ঢাকা ১১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চীন ও মধ্য এশিয়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক মডেল হয়ে উঠেছে

  • আন্তর্জাতিক:
  • আপডেট সময় ০৩:১৯:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ত তোকায়েভের আমন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ১৬ থেকে ১৮ জুন কাজাখস্তানের আস্তানায় দ্বিতীয় চীন-মধ্য এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। দুই বছর পর, চীন এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর নেতারা আবার মিলিত হবেন, তারা চীন-মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গভীরতর করা এবং হাতে হাত রেখে আঞ্চলিক অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গড়ে তোলার জন্য আরো দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের পরিকল্পনা ও ভালো সম্ভাবনা তৈরি করবেন।

কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তান হল চীনের ভালো প্রতিবেশী, অংশীদার, বন্ধু এবং ভাই। কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর পর, চীন মধ্য এশিয়ার এই পাঁচটি দেশের সাথে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক, বন্ধুত্ব এবং জয়-জয় সহযোগিতার একটি নতুন পথে যাত্রা করেছে, যা নতুন ধরণের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার মডেল হয়ে উঠেছে।
“চীনারা বলেন যে, ত্রিশ বছর বয়স জীবনে স্থির হওয়ার সময়। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে চীনের ৩০ বছরের বিনিময় এবং সহযোগিতা আন্তরিকতা, পারস্পরিক বিশ্বাস, সমতা এবং পারস্পরিক সুবিধার উপর ভিত্তি করে তৈরি।”

২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন এবং পাঁচটি মধ্য এশিয়ার দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ভিডিও শীর্ষ সম্মেলনে পাঁচটি মধ্য এশিয়ার দেশের সাথে চীনের সম্পর্কের উচ্চ মূল্যায়ন করতে “আন্তরিকতা, পারস্পরিক বিশ্বাস, সমতা এবং পারস্পরিক সুবিধা” এসব শব্দ ব্যবহার করেছিলেন।

“আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন যাই হোক না কেন, ভবিষ্যতে চীন যেভাবেই বিকশিত হোক না কেন, চীন সর্বদা মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য ভালো প্রতিবেশী, অংশীদার, বন্ধু এবং ভাই। চীন মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে চীন-মধ্য এশিয়ার অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গড়ে তুলতে হাতে হাত রেখে কাজ করতে ইচ্ছুক।”

২০২৩ সালের মে মাসে, প্রেসিডেন্ট সি, সি’আনে প্রথম চীন-মধ্য এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন। সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা সর্বসম্মতিক্রমে ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে এবং চীন-মধ্য এশিয়ার আরো ঘনিষ্ঠ অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গড়ে তোলার জন্য একসাথে কাজ করার জন্য সম্মত হন। এই শীর্ষ সম্মেলনেই প্রেসিডেন্ট সি চীন-মধ্য এশিয়া রাষ্ট্রপ্রধানদের বৈঠক ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করেছিলেন, যা উভয়পক্ষের মধ্যে বিনিময়ের ইতিহাসে একটি বড় মাইলফলক ঘটনার সূচনা করে।

প্রেসিডেন্ট সি এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের কৌশলগত নির্দেশনায়, চীন-মধ্য এশিয়া গভীর সহযোগিতা দ্রুত গতি, দুর্দান্ত সম্ভাবনা এবং বিস্তৃত সম্ভাবনার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যগুলো দেখিয়েছে। ২০২৪ সালে, মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে চীনের বাণিজ্যের পরিমাণ ৯৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সর্বোচ্চে রেকর্ডে পৌঁছেছে। এখন পর্যন্ত, চীন মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের বৃহত্তম বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদার হয়ে উঠেছে, মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে চীন। চীন এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগের নতুন ধরণ ত্বরান্বিত হয়েছে এবং বাণিজ্য সুবিধার স্তর উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে।

বর্তমানে, বিশ্ব, সময় এবং ইতিহাসে অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটছে। একতরফাবাদ এবং বাণিজ্য সুরক্ষাবাদ দ্রুত গতিতে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠছে। ‘বিশ্বায়ন-বিরোধী’ প্রবণতা মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। বিশ্বের আরও বেশি করে একটি স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ, সম্প্রীতিময় এবং সংযুক্ত মধ্য এশিয়ার প্রয়োজন।

২০২৩ সালে সি’আনে, প্রথম চীন-মধ্য এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের সফল সমাপ্তির পর প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং পাঁচটি মধ্য এশিয়ার দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা যৌথভাবে ঘনিষ্ঠ ঐক্যের প্রতীক হিসেবে ছয়টি ডালিম গাছ রোপণ করেছিলেন। দুই বছর পর, গাছগুলো বড় এবং সবুজ হয়েছে, এবং এখন আবার ডালিমের ফুল ফোটার মৌসুম।

সূত্র : লিলি-হাশিম-তুহিনা, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

চীন ও মধ্য এশিয়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক মডেল হয়ে উঠেছে

আপডেট সময় ০৩:১৯:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ত তোকায়েভের আমন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ১৬ থেকে ১৮ জুন কাজাখস্তানের আস্তানায় দ্বিতীয় চীন-মধ্য এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। দুই বছর পর, চীন এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর নেতারা আবার মিলিত হবেন, তারা চীন-মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গভীরতর করা এবং হাতে হাত রেখে আঞ্চলিক অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গড়ে তোলার জন্য আরো দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের পরিকল্পনা ও ভালো সম্ভাবনা তৈরি করবেন।

কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তান হল চীনের ভালো প্রতিবেশী, অংশীদার, বন্ধু এবং ভাই। কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর পর, চীন মধ্য এশিয়ার এই পাঁচটি দেশের সাথে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক, বন্ধুত্ব এবং জয়-জয় সহযোগিতার একটি নতুন পথে যাত্রা করেছে, যা নতুন ধরণের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার মডেল হয়ে উঠেছে।
“চীনারা বলেন যে, ত্রিশ বছর বয়স জীবনে স্থির হওয়ার সময়। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে চীনের ৩০ বছরের বিনিময় এবং সহযোগিতা আন্তরিকতা, পারস্পরিক বিশ্বাস, সমতা এবং পারস্পরিক সুবিধার উপর ভিত্তি করে তৈরি।”

২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন এবং পাঁচটি মধ্য এশিয়ার দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ভিডিও শীর্ষ সম্মেলনে পাঁচটি মধ্য এশিয়ার দেশের সাথে চীনের সম্পর্কের উচ্চ মূল্যায়ন করতে “আন্তরিকতা, পারস্পরিক বিশ্বাস, সমতা এবং পারস্পরিক সুবিধা” এসব শব্দ ব্যবহার করেছিলেন।

“আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন যাই হোক না কেন, ভবিষ্যতে চীন যেভাবেই বিকশিত হোক না কেন, চীন সর্বদা মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য ভালো প্রতিবেশী, অংশীদার, বন্ধু এবং ভাই। চীন মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে চীন-মধ্য এশিয়ার অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গড়ে তুলতে হাতে হাত রেখে কাজ করতে ইচ্ছুক।”

২০২৩ সালের মে মাসে, প্রেসিডেন্ট সি, সি’আনে প্রথম চীন-মধ্য এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন। সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা সর্বসম্মতিক্রমে ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে এবং চীন-মধ্য এশিয়ার আরো ঘনিষ্ঠ অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গড়ে তোলার জন্য একসাথে কাজ করার জন্য সম্মত হন। এই শীর্ষ সম্মেলনেই প্রেসিডেন্ট সি চীন-মধ্য এশিয়া রাষ্ট্রপ্রধানদের বৈঠক ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করেছিলেন, যা উভয়পক্ষের মধ্যে বিনিময়ের ইতিহাসে একটি বড় মাইলফলক ঘটনার সূচনা করে।

প্রেসিডেন্ট সি এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের কৌশলগত নির্দেশনায়, চীন-মধ্য এশিয়া গভীর সহযোগিতা দ্রুত গতি, দুর্দান্ত সম্ভাবনা এবং বিস্তৃত সম্ভাবনার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যগুলো দেখিয়েছে। ২০২৪ সালে, মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে চীনের বাণিজ্যের পরিমাণ ৯৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সর্বোচ্চে রেকর্ডে পৌঁছেছে। এখন পর্যন্ত, চীন মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের বৃহত্তম বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদার হয়ে উঠেছে, মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে চীন। চীন এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগের নতুন ধরণ ত্বরান্বিত হয়েছে এবং বাণিজ্য সুবিধার স্তর উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে।

বর্তমানে, বিশ্ব, সময় এবং ইতিহাসে অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটছে। একতরফাবাদ এবং বাণিজ্য সুরক্ষাবাদ দ্রুত গতিতে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠছে। ‘বিশ্বায়ন-বিরোধী’ প্রবণতা মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। বিশ্বের আরও বেশি করে একটি স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ, সম্প্রীতিময় এবং সংযুক্ত মধ্য এশিয়ার প্রয়োজন।

২০২৩ সালে সি’আনে, প্রথম চীন-মধ্য এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের সফল সমাপ্তির পর প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং পাঁচটি মধ্য এশিয়ার দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা যৌথভাবে ঘনিষ্ঠ ঐক্যের প্রতীক হিসেবে ছয়টি ডালিম গাছ রোপণ করেছিলেন। দুই বছর পর, গাছগুলো বড় এবং সবুজ হয়েছে, এবং এখন আবার ডালিমের ফুল ফোটার মৌসুম।

সূত্র : লিলি-হাশিম-তুহিনা, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।