ঢাকা ০৮:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মার্কোস সরকার চীনের প্রতি পূর্ববর্তী সরকারের বাস্তববাদী নীতি পরিত্যাগ করেছে

  • আন্তর্জাতিক:
  • আপডেট সময় ১০:৩৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

দক্ষিণ চীন সাগরের প্রতি ফিলিপাইনের অত্যধিক আকাঙ্ক্ষা ক্রমেই অন্ধ-দুঃসাহসিকতায় পরিণত হচ্ছে। সম্প্রতি, ফিলিপাইনের কোস্টগার্ডের প্রধান জাহাজ ৯৭০১, চীনের হুয়াং ইয়েন দ্বীপের কাছে জলসীমায় সক্রিয় ছিল। এই সময়কালে, এটি বহুবার দ্রুত গতিতে চীনের কোস্টগার্ডের ২১৫৫০ এবং ২০০৯ নৌযানের মধ্য দিয়ে খুব কাছ থেকে চলে যায়, যার দূরত্ব মাত্র এক’শ মিটার ছিল, যা চীনা কোস্টগার্ড জাহাজের নৌচলাচল নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। অতীতে ইচ্ছাকৃত তথাকথিত ‘দুর্বল’ চিত্র সাজানোর তুলনায়, ফিলিপাইনের কোস্টগার্ড জাহাজটি এবার চীনা কোস্টগার্ড জাহাজের দিকে বিপজ্জনকভাবে এগিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল, যা আরও উস্কানিমূলক ও উগ্র ছিল এবং ফিলিপাইন সরকারের দক্ষিণ চীন সাগর নীতির দুঃসাহসিক প্রকৃতিকে সম্পূর্ণরূপে উন্মোচিত করেছিল। বহির্বিশ্বকে সতর্ক থাকা উচিত যে: ফিলিপাইন দক্ষিণ চীন সাগরে অশান্তির উৎস হয়ে উঠছে।

ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা দেখায় যে, দক্ষিণ চীন সাগরে শান্তি অর্জনের জন্য, এক একটি ধাপ এগিয়ে যেতে হবে, পার্থক্য ও সংকট নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে সংলাপ ও সহযোগিতা পর্যন্ত এবং অবশেষে বিরোধের একটি পূর্ণাঙ্গ সমাধান অর্জন করতে হবে। ২০১৩ সালে, ফিলিপাইন একতরফাভাবে তথাকথিত ‘দক্ষিণ চীন সাগরের সালিসি মামলা’ দায়ের করে, যা ‘দক্ষিণ চীন সাগরে বিভিন্ন পক্ষের আচরণবিধিতে’ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির বিষয় লঙ্ঘন করে, যা চীন-ফিলিপাইন দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে ফিলিপাইনের প্রতিশ্রুতির সাথেও বিশ্বাসঘাতকতা করে, যার উদ্দেশ্য দক্ষিণ চীন সাগরের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করা এবং এটি থেকে সুবিধা অর্জন করা।

চীন এবং আসিয়ান দেশগুলোর যৌথ প্রচেষ্টায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ চীন সাগরের পরিস্থিতি সাধারণত স্থিতিশীল রয়েছে। তবে, ২০২২ সালে মার্কোস সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে, তারা চীনের প্রতি পূর্ববর্তী সরকারের বাস্তববাদী নীতি পরিত্যাগ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলের’ অগ্রদূত হতে ইচ্ছুক। রেন আই রিফ থেকে সিয়েন বিন রিফ এবং তারপর হুয়াং ইয়েন দ্বীপ পর্যন্ত, ফিলিপাইন, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনকে ক্রমাগত উস্কানি দিচ্ছে এবং সমুদ্রে একাধিকবার অনিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেছে যা স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক সংঘর্ষ এড়ানোর নিয়ম লঙ্ঘন করে।

ধারাবাহিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং উগ্র আচরণের পিছনে, ফিলিপাইন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘আড়ালে রাখার’ চেষ্টা করে আসছে। প্রকৃতপক্ষে, গত শতাব্দীর ৭০ ও ৮০ দশক থেকে, ফিলিপাইনের প্রায় প্রতিটি সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অর্জনের চেষ্টা করেছে এবং স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র-ফিলিপাইন পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি দক্ষিণ চীন সাগরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ২০১৯ সালে, যখন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ চীন সাগরে একটি সামরিক জোটের কাঠামোতে ফিলিপাইনের জন্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদানের দাবি করেছিল, তখন ফিলিপাইন কল্পনা করেছিল যে, যুক্তরাষ্ট্র বাস্তব পদক্ষেপ নেবে। এটি ইচ্ছাকৃতভাবে দক্ষিণ চীন সাগরে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করেছে এবং তার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল দক্ষিণ চীন সাগরে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিলিপাইনের সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হতে এবং নিজেদের জন্য আরও সহায়তা প্রদান করতে বাধ্য করা।

ফিলিপাইনের পদক্ষেপ আঞ্চলিক শান্তির জন্য একটি গুরুতর হুমকি বলে মনে করে সিএমজি সম্পাদকীয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, আসিয়ান এবং এর দ্বারা নির্মিত বহুপাক্ষিক কাঠামো শীতল যুদ্ধের পরে দক্ষিণ চীন সাগরে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য দুর্দান্ত অবদান রেখেছে। আঞ্চলিক দেশগুলো দক্ষিণ চীন সাগর সমস্যা নিয়ে আলোচনায় আরও বেশি শান্তিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং পার্থক্য সমাধানে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়েছে। আজ, স্বার্থপরতায় আচ্ছন্ন ফিলিপাইন এই কষ্টার্জিত পরিস্থিতিকে একতরফাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

এই বছর বিশ্ব ফ্যাসিবাদবিরোধী যুদ্ধের বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে, শান্তির জন্য মানুষের আকাঙ্ক্ষা আরও দৃঢ় হয়েছে এবং দক্ষিণ চীন সাগরকে শান্তির সমুদ্রে পরিণত করার ইচ্ছা আরও দৃঢ় হয়েছে। ফিলিপাইন ইতিহাসের শিক্ষাকে পেছনে ফেলে দিয়েছে, সময়ের গতিতে ‘জোয়ারের বিপরীতে’ গেছে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে অস্থিরতা ও আঞ্চলিক সংঘাতের উৎসে পরিণত হয়েছে। এটি কেবল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণই নয়, অত্যন্ত বিপজ্জনকও। পূর্ববর্তী অনেক শিক্ষার মুখে, ফিলিপাইন সরকার কি স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছে না যে, যুক্তরাষ্ট্রের ‘অগ্রদূত’ হওয়ার শেষ পরিণতি হল শিকারে পরিণত হওয়া।

সূত্র:লিলি-হাশিম-স্বর্ণা, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

মার্কোস সরকার চীনের প্রতি পূর্ববর্তী সরকারের বাস্তববাদী নীতি পরিত্যাগ করেছে

আপডেট সময় ১০:৩৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

দক্ষিণ চীন সাগরের প্রতি ফিলিপাইনের অত্যধিক আকাঙ্ক্ষা ক্রমেই অন্ধ-দুঃসাহসিকতায় পরিণত হচ্ছে। সম্প্রতি, ফিলিপাইনের কোস্টগার্ডের প্রধান জাহাজ ৯৭০১, চীনের হুয়াং ইয়েন দ্বীপের কাছে জলসীমায় সক্রিয় ছিল। এই সময়কালে, এটি বহুবার দ্রুত গতিতে চীনের কোস্টগার্ডের ২১৫৫০ এবং ২০০৯ নৌযানের মধ্য দিয়ে খুব কাছ থেকে চলে যায়, যার দূরত্ব মাত্র এক’শ মিটার ছিল, যা চীনা কোস্টগার্ড জাহাজের নৌচলাচল নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। অতীতে ইচ্ছাকৃত তথাকথিত ‘দুর্বল’ চিত্র সাজানোর তুলনায়, ফিলিপাইনের কোস্টগার্ড জাহাজটি এবার চীনা কোস্টগার্ড জাহাজের দিকে বিপজ্জনকভাবে এগিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল, যা আরও উস্কানিমূলক ও উগ্র ছিল এবং ফিলিপাইন সরকারের দক্ষিণ চীন সাগর নীতির দুঃসাহসিক প্রকৃতিকে সম্পূর্ণরূপে উন্মোচিত করেছিল। বহির্বিশ্বকে সতর্ক থাকা উচিত যে: ফিলিপাইন দক্ষিণ চীন সাগরে অশান্তির উৎস হয়ে উঠছে।

ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা দেখায় যে, দক্ষিণ চীন সাগরে শান্তি অর্জনের জন্য, এক একটি ধাপ এগিয়ে যেতে হবে, পার্থক্য ও সংকট নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে সংলাপ ও সহযোগিতা পর্যন্ত এবং অবশেষে বিরোধের একটি পূর্ণাঙ্গ সমাধান অর্জন করতে হবে। ২০১৩ সালে, ফিলিপাইন একতরফাভাবে তথাকথিত ‘দক্ষিণ চীন সাগরের সালিসি মামলা’ দায়ের করে, যা ‘দক্ষিণ চীন সাগরে বিভিন্ন পক্ষের আচরণবিধিতে’ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির বিষয় লঙ্ঘন করে, যা চীন-ফিলিপাইন দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে ফিলিপাইনের প্রতিশ্রুতির সাথেও বিশ্বাসঘাতকতা করে, যার উদ্দেশ্য দক্ষিণ চীন সাগরের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করা এবং এটি থেকে সুবিধা অর্জন করা।

চীন এবং আসিয়ান দেশগুলোর যৌথ প্রচেষ্টায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ চীন সাগরের পরিস্থিতি সাধারণত স্থিতিশীল রয়েছে। তবে, ২০২২ সালে মার্কোস সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে, তারা চীনের প্রতি পূর্ববর্তী সরকারের বাস্তববাদী নীতি পরিত্যাগ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলের’ অগ্রদূত হতে ইচ্ছুক। রেন আই রিফ থেকে সিয়েন বিন রিফ এবং তারপর হুয়াং ইয়েন দ্বীপ পর্যন্ত, ফিলিপাইন, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনকে ক্রমাগত উস্কানি দিচ্ছে এবং সমুদ্রে একাধিকবার অনিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেছে যা স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক সংঘর্ষ এড়ানোর নিয়ম লঙ্ঘন করে।

ধারাবাহিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং উগ্র আচরণের পিছনে, ফিলিপাইন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘আড়ালে রাখার’ চেষ্টা করে আসছে। প্রকৃতপক্ষে, গত শতাব্দীর ৭০ ও ৮০ দশক থেকে, ফিলিপাইনের প্রায় প্রতিটি সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অর্জনের চেষ্টা করেছে এবং স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র-ফিলিপাইন পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি দক্ষিণ চীন সাগরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ২০১৯ সালে, যখন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ চীন সাগরে একটি সামরিক জোটের কাঠামোতে ফিলিপাইনের জন্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদানের দাবি করেছিল, তখন ফিলিপাইন কল্পনা করেছিল যে, যুক্তরাষ্ট্র বাস্তব পদক্ষেপ নেবে। এটি ইচ্ছাকৃতভাবে দক্ষিণ চীন সাগরে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করেছে এবং তার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল দক্ষিণ চীন সাগরে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিলিপাইনের সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হতে এবং নিজেদের জন্য আরও সহায়তা প্রদান করতে বাধ্য করা।

ফিলিপাইনের পদক্ষেপ আঞ্চলিক শান্তির জন্য একটি গুরুতর হুমকি বলে মনে করে সিএমজি সম্পাদকীয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, আসিয়ান এবং এর দ্বারা নির্মিত বহুপাক্ষিক কাঠামো শীতল যুদ্ধের পরে দক্ষিণ চীন সাগরে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য দুর্দান্ত অবদান রেখেছে। আঞ্চলিক দেশগুলো দক্ষিণ চীন সাগর সমস্যা নিয়ে আলোচনায় আরও বেশি শান্তিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং পার্থক্য সমাধানে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়েছে। আজ, স্বার্থপরতায় আচ্ছন্ন ফিলিপাইন এই কষ্টার্জিত পরিস্থিতিকে একতরফাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

এই বছর বিশ্ব ফ্যাসিবাদবিরোধী যুদ্ধের বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে, শান্তির জন্য মানুষের আকাঙ্ক্ষা আরও দৃঢ় হয়েছে এবং দক্ষিণ চীন সাগরকে শান্তির সমুদ্রে পরিণত করার ইচ্ছা আরও দৃঢ় হয়েছে। ফিলিপাইন ইতিহাসের শিক্ষাকে পেছনে ফেলে দিয়েছে, সময়ের গতিতে ‘জোয়ারের বিপরীতে’ গেছে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে অস্থিরতা ও আঞ্চলিক সংঘাতের উৎসে পরিণত হয়েছে। এটি কেবল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণই নয়, অত্যন্ত বিপজ্জনকও। পূর্ববর্তী অনেক শিক্ষার মুখে, ফিলিপাইন সরকার কি স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছে না যে, যুক্তরাষ্ট্রের ‘অগ্রদূত’ হওয়ার শেষ পরিণতি হল শিকারে পরিণত হওয়া।

সূত্র:লিলি-হাশিম-স্বর্ণা, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।