ঢাকা ১১:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পুকুরে ডুবে মৃত্যুর ৭ ঘণ্টা পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার Logo বিএনপিকে ভাঙ্গার সকল চেষ্টাই শেখ হাসিনা করেছেন.. জাকারিয়া তাহের সুমন Logo ভাবি হত্যায় দেবরের মৃত্যুদণ্ড: শশুর শাশুড়ির যাবজ্জীবন Logo নওগাঁয় কনস্টেবল নিয়োগের নামে ১০লাখ টাকার চুক্তি করে প্রতারণা; গ্রেফতার ১ Logo ধরিয়ে দিন Logo রূপসায় শহীদ জিয়া স্মৃতি নাইট ফুটবল টুর্নামেন্টের সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত Logo শেরপুরে নিখোঁজের দু’দিন পর এক নারীর মরদেহ উদ্ধার Logo লালমনিরহাটের মিথ্যা মামলাবাজকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও গ্রেফতারের দাবি Logo গাইবান্ধায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে অটোবাইক চালক নিহত Logo বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়নের পঞ্চগড় জেলা কমিটি অনুমোদন

রাজশাহীতে ভুয়া মাদ্রাসা চালিয়ে প্রতারণার অভিযোগ

মোঃ বিশাল উদ্দিন পবা, (রাজশাহী)

রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার বড়গাছী ইউনিয়নের ইটাঘাটী প্রথমপাড়া গ্রামে ‘জান্নাতুল ফেরদাউস মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসা (লিল্লাহ
বোর্ডিং ও এতিমখানা)’ নামের একটি মাদ্রাসা কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই পাঠদান বা শিক্ষার্থীর কোনো চিহ্ন।

অথচ মাদ্রাসার নাম ব্যবহার করে প্রতিদিন এলাকায় ঘুরে ঘুরে তোলা হচ্ছে হাজার হাজার টাকা, চাল-ডাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি একটি সংগঠিত প্রতারণার কেন্দ্র যা ধর্মের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন রাজু আহমেদ নামের এক ব্যক্তি।

প্রতিদিন সকাল হলেই তিনটি ইজিবাইক ছুটে বেড়ায় রাজশাহীসহ আশপাশের এলাকায়—মাদ্রাসার নামে সাহায্য সংগ্রহের জন্য। অথচ স্থানীয় কেউ কখনোই মাদ্রাসাটিতে কোনো শিক্ষার্থী দেখেনি। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খোইবর আলী অভিযোগ করেন, রাজু অনুমতি ছাড়াই তার স্বাক্ষর নকল করে তাকে মাদ্রাসার সভাপতি বানিয়ে রেখেছিল, যা জানার পর তিনি তা বাতিল করতে বলেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিনের বেড়ায় ঘেরা একটি স্থানে ইটের কিছু ঘর থাকলেও সেখানে নেই কোনো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বা পাঠদানের পরিবেশ। রয়েছে শুধু আলু, পেঁয়াজ ও চালের স্তুপ—যা দানের মালামাল হিসেবেই বোঝা যায়। নেই বিছানাপত্র, নেই কোনো শিক্ষা উপকরণ।

মাদ্রাসার নামে ভুয়া রশিদ ছাপিয়ে বছরজুড়ে চলে রাজুর অনুদান সংগ্রহের মহোৎসব। অথচ স্থানীয়রা বলছেন, এই নামে কোনও শিক্ষা কার্যক্রম চলছে না। রাজু নিজেই একাধারে মাদ্রাসার সভাপতি, মহাপরিচালক এবং ক্যাশিয়ার। তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে পবা থানায় একটি মাদক মামলাও রয়েছে (জি.আর. মামলা নং ২১/২০১৯), যার কারণে তিনি কারাগারেও ছিলেন।

সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো—এই ভুয়া মাদ্রাসা নিয়ে কেউ কথা বললেই রাজু ও তার ‘ক্যাডার বাহিনী’ হুমকি-ধামকি দিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করে। এমনকি সাংবাদিকদের সাথেও খারাপ আচরণ করা হয়, প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রাজু যেভাবে ধর্মকে ঢাল বানিয়ে প্রতারণা করছে, তা থামানো না গেলে আসল মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোর প্রতি মানুষের বিশ্বাস উঠে যাবে। আমরা চাই, প্রশাসন অবিলম্বে এই প্রতারকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক।”
এই ঘটনা স্পষ্ট করে দেয়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে ঢাল বানিয়ে কেউ যদি নিজের স্বার্থ হাসিল করে, সেটি শুধু বেঈমানি নয়, একটি গোটা সমাজব্যবস্থার উপর আঘাত।

প্রশাসনের কাছে স্থানীয়দের একটাই দাবি—রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই প্রতারণার জাল ছিন্ন করা হোক।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

পুকুরে ডুবে মৃত্যুর ৭ ঘণ্টা পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার

SBN

SBN

রাজশাহীতে ভুয়া মাদ্রাসা চালিয়ে প্রতারণার অভিযোগ

আপডেট সময় ০৮:৫৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

মোঃ বিশাল উদ্দিন পবা, (রাজশাহী)

রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার বড়গাছী ইউনিয়নের ইটাঘাটী প্রথমপাড়া গ্রামে ‘জান্নাতুল ফেরদাউস মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসা (লিল্লাহ
বোর্ডিং ও এতিমখানা)’ নামের একটি মাদ্রাসা কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই পাঠদান বা শিক্ষার্থীর কোনো চিহ্ন।

অথচ মাদ্রাসার নাম ব্যবহার করে প্রতিদিন এলাকায় ঘুরে ঘুরে তোলা হচ্ছে হাজার হাজার টাকা, চাল-ডাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি একটি সংগঠিত প্রতারণার কেন্দ্র যা ধর্মের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন রাজু আহমেদ নামের এক ব্যক্তি।

প্রতিদিন সকাল হলেই তিনটি ইজিবাইক ছুটে বেড়ায় রাজশাহীসহ আশপাশের এলাকায়—মাদ্রাসার নামে সাহায্য সংগ্রহের জন্য। অথচ স্থানীয় কেউ কখনোই মাদ্রাসাটিতে কোনো শিক্ষার্থী দেখেনি। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খোইবর আলী অভিযোগ করেন, রাজু অনুমতি ছাড়াই তার স্বাক্ষর নকল করে তাকে মাদ্রাসার সভাপতি বানিয়ে রেখেছিল, যা জানার পর তিনি তা বাতিল করতে বলেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিনের বেড়ায় ঘেরা একটি স্থানে ইটের কিছু ঘর থাকলেও সেখানে নেই কোনো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বা পাঠদানের পরিবেশ। রয়েছে শুধু আলু, পেঁয়াজ ও চালের স্তুপ—যা দানের মালামাল হিসেবেই বোঝা যায়। নেই বিছানাপত্র, নেই কোনো শিক্ষা উপকরণ।

মাদ্রাসার নামে ভুয়া রশিদ ছাপিয়ে বছরজুড়ে চলে রাজুর অনুদান সংগ্রহের মহোৎসব। অথচ স্থানীয়রা বলছেন, এই নামে কোনও শিক্ষা কার্যক্রম চলছে না। রাজু নিজেই একাধারে মাদ্রাসার সভাপতি, মহাপরিচালক এবং ক্যাশিয়ার। তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে পবা থানায় একটি মাদক মামলাও রয়েছে (জি.আর. মামলা নং ২১/২০১৯), যার কারণে তিনি কারাগারেও ছিলেন।

সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো—এই ভুয়া মাদ্রাসা নিয়ে কেউ কথা বললেই রাজু ও তার ‘ক্যাডার বাহিনী’ হুমকি-ধামকি দিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করে। এমনকি সাংবাদিকদের সাথেও খারাপ আচরণ করা হয়, প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রাজু যেভাবে ধর্মকে ঢাল বানিয়ে প্রতারণা করছে, তা থামানো না গেলে আসল মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোর প্রতি মানুষের বিশ্বাস উঠে যাবে। আমরা চাই, প্রশাসন অবিলম্বে এই প্রতারকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক।”
এই ঘটনা স্পষ্ট করে দেয়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে ঢাল বানিয়ে কেউ যদি নিজের স্বার্থ হাসিল করে, সেটি শুধু বেঈমানি নয়, একটি গোটা সমাজব্যবস্থার উপর আঘাত।

প্রশাসনের কাছে স্থানীয়দের একটাই দাবি—রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই প্রতারণার জাল ছিন্ন করা হোক।