
মাহফুজুর রহমান, মুরাদনগর (কুমিল্লা)
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সরকারি ভাবে দেয়া নদীর একাধিক ঘাট দীর্ঘদিন ধরে দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে বেশ কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে। প্রতিমা বিসর্জনের ঘাটগুলো দখলে থাকায় এবারের প্রতিমা বিসর্জন নিয়েও শংকিত রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর বাজারের গা ঘেষে বয়ে যাওয়া তিতাস নদীতে অনেক বছর আগে সরকারি ভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিমা বিসর্জনের ৩টি ঘাট নির্মাণ করে দেয় হয়।
আওয়ামীলীগ সরকারের সময় এই ঘাট গুলো একে একে অবৈধ ভাবে দখল হয়ে যায়। এতে করে ওই এলাকাসহ আশেপাশের কয়েক ইউনিয়নের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতিমা বিসর্জনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরও ঘাট গুলো দখলমুক্ত না হওয়ায় এখনও প্রতিমা বিসর্জন নিয়ে শংকিত সনাতনীরা।
মুরাদনগর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা নিতাই রায় সাহা বলেন, আমাদের ব্যবহারের জন্য সরকার থেকে বরাদ্দকৃত কালিবাড়ি ঘাটটি দখল হয়ে এখন প্রায় বিলুপ্ত। এই ঘাটে দরজা লাগিয়ে তালা ঝুলিয়ে ভাসমান দোকানপাট গড়ে তুলেছে। এছাড়া দশমী ঘাট হিসেবে পরিচিত আরো দুইটি ঘাটের মধ্যে একটিতে পাকাঁ দোকান নির্মান ও আরেকটিতে টিনের ঘর নির্মানসহ বাঁশ, কাঠ ও গাছ ফেলে দখলে নিয়েছে আওয়ামীলীগের কিছু নেতা। সামনে আমাদের দূর্গা পূজা। দশমীতে আমরা প্রতিমাগুলো কিভাবে নদীতে ফেলবো তা নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ নেই।
রামচন্দ্রপুর দশমী উদযাপন কমিটির সভাপতি নরেশ চন্দ্র পাল বলেন, একে একে আমাদের ৩টি ঘাট দখল হয়ে গেছে। রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের নেতা হিসেবে পরিচিত সাদেক মেম্বার, আতশ আলী, আলমগীরসহ কিছু নেতা এই ঘাট গুলো দখল করে। এলাকায় প্রভাবশালী নেতা হওয়ার সুবাদে তাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম প্রতিবাদ করতে পারিনি।
দখলদারীরা বিভিন্ন দোকান পাট নির্মান ও মালামাল রেখে ঘাট গুলোকে বিলুপ্ত করে ফেলছে। এই ঘাট গুলো আমাদের দৈনন্দিন কাজেও আমরা ব্যবহার করতাম। এছাড়াও বৃহত্তর রামচন্দ্রপুর বাজারের সকল ব্যবসায়ীরাও এই ঘাটগুলো ব্যবহার করে উপকৃত হতো। দখল হওয়ার কারনে প্রতিমা বিসর্জন সহ আমরা সবাই এই ঘাটগুলো ব্যবহার করা থেকে বঞ্চিত। আমাদের শারদীয় দূর্গাপূজা সন্নিকটে। প্রতিমাগুলি কিভাবে নদীতে বিসর্জন করবো তা নিয়ে আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিপাকে আছি। এই ঘাটগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ঘাট দখলের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সাদেক মেম্বারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। খুব শীঘ্রই অবৈধ স্থাপনাগুলো অপসারন করে নদীর ঘাটগুলো দখলমুক্ত করা হবে এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মুক্তির লড়াই ডেস্ক : 

























