
স্টাফ রিপোর্টার
‘সমৃদ্ধ হোক পাঠাগার, এই আমাদের অঙ্গীকার’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস উপলক্ষ্যে ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে ‘সাহস লাইব্রেরি’ তে আয়োজন করা হয়, আলোচনা ও বই পাঠ প্রতিযোগিতা।
সাহস লাইব্রেরি’র সামছুল হুদা লাইব্রেরি ভবনে বিকাল ০৩:০০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাহস স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সাহস লাইব্রেরির সদস্য মুনির হোসেন। অনুষ্ঠানে সাহস স্কুলের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী, সকল শিক্ষক, লাইব্রেরির সদস্য ও স্থানীয় পাঠকগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তরা বলেন, একটি লাইব্রেরি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো। উন্মুক্তভাবে জ্ঞান আহরণের জন্য লাইব্রেরি সবচেয়ে উত্তম স্থান। চল্লিশের দশকেও বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে অনেক লাইব্রেরির দেখা পাওয়া যেত। ইউনিয়ন বাজারগুলোতে অবস্থিত সেসব লাইব্রেরিতে সাধারণ পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি জনপ্রিয় গল্প, উপন্যাস, কবিতা, অনুবাদের বই সহজেই পাওয়া যেত।
কালের বিবর্তনে গ্রামাঞ্চলের সেসব লাইব্রেরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এমন বৈরি বাস্তবতায় সিংগুরের মত প্রত্যন্ত গ্রামে ‘সাহস লাইব্রেরি’ প্রতিষ্ঠা করা সত্যিই অনেক বিরাট ব্যাপার। ২০১৯ সালের মে মাসে প্রতিষ্ঠিত সাহস লাইব্রেরি শুরু থেকেই গ্রামীন জনগোষ্ঠীর জন্য বইকে সহজলভ্য করেছে। স্থানীয় নারী ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বইপাঠের আগ্রহ তৈরির লক্ষ্যে বিভিন্ন গ্রামে নিয়মিত ‘উঠান বৈঠক’-এর আয়োজন করে বিনামূল্যে বই বিতরণ করছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি মহৎ উদ্যোগ। এজন্য বক্তারা ‘সাহস লাইব্রেরি’র প্রতিষ্ঠাতা, উদ্যোক্তা ও সমাজকর্মী, নাজমুল হুদা রতনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ও সাহস স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, জাতিকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে হলে গ্রন্থাগার সমৃদ্ধ করতে হবে এবং সবাইকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বই হচ্ছে জোনাকি পোকার মতো, চারদিকে অন্ধকার অথচ নিজে জ্বলে থাকে।
সাহস স্কুলের সহকারী প্রধান আয়েশা আক্তার লিজা বলেন, বাস্তবতা সর্বদা আমাদের সেই জীবন দেয় না যা আমরা চাই। তবে বইয়ের পাতার মধ্যে আমরা যা চাই তা খুঁজে পেতে পারি।
কিশোর-কিশোরী শাখায় মিজানুর রহমান মিথুন-এর ব্যাক বেঞ্চার বইটির উপর পাঠ প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান আরাফ প্রথম, তামান্না আহমেদ ফাইজা দ্বিতীয় ও ইশান মিয়াজী তৃতীয় স্থান অধিকার করে।
প্রাপ্তবয়স্ক কোটায় জেবুননেছা হেলেন রচিত নক্ষত্রর সাথে কথা হয় বইটির উপর পাঠ প্রতিযোগিতায় হাজেরা আক্তার প্রথম, মরিয়ম বেগম লিপি দ্বিতীয় ও সুমিত্রা রানী দাস তৃতীয় স্থান অধিকার করে।
পুরষ্কার হিসেবে সাহস পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত বই বিজয়ীদের হাতে তুলে দেন সাহস স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুনির হোসেন ও সহকারি প্রধান শিক্ষক আয়েশা আক্তার লিজা।
সমবেত কণ্ঠে দেশের গান পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস উপলক্ষ্যে ‘সাহস লাইব্রেরি’ তে আয়োজিত আলোচনা ও বই পাঠ প্রতিযোগিতা।