্য করার কোন নিয়ম নেই। প্রক্সি ক্লাসেরও কোন বিধান নেই। অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বহী অফিসার (ইউএনও) সিফাত উদ্দিন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বরুড়ায় বিজয় দিবস উপলক্ষে মহিলা দলের আলোচনা সভা ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত

SBN

SBN

মাছের ব্যবসা করেন শিক্ষক

প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকে নিচ্ছেন বেতন

আপডেট সময় ০৪:২৯:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাহফুজুর রহমান, মুরাদনগর (কুমিল্লা)

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থেকে মাছের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন এক শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থাকলেও প্রতিনিয়ত প্রদান করছেন স্বাক্ষর। হাজিরা খাতায় উপস্থিতি দেখিয়ে উত্তোলন করেন বেতনের টাকা। বিষয়টি মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ স্থানয়ীরা অবগত থাকলেও অদৃশ্য কারণে নেয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা। দীর্ঘ ৫বছর ধরে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর মোহাম্মদিয়া আলিম মাদ্রাসায় এমন ঘটনা ঘটে আসলেও কর্তৃপক্ষ রয়েছে নীরব ভূমিকায়।

অভিযুক্ত শিক্ষক ফোরকান মিয়া আকুবপুর গ্রামের মৃত আলী আহম্মদের ছেলে। তিনি ১৯৮৮ সালে মাদ্রাসার মাধ্যমিক শাখার কৃষি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি নিয়মিত মাদ্রাসায় না আসায় পাঠদান ব্যবস্থায় তৈরী হয়েছে হ-যবরল পরিস্থিতি। স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পায়না।

মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, কৃষি বিষয়ের শিক্ষক ফোরকান মিয়া এলাকায় মাছের ব্যবসা করেন। তার কয়েকটি মাছের পুকুর আছে তিনি সেখানেই বেশি সময় দেন। মাদ্রাসায় আসলেও এক ঘন্টা করে চলে যান। বছরের বেশিরভাগ সময়ই মাদ্রাসার বাহিরে থাকেন। সপ্তাহে একদিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। বছরের পর বছর এভাবে চললেও গত ৫ বছর যাবত ওনার স্ত্রী শারমিন আক্তারকে দিয়ে বিধি-বহির্ভূত ক্লাস নেন অধ্যক্ষ।

বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা জানায় ফোরকান স্যার নিয়মিত মাদ্রাসায় আসেন না, ওনার স্ত্রীকে দিয়ে ক্লাস নেন। আবার কেউ কেউ বলেন, ওই স্যারকে আমরা চিনিই না।
অভিযুক্ত শিক্ষক ফোরকান মিয়া বলেন, মাঝে মধ্যে ব্যবসার কাজে এদিক সেদিক যাই। তখন তিন-চার দিন মাদ্রাসায় আসতে পারিনা। পরে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করি। ৪ বছর যাবত শরীরে ইউরিন সমস্যা আছে। এই বেতনে চলতে পারিনা। তাই মাছের ব্যবসাসহ এলাকার বিভিন্ন সামাজিক কাজে সময় দেই।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাফিজুর রহমান বলেন, আমি ২০১০ সালে মাদ্রাসায় যোগদান করার পর থেকে ওনাকে অনিয়মিত পাই। অনেকগুলো নোটিশ করেছি। কিন্তু কোন সুরাহ হয়নি। সে অসুস্থ্যতার কথা বলে মাদ্রাসায় নিয়মিত আসে না। শুনেছি মাছের ব্যবসা করেন। এছাড়াও ফোরকান মিয়ার স্ত্রী ক্লাশ নেওয়ার বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির দ্বারা রেজুলেশনকৃত নয়। আসলে সব কিছুই নিয়ম বহির্ভূত হয়ে গেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম তালুকদার জানান, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা-বানিজ্য করার কোন নিয়ম নেই। প্রক্সি ক্লাসেরও কোন বিধান নেই। অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বহী অফিসার (ইউএনও) সিফাত উদ্দিন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।