
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে সরাইল থানায় আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে সরাইল থানায় মামলাটি করা হয়। মামলার এজাহারে ৭২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।
মামলার বাদী মো. শফি আলী সরাইল উপজেলা সদরের কুট্টাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। মামলায় ১ নম্বর আসামির (মোকতাদির চৌধুরী) নির্দেশে কয়েকজন আসামি আল আমীনকে প্রথমে মারধর করেন, পরে গুলি করে হত্যা করেন বলে মামলায় অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার বাদীর ছেলে নিহত হাফেজ আল-আমীন।
মামলায় দ্বিতীয় আসামি সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হোসেন, তৃতীয় সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি লোকমান হোসেন, চতুর্থ সাবেক ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেহেদী হাসান লেলিন, পঞ্চম মোশাররফ হোসেন, ষষ্ঠ সুজন দত্ত, সপ্তম কাজল চৌধুরী, অষ্টম ছানাউল্লাহ সেলু মিয়া, নবম বোরহান উদ্দিন, দশম জহির রায়হান কে সহ ৭২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলাটিতে অজ্ঞাতনামা আরো ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে৷
মামলা এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ থেকে পরবর্তী কয়েক দিন আন্দোলন করেছিল হেফাজতে ইসলাম। ২৮ মার্চ দেশব্যাপী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও তৌহিদি জনতার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছিল। ওই দিন সরাইল বিশ্বরোড মোড় এলাকায় হরতালে অংশ নিয়েছিলেন মামলার বাদীর ছেলে হাফেজ আল-আমীন। সেখানে ১ নম্বর আসামির (মোকতাদির চৌধুরী) নির্দেশে কয়েকজন আসামি আল আমীনকে প্রথমে মারধর করে, পরে গুলি করে হত্যা করে।
এনিয়ে মোকতাদির চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ১০টি মামলা হলো, এর মধ্যে ৭টি হত্যা মামলা। আসামির তালিকায় থাকা ৭২ জনের মধ্যে ৩৮ জনই সরাইল উপজেলার বাসিন্দা। বাকি ৩৪ জন জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। সরাইল উপজেলার বাসিন্দাদের অধিকাংশই প্রত্যন্ত গ্রামের। তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মী বা সমর্থক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রাজ্জাক জানান, ৭২ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলায় নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি আসামি হয়ে থাকলে তাকে অযথা হয়রানি করা হবে না।