ঢাকা ০৯:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পঞ্চগড়ে নবাগত জেলা প্রশাসক এর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় Logo লাকসামে ট্রাক মোটরসাইকেল সংঘর্ষে যুবকের মৃত্যু Logo গাইবান্ধার নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিলেন মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা Logo পবা-মোহনপুর আসনে জামায়াত প্রার্থীর মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা Logo চট্টগ্রামের বহিঃনোঙ্গরে আর্টিসানাল ট্রলিং বোট ও জালসহ ১৮ জেলে আটক Logo সরাইলে জামি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, আটক ১৫, আহত ২৫ Logo ইনসাফভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়তে চাই -আলহাজ্ব সেলিম মাহমুদ Logo নালিতাবাড়ীতে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo ‎বরুড়ায় ডিপ্লোমা মেডিকেল এসোসিয়েশনের জেলা সাধারণ সম্পাদককে সংবর্ধনা Logo খিলগাঁও থেকে নিখোঁজ তিনজন শিশু ফিরলো মায়ের কোলে

মুরাদনগরে পুলিশ হেফাজতে যুবকের মৃত্যু

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ হেফাজতে শেখ জুয়েল নামের এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৯জুন) রাতে বাঙ্গরা বাজার থানায় এ ঘটনা ঘটে। শেখ জুয়েল বাঙ্গরা গ্রামের মৃত শেখ গোলাম সারোয়ারের ছেলে। সে এলাকায় ওয়াই-ফাই ব্যবসা করতো বলে দাবি পরিবারের।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঙ্গরা বাজার ব্রিক ফিল্ড এর পূর্ব পাশে জনৈক হেলালের বাড়ি থেকে ৭০ পিস ইয়াবাসহ শেখ জুয়েল ও তার ৪ সহযোগীকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, বাঙ্গরা গ্রামের মৃত কানু মিয়ার ছেলে হেলাল (৪২) ও তার স্ত্রী শারমিন ওরফে সখিনা (৩৫), একই গ্রামের মৃত শেখ গোলাম সারোয়ার খোকনের ছেলে শেখ জুয়েল (৪৫), আজগর আলীর ছেলে খোকন (৪৫) এবং দৌলবাড়ি গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে হান্নান (২১)। রাতে থানা হাজতে থাকা অবস্থায় জুয়েল অসুস্থ হয়ে পড়লে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তার স্বামী শেখ জুয়েল ওয়াইফাইয়ের বকেয়া বিল কালেকশন করতে যায়। দুপুরের পরপরই খবর আসে, তার স্বামীকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। পরে থানায় গিয়ে স্বামীর সাথে কথা বলার অনুরোধ জানালে পুলিশ তার সাথে দেখা করায় ও কথা বলে। জুয়েল তার স্ত্রীকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করার কথা বলে। পরে খবর আসে জুয়েলকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়েছে। সেখানে গিয়ে স্ত্রী শিল্পী বেগম জানতে পারেন তার স্বামী আর বেঁচে নেই।

মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম মানিক জানান, রাত ৮টা ৫০ মিনিটে ভিকটিমকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমরা পরীক্ষা নিরিক্ষা করে তাকে মৃত দেখতে পাই।

এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, মাদক কারবারিসহ পাঁচজনকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ৭০ পিস ইয়াবাসহ স্থানীয় বাঙ্গরা গ্রামের হেলালের বাড়ির পাশ থেকে আটক করে থানা পুলিশ। পরে সন্ধ্যায় তার (জুয়েলের) বুক ব্যথা করছে জানালে পুলিশ তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এদিকে জুয়েলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে জুয়েল স্থানীয় বিএনপির সদস্য দাবি করে বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, শেখ জুয়েলের আত্মীয়-স্বজনের সাথে কথা বলে যে বিষয়টি জানতে পেরেছি, জুয়েল দীর্ঘদিন গাজাঁ সেবন করত এবং বর্তমানে সে ইয়াবা সেবন করে। জুয়েলের পাড়া-প্রতিবেশী ও বলছে সে নিয়মিত মাদক সেবন করে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইয়াবা সেবন করা অবস্থায় জুয়েল ও তার আরও ৪ সহযোগীকে আটক করে তাদের কাছ থেকে ৭০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারপূর্বক থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে রাতে থানায় সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, আটক জুয়েলকে পুলিশ নির্যাতন করেনি। অন্য কোন কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। শুক্রবার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পঞ্চগড়ে নবাগত জেলা প্রশাসক এর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়

SBN

SBN

মুরাদনগরে পুলিশ হেফাজতে যুবকের মৃত্যু

আপডেট সময় ০৫:৪৫:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ হেফাজতে শেখ জুয়েল নামের এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৯জুন) রাতে বাঙ্গরা বাজার থানায় এ ঘটনা ঘটে। শেখ জুয়েল বাঙ্গরা গ্রামের মৃত শেখ গোলাম সারোয়ারের ছেলে। সে এলাকায় ওয়াই-ফাই ব্যবসা করতো বলে দাবি পরিবারের।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঙ্গরা বাজার ব্রিক ফিল্ড এর পূর্ব পাশে জনৈক হেলালের বাড়ি থেকে ৭০ পিস ইয়াবাসহ শেখ জুয়েল ও তার ৪ সহযোগীকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, বাঙ্গরা গ্রামের মৃত কানু মিয়ার ছেলে হেলাল (৪২) ও তার স্ত্রী শারমিন ওরফে সখিনা (৩৫), একই গ্রামের মৃত শেখ গোলাম সারোয়ার খোকনের ছেলে শেখ জুয়েল (৪৫), আজগর আলীর ছেলে খোকন (৪৫) এবং দৌলবাড়ি গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে হান্নান (২১)। রাতে থানা হাজতে থাকা অবস্থায় জুয়েল অসুস্থ হয়ে পড়লে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তার স্বামী শেখ জুয়েল ওয়াইফাইয়ের বকেয়া বিল কালেকশন করতে যায়। দুপুরের পরপরই খবর আসে, তার স্বামীকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। পরে থানায় গিয়ে স্বামীর সাথে কথা বলার অনুরোধ জানালে পুলিশ তার সাথে দেখা করায় ও কথা বলে। জুয়েল তার স্ত্রীকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করার কথা বলে। পরে খবর আসে জুয়েলকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়েছে। সেখানে গিয়ে স্ত্রী শিল্পী বেগম জানতে পারেন তার স্বামী আর বেঁচে নেই।

মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম মানিক জানান, রাত ৮টা ৫০ মিনিটে ভিকটিমকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমরা পরীক্ষা নিরিক্ষা করে তাকে মৃত দেখতে পাই।

এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, মাদক কারবারিসহ পাঁচজনকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ৭০ পিস ইয়াবাসহ স্থানীয় বাঙ্গরা গ্রামের হেলালের বাড়ির পাশ থেকে আটক করে থানা পুলিশ। পরে সন্ধ্যায় তার (জুয়েলের) বুক ব্যথা করছে জানালে পুলিশ তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এদিকে জুয়েলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে জুয়েল স্থানীয় বিএনপির সদস্য দাবি করে বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, শেখ জুয়েলের আত্মীয়-স্বজনের সাথে কথা বলে যে বিষয়টি জানতে পেরেছি, জুয়েল দীর্ঘদিন গাজাঁ সেবন করত এবং বর্তমানে সে ইয়াবা সেবন করে। জুয়েলের পাড়া-প্রতিবেশী ও বলছে সে নিয়মিত মাদক সেবন করে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইয়াবা সেবন করা অবস্থায় জুয়েল ও তার আরও ৪ সহযোগীকে আটক করে তাদের কাছ থেকে ৭০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারপূর্বক থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে রাতে থানায় সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, আটক জুয়েলকে পুলিশ নির্যাতন করেনি। অন্য কোন কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। শুক্রবার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।