নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জামায়াত দেশে একটি কল্যাণমূলক ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ জন্য রুকনদের পাশাপাশি সাধারণ লোকদেরও ব্যাপক ভূমিকা পালন করতে হবে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে দারুল আমান ট্রাস্ট ময়দানে পাবনা জেলা জামায়াতের বার্ষিক রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন। পাবনা জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলের সভাপতিত্বে সেক্রেটারি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল গাফফার খানের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাবনা জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও বগুড়া অঞ্চলের অন্যতম টিম সদস্য মাওলানা আব্দুর রহীম, বগুড়া অঞ্চলের অন্যতম টিম সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর প্রিন্সিপাল ইকবাল হোসাইন এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আবু সালেহ মোঃ আব্দুল্লাহ।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে পাবনা জেলা জামায়াতের শুরা, কর্ম পরিষদ সদস্যবৃন্দ ও পাবনার দশটি সাংগঠনিক উপজেলার আমির ও সেক্রেটারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন,মানবতার কল্যাণে দেশে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজ থেকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক বিশৃঙ্খলা দূর হবে, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন রোধ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রকৃত ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে মানুষের মন থেকে ইসলামিক ভীতি দূর হবে। মানুষ শৃঙ্খলবদ্ধভাবে জীবন পরিচালনা করে সকল কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবে। কারো মনে কোন সংশয় বা দ্বিধা থাকবে না। তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী দেশের স্বার্থে সংস্কারের প্রত্যাশী। দেশের জনগণ দ্রুত সংস্কার করে স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচনের প্রত্যাশা করে।
প্রধান অতিথি বলেন, আমরা নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার চাই, এজন্য জামায়াতের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশন সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা সংখানুপাতিক হারে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছি। এ বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা পর্যালোচনা থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার রুকনদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারাই সংগঠনের মূল চালিকাশক্তি। আপনাদের ঈমান, আকিদা তাকওয়া, হালাল, হারাম আখলাক সকল কিছুর উপর নির্ভর করবে আমাদের আন্দোলন বেগবান করার কর্মপন্থা। তিনি বলেন আন্তরিকতা ও ধৈর্য সহকারে এ আন্দোলনে লোকজনকে অধিকতর সম্পৃক্ত করতে হবে। সর্বস্তরের জনসাধারণের অংশগ্রহণেই নিশ্চিত হবে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে নিজেদেরকে আত্ম সমালোচনার মাধ্যমে নিজের নৈতিকতা সামাজিকতা উন্নত করতে হবে।
প্রধান অতিথি রুকনদের বলেন দ্বীনি হচ্ছে জীবনের উদ্দেশ্য এ মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদেরকে আন্দোলনে একনিষ্ঠ হয়ে আত্মনিয়োগ করে এগিয়ে যেতে হবে।
কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদী সরকারের অত্যাচার নির্যাতনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির এর নেতাকর্মী।
জামায়াতের শীর্ষ ১১ নেতার রক্তের বিনিময়ে আমাদের আন্দোলন আজ বেগবান। তিনি আরো বলেন আমাদেরকে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সকলকে সাথে নিয়ে একযোগে ইসলামী আন্দোলনের কাজ করতে হবে।
বিশেষ অতিথি বলেন, জামায়াতকর্মী মানে সমাজকর্মী। সমাজের সকল স্তরে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে এবং সর্বস্তরের জনসাধারণকে ইসলামী আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে হবে, এটা ইসলামী আন্দোলনের রুকনদের দায়িত্বের পর্যায়ে পরে।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াতের নেতাকর্মীদের সমাজের নৈতিকতা বিবর্জিত কোন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। নৈতিকতা বিবর্জিত কোন লোক জামায়াত কর্মী হতে পারে না, এরকম কোন লোকের প্রমাণ পেলে সে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনে শরিক থাকতে পারবে না।
সভাপতির বক্তৃতা অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, আমাদের কর্ম তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে, দুর্নীতিমুক্ত কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নিজেদের আত্ম উপলব্ধির মাধ্যমে আন্তরিকতার সাথে এ আন্দোলনের কাজ এগিয়ে নিতে হবে, তবেই আমরাইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সফলকাম হবে।