
মো: রায়হান, নওগাঁ
নওগাঁর রাণীনগরে অবৈধ দুই ইটভাটা এস্কেভেটর দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইট ভাটা ভেঙে দেওয়ায় জীবিকাহীন হয়ে পরেছে প্রায় এক হাজার মানুষ। পূর্বের কাজের মজুরিও পাবে কি না সেটা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। কর্মহীন এ সকল ভাটা শ্রমিকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসে মানবন্ধন করেছে।
বুধবার (১২মার্চ) দুপুর ১টার দিকে তারা রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মো: রাকিবুল হাসানের অফিসের কক্ষের সামনে মানবন্ধন করে এবং তাদের অসুবিধার কথা তুলে ধরে। এ সময় ভাটা শ্রমিকরা সরকারের সহায়তা কামনা করে।
জানা গেছে, এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১১মার্চ) দুপুরে উপজেলায় মোবাইল কোর্টের এক অভিযানে রাণীনগর উপজেলার দুইটি ভাটার পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকার কারণে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ বিন জিয়া।
প্রথমে উপজেলা বাসট্যান্ডের পাশে চকমনু এলাকায় নওগাঁ-৬ (রাণীনগর-আত্রাই) আসনের আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আনোয়ার হোসেন হেলালের মেসার্স রাহিদ এন্টারপ্রাইজ নামে ইটভাটা এস্কেভেটর দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর চকাদিন এলাকায় আবু বক্কর সিদ্দিকের মেসার্স রিফাত ব্রিকস নামে ইটভাটা গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ শ্রমিকরা ইউএনও অফিসে মানবন্ধন করে। এসময় মৌখিকভাবে তারা পুনরায় ভাটা চালুর দাবী জানায়।
ভাটা শ্রমিক মো: আজিজুল জানিয়েছেন ‘ঈদের আগে ইট ভাটা ভেঙে দেওয়াতে আমরা বেকার হয়ে পরেছি। প্রশাসনের উচিৎ ছিলো ঈদ পর্যন্ত সময় দেওয়া। এখন আমাদের ঈদের আনন্দ থেকেও বঞ্চিত হওয়া লাগবে। সংসার চালাতে হিমশিম খেয়ে যেতে হবে।
রাণী নামের স্বামীহারা এক নারী শ্রমিক জানিয়েছেন, আমরা দুই ভাটা মিলে প্রায় ৮০০-৯০০জন কাজ করতাম। এতোগুলো লোক হঠাৎ করে কর্মহীন হয়ে পরায় আমাদের পরিবার নিয়ে খেয়ে পরে বাঁচা মুশকিল হয়ে পরেছে।
ভাটা মালিকদের সাথে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে রাহিদ ব্রিকসের ম্যানেজার মো: বকুল হোসেন বলেন, ‘হুট করে ভাটা ভেঙে দেওয়াতে উপজেলার প্রায় এক হাজার জন কর্মহীন পরে পরেছে। এতে প্রায় হাজারটি পরিবারে প্রভাব পরছে। সংসার চালানোর তাগিদে অনেকেই অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরতে পারে।’
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মো: রাকিবুল হাসান বলেছেন ‘আমি শ্রমিকদের অসন্তোষ, অসুবিধার কথা শুনেছি৷ অবৈধ ইট ভাটা ভেঙে দেওয়ার হুকুম মহামান্য হাইকোর্টের, এখানে আমাদের করার কিছুই নেই। তারপরেও কর্মহীন হয়ে পরা শ্রমিকদের ব্যাপারে অবশ্যই উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানানো হবে। তাদের দাবীগুলো তুলে ধরবো। যাতে সরকারি ভাবে তাদের সহায়তা করা হয়।’