ঢাকা ০৭:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ইচ্ছে পূরণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo বিএনপি নেতা ফেরদৌস আলম মৃধা নিজস্ব অর্থায়নের বলদী গ্রামের বেহাল রাস্তা গুলো পূর্ণ সংস্কারের কাজ শুরু করেন Logo সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণ করে সিআইপি অ্যাওয়ার্ড পাওয়া জসিম উদ্দিনকে সংবর্ধনা Logo মুরাদনগরে খামারগ্রাম প্রবাসী সংগঠনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দোয়া মাহফিল Logo বুড়িচং বাকশীমূল স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত Logo খুলনায় যুবককে গুলি করে হত্যার চেষ্টা Logo সিলেট জেলা যুবদলের নেতা আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ Logo ফুলবাড়ীতে প্রি-পেইড মিটার বন্ধের দাবি Logo বরুড়ার দলুয়া তুলাগাও দাখিল মাদ্রাসার ৫৪ তম বার্ষিক বড় খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত Logo ফুলবাড়ীতে কানাহার ডাঙ্গা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস এর প্রতিবেদন

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন সুন্দরবনের জন্য বড় হুমকি

অতনু চৌধুরী (রাজু), বাগেরহাট

দেশি – বিদেশি গবেষণার নেতিবাচক ফলাফল আর পরিবেশবাদীদের নানা প্রতিবাদ সত্ত্বেও নির্মিত রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন সুন্দরবনের জন্য বড় হুমকি।

নির্মাণের আগে এই কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে যে ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছিল, বাস্তবে এখন ধারণার থেকেও বেশি ক্ষতি হচ্ছে। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস দ্বারা পরিচালিত মূল্যায়নে এ তথ্য উঠে এসেছে। নির্মাণের উদ্যোগকালীন সময় থেকেই রামপালে কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক চলে আসছিল। পরিবেশবাদী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে সুন্দরবনের কাছে গত ২০১৬ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ১’হাজার ৩২০’মেগাওয়াট এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হয় গত ২০২২ সালে।

সম্প্রতি সরকার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস এর গবেষণা রিপোর্টে উঠে এসেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালুর পর থেকেই শর্ত ভঙ্গ করে উন্মুক্তভাবে কয়লা পরিবহনে দুষিত হচ্ছে সুন্দরবন এলাকার নদী ও বন।

এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার ছাই এবং কেন্দ্র থেকে নির্গত পানি শর্ত ভঙ্গ করে পরিশোধন ছাড়াই মিশছে প্রকৃতিতে। ফলে এই এলাকায় বাড়ছে নাইট্রেট, ফসফেট, পারদ’সহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিকের মাত্রা। যার বিরূপ প্রভাব দৃশ্যমান জলজ ও বনজ জীব বৈচিত্র্যের ওপর।

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তাকে অপহরণ, নারী’সহ আটক ৭ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুন্দরবন সংলগ্ন’সহ প্রকল্প এলাকায় (করমজল, হারবাড়িয়া, আকরাম পয়েন্ট, হিরণ পয়েন্ট) পাখির বাসা দেখা যায়নি, চারণভূমি বিলুপ্ত হয়েছে, গৃহপালিত প্রাণীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) খুলনার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, সারা বিশ্বই যখন কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনতে সোচ্চার, তখন এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু সুন্দরবন, নদী বা প্রকৃতিরই ক্ষতি করছে না, বৈদেশিক ঋণ সহায়তার কারণে অর্থনৈতিকভাবেও পিছিয়ে পড়ছে। দীর্ঘমেয়াদী যেসব ক্ষতির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞরা করছেন তাতে হারিয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক সম্পদ আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মোঃ নাসিফ আহসান বলেন, ক্রমাগত এ দূষণ এখনই ঠেকানো না গেলে সুন্দরবন’সহ এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যে দেখা দেবে ভায়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়। অন্যদিকে শুরু থেকেই যান্ত্রিক ত্রুটিতে কয়েক দফায় বন্ধ হয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। বর্তমানে নানা সংকটে কেন্দ্রটি সক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, ফলে অর্থনৈতিক সুফলও মিলছে না এই কেন্দ্র থেকে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইচ্ছে পূরণ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

SBN

SBN

সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস এর প্রতিবেদন

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন সুন্দরবনের জন্য বড় হুমকি

আপডেট সময় ০৮:১১:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

অতনু চৌধুরী (রাজু), বাগেরহাট

দেশি – বিদেশি গবেষণার নেতিবাচক ফলাফল আর পরিবেশবাদীদের নানা প্রতিবাদ সত্ত্বেও নির্মিত রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন সুন্দরবনের জন্য বড় হুমকি।

নির্মাণের আগে এই কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে যে ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছিল, বাস্তবে এখন ধারণার থেকেও বেশি ক্ষতি হচ্ছে। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস দ্বারা পরিচালিত মূল্যায়নে এ তথ্য উঠে এসেছে। নির্মাণের উদ্যোগকালীন সময় থেকেই রামপালে কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক চলে আসছিল। পরিবেশবাদী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে সুন্দরবনের কাছে গত ২০১৬ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ১’হাজার ৩২০’মেগাওয়াট এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হয় গত ২০২২ সালে।

সম্প্রতি সরকার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস এর গবেষণা রিপোর্টে উঠে এসেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালুর পর থেকেই শর্ত ভঙ্গ করে উন্মুক্তভাবে কয়লা পরিবহনে দুষিত হচ্ছে সুন্দরবন এলাকার নদী ও বন।

এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার ছাই এবং কেন্দ্র থেকে নির্গত পানি শর্ত ভঙ্গ করে পরিশোধন ছাড়াই মিশছে প্রকৃতিতে। ফলে এই এলাকায় বাড়ছে নাইট্রেট, ফসফেট, পারদ’সহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিকের মাত্রা। যার বিরূপ প্রভাব দৃশ্যমান জলজ ও বনজ জীব বৈচিত্র্যের ওপর।

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তাকে অপহরণ, নারী’সহ আটক ৭ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুন্দরবন সংলগ্ন’সহ প্রকল্প এলাকায় (করমজল, হারবাড়িয়া, আকরাম পয়েন্ট, হিরণ পয়েন্ট) পাখির বাসা দেখা যায়নি, চারণভূমি বিলুপ্ত হয়েছে, গৃহপালিত প্রাণীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) খুলনার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, সারা বিশ্বই যখন কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনতে সোচ্চার, তখন এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু সুন্দরবন, নদী বা প্রকৃতিরই ক্ষতি করছে না, বৈদেশিক ঋণ সহায়তার কারণে অর্থনৈতিকভাবেও পিছিয়ে পড়ছে। দীর্ঘমেয়াদী যেসব ক্ষতির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞরা করছেন তাতে হারিয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক সম্পদ আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মোঃ নাসিফ আহসান বলেন, ক্রমাগত এ দূষণ এখনই ঠেকানো না গেলে সুন্দরবন’সহ এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যে দেখা দেবে ভায়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়। অন্যদিকে শুরু থেকেই যান্ত্রিক ত্রুটিতে কয়েক দফায় বন্ধ হয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। বর্তমানে নানা সংকটে কেন্দ্রটি সক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, ফলে অর্থনৈতিক সুফলও মিলছে না এই কেন্দ্র থেকে।